Ajker Patrika

চট্টগ্রামে পুলিশ হেফাজতে দুদকের সাবেক উপপরিচালকের মৃত্যু 

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
আপডেট : ০৪ অক্টোবর ২০২৩, ১২: ২২
Thumbnail image

চট্টগ্রামে পুলিশ হেফাজতে ছৈয়দ মো. শহীদুল্লা (৬৭) নামে দুদকের সাবেক এক উপপরিচালকের মৃত্যু হয়েছে। পরিবারের অভিযোগ, ‘দুদকের সাবেক ওই কর্মকর্তা হার্টের রোগী ছিলেন। থানায় নিয়ে আসার পর উনি অসুস্থ অনুভব করলে ওনাকে ওষুধ নিতে দেয়নি পুলিশ।’

মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) রাত ১২টার দিকে চট্টগ্রাম নগরের চান্দগাঁও থানা হেফাজতে থাকাকালীন তাঁর মৃত্যু হয়েছে।

নিহত দুদক কর্মকর্তা নগরের চান্দগাঁও থানার মোজাহের উল্লাহ মহুরীর বাড়ির সৈয়দ মোহাম্মদ আবদুল্লাহর ছেলে। তিনি দুদকের সাবেক উপপরিচালক ছিলেন। ২০১৭ সালের ১২ জুলাই তিনি অবসরে যান। তাঁর সর্বশেষ কর্মস্থল ছিল দুদক চট্টগ্রাম-২ সমন্বিত কার্যালয়।

পরিবারের সদস্যরা এ ঘটনাকে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড হিসেবে বলছেন। নিহতের ছেলে ক্যাপ্টেন নাফিস শহীদ বলেন, ‘চান্দগাঁও বাসা থেকে রাত সাড়ে ১০টায় দুই পুলিশ সদস্য এসে কোনো মামলার ওয়ারেন্ট ছাড়াই বাবাকে ধরে নিয়ে যায়। ওনার ন্যূনতম সম্মানটা পুলিশ রাখেনি। খুনের মামলার আসামির মতো করে টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়া হয়।’

নাফিস শহীদ বলেন, ‘থানায় নিয়ে যাওয়ার পর থানার কলাপসিবল গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়। কোনো থানায় কলাপসিবল গেট বন্ধ রাখে তা কখনো শুনিনি। কিন্তু এখানে গেট বন্ধ রাখা ছিল। আমাদের কাউকে ভেতরে ঢুকতে দেয়নি। বাবা হার্টের রোগী হওয়ায় ওনাকে নিয়মিত ইনহেলার ও মেডিসিন নিতে হয়। ভেতরে উনি যখন অসুস্থ অনুভব করছেন। তখন আমরা বাবাকে ওষুধের ডোজ দিতে চাইলে পুলিশ নিতে দেয়নি। পরে থানার ভেতরে ওনার মৃত্যু হয়।’

নাফিস আরও বলেন, ‘পুলিশ বাবাকে ইচ্ছাকৃতভাবে মেরে ফেলেছে। এটা পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।’

অভিযোগের বিষয়ে চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খাইরুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এ ধরনের তো কিছু হয়নি। একটি সিআর মামলার ওয়ারেন্টমূলে ওনাকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে আসি। থানায় আনার পর উনি সরকারি কর্মকর্তা জানতে পেরে ওনাকে সম্মানের সঙ্গে আমার রুমে বসাই। সেখানে কথা বলার একপর্যায়ে তিনি অসুস্থ অনুভব করেন। পরে আমরা ওনার পরিবারের সদস্যদের খবর দিই। উনি বেশি অসুস্থ হলে আমরা প্রথমে অ্যাম্বুলেন্স ডেকে না পেয়ে সিএনজিতে করে পাশের একটি হাসপাতালে নিলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।’

ওনার সঙ্গে কোনো অসদাচরণ করা হয়নি বলে দাবি করেন ওসি।

ওসি বলেন, ‘নিহত ব্যক্তির ময়নাতদন্ত সম্পন্নের জন্য ম্যাজিস্ট্রেট বরাবর আবেদন করা হয়েছে। বর্তমানে মরদেহ চমেক হাসপাতালের মর্গে আছে।’

নিহতের সহকর্মী দুজনের সঙ্গে কথা হলে তাঁরা বলেন, যে কারোর পারিবারিক কিংবা জায়গাসংক্রান্ত মামলা থাকতে পারে। কিন্তু কোনো ওয়ারেন্ট ছাড়াই ওনাকে যেভাবে থানায় ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এবং সেখানে যে ধরনের আচরণ করা হয়েছে, তা কাম্য নয়। উনি একজন সম্মানী ব্যক্তি ছিলেন। এর পাশাপাশি তিনি বাইপাস সার্জারির রোগী জানার পর পুলিশের সতর্ক থাকা উচিত ছিল। এটা পুলিশ হেফাজতে হত্যার ঘটনা ঘটেছে।

জানা যায়, ঘটনার দিন সাবেক দুদক কর্মকর্তাকে চান্দগাঁওয়ের বাসা থেকে ধরে নিয়ে আসেন চান্দগাঁও থানার সহকারী উপপরিদর্শক ইউসুফ ও সোহেল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত