Ajker Patrika

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় টিকা নেওয়ার ৪৫ মিনিট পর গৃহবধূর মৃত্যু

বাঞ্ছারামপুর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
Thumbnail image

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে করোনার টিকা নেওয়ার পৌনে এক ঘণ্টা পরে এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (৬ নভেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মানিকপুর ইউনিয়নের বাহেরচর কমিউনিটি ক্লিনিকে এ ঘটনা ঘটে। 

হোসনা আক্তার (২৬) নামে ওই গৃহবধূ উপজেলার কল্যাণপুর গ্রামের সৌদিপ্রবাসী মাসুম মিয়ার স্ত্রী। 

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, শনিবার উপজেলার মানিকপুর ইউনিয়নের বাহেরচর গ্রামের কমিউনিটি ক্লিনিকে ৫০০-৭০০ জনকে কোভিড টিকা দেওয়ার জন্য নির্ধারিত ছিল। বেলা সাড়ে ১২টায় হোসনা টিকার প্রথম ডোজ নেন। হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার মতিউর রহমান তাঁকে টিকা দেন। টিকা নেওয়ার ১০ মিনিট পরেই অসুস্থ হয়ে পড়েন হোসনা। দ্রুত অবস্থার অবনতি দেখে আত্মীয়-স্বজনেরা তাঁকে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। 

হোসনার পরিবারের সদস্যরা আজকের পত্রিকাকে জানান, সাত বছর আগে কল্যাণপুর গ্রামের প্রবাসী মাসুম মিয়ার সঙ্গে হোসনার বিয়ে হয়। তাঁদের কোনো সন্তান নেই। 

হোসনার মা শামসুন্নাহার বেগম বলেন, আমার দুই মেয়ে টিকা নিতে গিয়েছিল। টিকা নেওয়ার পর হোসনা অসুস্থ হয়ে পড়ে। আধা ঘণ্টা পর আমার মেয়েকে হসপিটালে নিয়ে গেলে হসপিটালের চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন। 

হোসনাকে টিকা দেওয়া হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার মতিউর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, দুপুর সাড়ে ১২টার সময় সবার সঙ্গে হোসনা আক্তার টিকা নিতে আসেন। টিকা নেওয়ার কিছুক্ষণ পরে অন্য একটা বাড়িতে গিয়ে মাথায় পানি দেন। তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং পানি পান করেন। 

এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা রঞ্জন বর্মণ আজকের পত্রিকাকে বলেন, সকালে কিছু না খেয়েই হোসনা আক্তার ও তাঁর বোন দুপুরে টিকা নিতে এসেছিলেন। বহু লোক টিকা গ্রহণ করেছেন, কারো মধ্যে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। আমরা একটি ভায়াল থেকে পাঁচজনকে টিকা দিয়ে থাকি। হোসনা আক্তারের বিভিন্ন রোগের পাশাপাশি অ্যালার্জির সমস্যা ছিল। 

রঞ্জন বর্মন আরও বলেন, হোসনা টিকার নিবন্ধন করার সময় সঠিকভাবে অনলাইনে ফরম পূরণ করতে পারেননি। অনলাইনের দোকান থেকে নিবন্ধন করতে গেলে অনেকে এ বিষয়ে জানে না এবং বোঝে না। না জানার কারণে টিকা গ্রহণকারীর অনেক সময় সমস্যা দেখা দেয়। 

এদিকে এই ঘটনার পর টিকা নিতে আসা লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। অনেকে টিকা না নিয়েই চলে যান। আছাদনগরের মুদি দোকানদার খোকন মিয়া বলেন, করোন টিকা নেওয়ার পরে একটা রোগী মারা গেছে। আমি গিয়েছিলাম টিকা নিতে। টিকা নিতে যখন হসপিটালে ঢুকেছি তখন শুনি একটা লোক অসুস্থ হয়ে পড়েছে। আমি ভয়ে হসপিটাল থেকে বেরিয়ে চলে আসলাম। অধিকাংশ লোক টিকা না নিয়ে বাড়িতে চলে গেছে। অনেক লোক একত্রিত হয়ে বলাবলি করতেছে, টিকার ভিতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে। এজন্য আর কেউ টিকা নেবে না। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত