Ajker Patrika

নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণে পা উড়ে গেছে ২ জনের, দুই দিনে আহত ৫

নাইক্ষ্যংছড়ি (বান্দরবান) প্রতিনিধি  
আপডেট : ০৫ মে ২০২৪, ২২: ৩০
নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণে পা উড়ে গেছে ২ জনের, দুই দিনে আহত ৫

বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের শূন্যরেখায় নতুন করে বসানো স্থলমাইন বিস্ফোরণে গত দুই দিনে পাঁচ বাংলাদেশি আহত হয়েছেন। আজ রোববার সকালে ও গতকাল শনিবার দুপুরে এসব ঘটনা ঘটে।

আহতরা কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এ ছাড়া বিস্ফোরণে দুটি মহিষ মারা গেছে। 

স্থলমাইন বিস্ফোরণে আহত ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, আজ সকাল সাড়ে ৭টা দিকে আবদুল্লাহ, রহিম, মফিজসহ ছয়-সাতজন মহিষ নিতে ৪৭ নম্বর সীমান্ত পিলার এস-১ এবং মিয়ানমারের বেনডুলা বাজারের কাছে যাচ্ছিলেন। দুই শ্রমিক শূন্যরেখা পার হওয়ার পর স্থলমাইনের তারে একজনের পা লাগে। সঙ্গে সঙ্গে সেটি বিস্ফোরিত হয়। এতে আবদুল্লাহর দুই পা উড়ে যায়। এ সময় পেছনে থাকা দুজনের বুকে ও পিটে মাইনের স্প্লিন্টার বিদ্ধ হয়। 

এর আগে, গতকাল শনিবার দুপুরে চার-পাঁচজন বেনডুলা বাজার থেকে সাতটি মহিষ নিয়ে ফেরার পথে চারটি স্থলমাইন বিস্ফোরণ ঘটে। এতে দুটি মহিষ ঘটনাস্থলে মারা যায়। এ সময় নুরুল আবছার ও বাবু আহত হন। আবছারের এক পা উড়ে গেছে। আর বাবুর মুখ ঝলসে গেছে। 

আহত ব্যক্তিরা কক্সবাজারের রামু উপজেলার কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ মৌলভীকাটা গ্রামের বাসিন্দা। গতকাল কয়েকটি মহিষ শ্রমিকেরা পার করতে পারলেও তিনটি মহিষ ওপারে থেকে যায়। আজ সেই মহিষগুলোই আনতে যান তাঁরা। 

আহত আবদুল্লাহর বাড়ি নাইক্ষ্যংছড়ির কম্বনিয়া গ্রামের পার্শ্ববর্তী রামুর কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ মৌলভীকাটা গ্রামে। তাঁর বাবার নাম জাফর আহমদ। বাকি দুজন একই গ্রামের আলী আহমদের দুই ছেলে মোহাম্মদ মুফিজ (৩৫) ও মোহাম্মদ আবদুর রহিম (৩১)। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আহত ব্যক্তিরা মূলত গবাদিপশু চোরাকারবারের সঙ্গে জড়িত। তাঁরা কারবারিদের জন্য চুক্তির ভিত্তিতে গবাদিপশু সীমান্ত পার করে দেন। 

মৌলভীকাটা এলাকার ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মোহাম্মদ ইউনুছ বলেন, আহত ব্যক্তিরা গরু টানা শ্রমিক বলে তিনি শুনেছেন। তাঁদের মধ্যে আবদুল্লাহ ও বাবু চট্টগ্রামের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁদের অবস্থা গুরুতর। বাকিরা কক্সবাজারে চিকিৎসাধীন। 

উল্লেখ্য, মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রায় ২৭১ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ১৫০ কিলোমিটার পাহাড়, জঙ্গল, টিলাবেষ্টিত দুর্গম সীমান্ত এলাকা। সীমান্তের উভয় দিকে শূন্যরেখা থেকে ৩০০ গজ পর্যন্ত এলাকা ‘নো ম্যানস ল্যান্ড’। দুর্গম ওই এলাকায় মিয়ানমারের বিভিন্ন বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের তৎপরতা আছে। পাশাপাশি চোরাকারবারিরা অস্ত্র ও মাদক পাচারের রুট হিসেবে ওই সীমান্ত ব্যবহার করছে। 

একাধিক সূত্র জানায়, মিয়ানমার সীমান্তের ওপারে ৪৯টি ইয়াবা তৈরির কারখানা রয়েছে। এসব কারখানার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য মিয়ানমারকে অনুরোধ জানিয়ে আসছে বাংলাদেশ। কিন্তু ফল হয়নি। এখন সীমান্তে বাংলাদেশ অংশের বিপরীত অংশটি নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছে রাখাইনের বিদ্রোহী আরকান আর্মি। তারা সম্প্রতি নতুন করে কয়েকটি বিশেষ পয়েন্টে স্থলমাইন বসিয়েছে। এ কারণেই এমন দুর্ঘটনা ঘটছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত