Ajker Patrika

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে ২৭০টি কচ্ছপের বাচ্চা অবমুক্ত

কক্সবাজার প্রতিনিধি
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে ২৭০টি কচ্ছপের বাচ্চা অবমুক্ত

কক্সবাজার সাগরে ছাড়া হয়েছে ২৭০টি সামুদ্রিক কচ্ছপের বাচ্চা। ১-৩ দিন বয়সের বাচ্চাগুলো আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের প্যাঁচার দ্বীপ এলাকায় অবমুক্ত করা হয়। এ বছর হ্যাচারিতে ফোটানো প্রথম সামুদ্রিক কচ্ছপের বাচ্চা ছাড়া হয় বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। 

কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের তত্ত্বাবধানে ইউএসএআইডির অর্থায়নে নেচার কনজারভেশন ম্যানেজমেন্টের (নেকম) ইকো লাইফ প্রকল্পের কাছিম হ্যাচারিতে বাচ্চাগুলো ফোটানো হয়। ডিমগুলো ৬০ থেকে ৬৫ দিন হ্যাচারিতে রাখার পর ডিম থেকে বাচ্চা ফুটে। অবমুক্ত বাচ্চাগুলো ছাড়ার পর অন্তত ৩০টি বাচ্চা এময় মারা পড়তে দেখা যায়। 

কচ্ছপের বাচ্চাগুলো অবমুক্ত করেন বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) ও সমুদ্র বিজ্ঞানী সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দর, কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা সারওয়ার আলম, নেকম-ইকো লাইফ প্রকল্পের উপপ্রকল্প পরিচালক ড. শফিকুর রহমান প্রমুখ। 

নেকমের কক্সবাজারের ব্যবস্থাপক আবদুল কাইয়ুম আজকের পত্রিকাকে বলেন, কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের প্যাঁচার দ্বীপ, শীলখালী দ্বীপ ও শাহপরীর দ্বীপে ৩টি কচ্ছপের হ্যাচারিতে এ বছর ৭ হাজার ৫২৮টি ডিম সংগ্রহ করা হয়েছে। সৈকতের ৫৮টি স্পটে কচ্ছপ ডিম পেড়েছে। আরও কয়েক দিন ডিম দিতে আসবে কচ্ছপ। এর মধ্যে প্যাঁচার দ্বীপে ১৮টি কচ্ছপ দুই হাজার ৩০টি ডিম দিয়েছে, শীলখালীতে ৯টি কচ্ছপ ১ হাজার ২৩৯টি ও শাহপরীর দ্বীপে ৩১টি কচ্ছপ ৪ হাজার ২৫৯টি ডিম দিয়েছে। 

ধীরে ধীরে কাছিমের ডিম পাড়ার হার বাড়ছে বলে দাবি করেছেন নেকম-ইকো লাইফ প্রকল্পের উপ প্রকল্প পরিচালক ড. শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, গত তিন বছরের তুলনায় এ বছর কচ্ছপ ডিম বেশি দিয়েছে। ২০২২ সালে ৫৪টি স্পটে কচ্ছপ ডিম দিয়েছিল ৫ হাজার ৭৬৩টি। এর আগের বছর ২০২১ সালে ডিম দেয় ৪ হাজার ৭১৩টি। ডিম থেকে বাচ্চা ফোটানোর হার ৮৬ শতাংশ। 

আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের প্যাঁচার দ্বীপ এলাকায় অবমুক্ত করা হয় কচ্ছপের বাচ্চা। ছবি: আজকের পত্রিকাকক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা সারওয়ার আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, সামুদ্রিক কচ্ছপের প্রজনন নির্বিঘ্ন করতে জনসচেতনতার বিকল্প নেই। পাশাপাশি প্রজনন স্পটগুলোতে মানুষের আনাগোনা নিয়ন্ত্রণ ও কুকুর-শিয়াল থেকে রক্ষায় সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। 

বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) ও সমুদ্র বিজ্ঞানী সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দর আজকের পত্রিকাকে বলেন, অবমুক্ত এই কচ্ছপের বাচ্চাগুলো সাগর মহাসাগরে ১৯ বছর বিচরণ করবে। দীর্ঘ এই সময় পর আবারও স্ত্রী কচ্ছপগুলো এই সৈকতে ফিরবে। তবে পুরুষ কচ্ছপগুলো আর ফিরবে না। কিন্তু কক্সবাজারের সমুদ্র উপকূলে নানা কারণে কচ্ছপের প্রজনন স্থান নষ্ট হয়েছে। ফলে এখন এই উপকূলের চেয়ে ভারতের ওডিশা উপকূল বেঁচে নিয়েছে। এ বিষয়ে কারণ অনুসন্ধানে কাজ করছে সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত