Ajker Patrika

চমেকের সব ধরনের শিক্ষা কার্যক্রম থেকে বহিষ্কৃত ছাত্রলীগের সেই ৭ কর্মী

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
আপডেট : ১৭ মার্চ ২০২৩, ১৬: ৫১
চমেকের সব ধরনের শিক্ষা কার্যক্রম থেকে বহিষ্কৃত ছাত্রলীগের সেই ৭ কর্মী

ছাত্রলীগের হামলায় মাথার খুলিতে গুরুতর জখম হয়েছিলেন মাহাদি জে আকিব। তাঁর মাথার অবস্থা এমন হয়েছিল যে ব্যান্ডেজ মোড়ানো মাথার এক পাশে লিখে দিতে হয়েছিল ‘হাড় নেই, চাপ দেবেন না!’ সেই হামলার ঘটনায় জড়িত থাকায় বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার হয়েছিলেন ছাত্রলীগের ৩১ নেতা-কর্মী। সম্প্রতি তাঁদের মধ্যে সাতজন আবারও রাতভর চার ছাত্রকে মারধরের ঘটনায় অভিযুক্ত হন। তখন তাঁরা বহিষ্কৃত হয়েছিলেন অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম থেকে, এবার বহিষ্কার হয়েছেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের (চমেক) সব ধরনের শিক্ষা কার্যক্রম থেকে।

গতকাল বৃহস্পতিবার চমেকের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ছাত্রলীগের ওই সাত কর্মীকে ক্যাম্পাস থেকে বহিষ্কার করা হয়। 

বহিষ্কৃতদের মধ্যে ৫৯তম ব্যাচের অভিজিৎ দাশকে তিন বছরের জন্য সব ধরনের শিক্ষা কার্যক্রম থেকে বহিষ্কার করা হয়। একই ব্যাচের মো. রিয়াজুল ইসলাম জয়, ৬২তম ব্যাচের সাজু দাশ ও সৌরভ দেব নাথকে দুই বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়। দেড় বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয় ৬২তম ব্যাচের মাহিন আহমেদ, জাকির হোসেন সায়েল ও মো. ইব্রাহিম খলিল সাকিবকে। তাঁরা সবাই ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে জানা গেছে।

গত ৮ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে চমেকের ছাত্রাবাসের বিভিন্ন কক্ষ থেকে শিবির সন্দেহে চার শিক্ষার্থীকে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন করেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থীরা হলেন চমেকের ৬২তম ব্যাচের ছাত্র এম এ রাইয়ান, মোবাশ্বির হোসাইন শুভ্র, জাহিদ হোসাইন ওয়াকিল ও সাকিব হোসেন।

আহতদের মধ্যে জাহিদ হোসাইন ওয়াকিল ও সাকিব হোসেনকে চমেক হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসা দেওয়া হয়। আহত এম এ রাইয়ান কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং শুভ্র নারায়ণগঞ্জে একজন অর্থোপেডিক চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা নিয়েছেন।

এর আগে এই সাতজন ২০২১ সালের ২৯ ও ৩০ অক্টোবর ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে জড়িত থাকার অভিযোগে বহিষ্কার হন। এর মধ্যে ওই ঘটনায় ৫৯তম ব্যাচের অভিজিৎ দাশকে দুই বছরের জন্য, রিয়াজুল ইসলাম জয়কে এক বছর ছয় মাসের জন্য এবং সাজু দাশ, সৌরভ দেবনাথ, মাহিন আহমেদ, জাকির হোসেন সায়েম ও মো. ইব্রাহিম খলিল সাকিবকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছিল। পরে ২০২২ সালের অক্টোবর মাসে মা-বাবার জিম্মায় তাঁদের বহিষ্কারাদেশ স্থগিত করে চমেক কর্তৃপক্ষ। ওই সময় দেড় শ টাকার স্ট্যাম্পে আর কোনো দিন মারামারি বা শৃঙ্খলাবিরোধী কাজ করবেন না বলে সই নেওয়া হয়।

চমেকের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. সাহেনা আক্তার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ২০২১ সালের সর্বশেষ মারামারি এবং এর আগের বিভিন্ন সময়ে সংঘাতের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৩১ জনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। আগের মারামারির ঘটনার দুটি তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এর মধ্যে সাতজন আবারও মারামারিতে লিপ্ত হন। চার ছাত্রকে রাতভর পিটিয়ে আহত করেন। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আজকে ওই সাতজনকে আবারও বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করা হয়।

আদেশে বহিষ্কৃত সাত শিক্ষার্থীকে কলেজ ক্যাম্পাস ও ছাত্রাবাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়। এ ছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে তাঁদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়। একই সঙ্গে সাত শিক্ষার্থীর অভিভাবককে ডেকে বিষয়টি অবহিত করতে বলা হয়। 

অধ্যাপক সাহেনা আক্তার বলেন, তাঁদের বহিষ্কারকে কেন্দ্র করে যাতে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা না ঘটে, সে জন্য ছাত্রাবাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ছাত্রাবাস সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় আনা হচ্ছে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ছয় মাস আগে ২০২১ সালে বহিষ্কার হওয়া ৩১ জনের বহিষ্কারাদেশ স্থগিত করা হয়। এখন আবারও শৃঙ্খলাবিরোধী কাজ করায় তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পুলিশ প্রশাসনকে কলেজ থেকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পদোন্নতি দিয়ে ৬৫ হাজার সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগের পরিকল্পনা: ডিজি

দিনাজপুরে হিন্দু নেতাকে অপহরণ করে হত্যা: ভারত সরকার ও বিরোধী দল কংগ্রেসের উদ্বেগ

সমালোচনার মুখে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের নিয়োগ বাতিল

আজ থেকে ৫০০ টাকায় মিলবে ১০ এমবিপিএস গতির ইন্টারনেট

যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৫ হাজার শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল, বেশির ভাগই ভারতীয়, আছে বাংলাদেশিও

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত