Ajker Patrika

পর্যটন মৌসুমে পুড়ে ছাই তিন রিসোর্ট

  • প্রাথমিকভাবে ৬ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের।
  • ফায়ার সার্ভিস না থাকায় দ্রুত আগুন নেভানো সম্ভব হয়নি বলে মনে করে মালিকপক্ষ।
  • কারণ অনুসন্ধানে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি জেলা প্রশাসনের।
কক্সবাজার প্রতিনিধি
Thumbnail image
কক্সবাজারের সেন্ট মার্টিন দ্বীপে আগুনে পুড়ে যাওয়া একটি রিসোর্ট। গত মঙ্গলবার রাতে দ্বীপের গলাচিপা সৈকতে এ ঘটনা ঘটে। পরে স্থানীয় বাসিন্দা, পর্যটক, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

পর্যটন মৌসুমে কক্সবাজারের সেন্ট মার্টিন দ্বীপে আগুনে তিনটি রিসোর্ট পুড়ে গেছে। গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত সোয়া ২টার দিকে দ্বীপের গলাচিপা সৈকতে এ অগ্নিকাণ্ড ঘটে। এতে তিনটি রিসোর্টের ৫১টি কক্ষ পুড়ে গেছে বলে জানা যায়।

একটি রিসোর্টে আগুন লাগার পরপরই লাগোয়া অন্য রিসোর্ট থেকেও প্রাণ বাঁচাতে পর্যটকেরা দৌড়ে বেরিয়ে যান। এতে তাঁদের মালপত্র পুড়ে গেলেও কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

এদিকে অগ্নিকাণ্ডের কারণ অনুসন্ধানে জেলা প্রশাসন পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।

সেন্ট মার্টিন পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক অজিত কুমার দাস জানান, সাইরী রিসোর্টের অভ্যর্থনাকক্ষের মাল্টিপ্লাগের শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত বলে জানা গেছে। সেখান থেকে পাশের বিচ ভ্যালি ও কিংশুক রিসোর্টে আগুন লাগে। এতে বিচ ভ্যালি ও কিংশুক রিসোর্ট পুরোটাই পুড়ে যায়।

রিসোর্টের মালিকপক্ষের দাবি, অন্তত ৬ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে তাঁদের ধারণা।

দুর্ঘটনার সময় স্ত্রী-সন্তানসহ রিসোর্টেই ছিলেন কিংশুক ইকো রিসোর্টের মালিক সরওয়ার আহমেদ। তিনি বলেন, ‘তিলে তিলে গড়া স্বপ্নের প্রতিষ্ঠানটি মুহূর্তেই পুড়ে শেষ হয়ে গেল।’ দ্বীপে ফায়ার সার্ভিস না থাকায় দ্রুত আগুন নেভানো সম্ভব হয়নি বলে তিনি মনে করেন।

পর্যটন ব্যবসায়ী আবদুল মালেক জানান, দ্বীপের স্থানীয় বাসিন্দা, পর্যটক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা প্রায় দুই ঘণ্টা চেষ্টা করে রাত ৪টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তিনি বলেন, বাতাসের কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। কাঠ ও বাঁশ দিয়ে তৈরি বিচ ভ্যালি রিসোর্ট মুহূর্তেই পুড়ে যায়। পরে আগুন পাশের কিংশুক ইকো রিসোর্টেও ছড়িয়ে পড়ে এবং সেটিও সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়।’

সেন্ট মার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্য‍ান মুজিবুর রহমান জানান, আগুনে বিচ ভ্যালির ১৮টি, কিংশুকের ৭টি এবং সাইরী ইকো-রিসোর্টের অভ্যর্থনাকক্ষসহ ২৬টি কক্ষ পুড়ে যায়। আগুন নিয়ন্ত্রণে দ্বীপে কোনো সরকারি ব্যবস্থা নেই জানিয়ে তিনি বলেন, দ্বীপে বিভিন্ন মানের ২৫০টির মতো হোটেল ও রিসোর্ট তৈরি হয়েছে। কিন্তু এসব আবাসিক প্রতিষ্ঠানের অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা কী, তা নিয়ে এখন প্রশ্ন উঠেছে। এই অগ্নিকাণ্ডের কারণে পর্যটনশিল্পে প্রভাব পড়ে বলে মনে করেন তিনি।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, অগ্নিকাণ্ড কীভাবে এবং কেন হলো তা দেখতে উপজেলা প্রশাসনের একটি টিম সেখানে পৌঁছেছে। ক্ষতিগ্রস্তদের কীভাবে সহায়তা করা যায়, সে বিষয়েও কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলছে।

তদন্তে কমিটি

এদিকে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অগ্নিকাণ্ডের কারণ অনুসন্ধানে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহ্উদ্দিন বলেন, ঘটনা তদন্তে টেকনাফের ইউএনওকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী দুই কর্মদিবসের মধ্যে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত, ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ ও সুপারিশমালা প্রণয়ন করে কমিটিকে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নিয়ে ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান জেলা প্রশাসক।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত