Ajker Patrika

৬ বছর পর ছাত্রলীগ নেতা দিয়াজ হত্যা মামলার প্রতিবেদন

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
আপডেট : ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ২১: ৫৫
৬ বছর পর ছাত্রলীগ নেতা দিয়াজ হত্যা মামলার প্রতিবেদন

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ছাত্রলীগ নেতা দিয়াজ ইরফান চৌধুরী ‘হত্যা’ ঘটনার ছয় বছর পর মামলার প্রতিবেদন দিল সিআইডি। প্রতিবেদনে মামলার ১০ আসামিকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে বলে জানা গেছে। আজ বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম আদালতের জেলা পুলিশের প্রসিকিউশন শাখায় এ প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডি চট্টগ্রামের সহকারী পুলিশ সুপার আবদুস সালাম মিয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘তদন্তে যা পাওয়া গেছে তা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। আজকে (বৃহস্পতিবার) আদালতে প্রতিবেদনটি জমা দেওয়া হয়েছে।’

সূত্রে জানা গেছে, ‘তথ্যগত’ ভুল দেখিয়ে উল্লিখিত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। একই সঙ্গে প্রতিবেদনে আসামিদের মামলার দায় থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে দিয়াজের বোন আইনজীবী জুবাঈদা ছরওয়ার চৌধুরী নিপা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সিআইডি চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করার কথা শুনে অসুস্থ শরীর নিয়ে কোর্টে এসেছি। কিন্তু প্রতিবেদনে কী আছে, বিস্তারিত জানার সুযোগ হয়নি।’

নিপা ক্ষোভ প্রকাশ করে আরও বলেন, ‘বাদীপক্ষ জানার আগেই আসামিরা কীভাবে ফেসবুকে এই বিষয়ে খুশি হয়ে স্ট্যাটাস দেয়, তা আমার বুঝে আসে না। আমরা প্রতিবেদনের বিস্তারিত দেখে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেব।’

চট্টগ্রাম আদালতে জেলা পুলিশের প্রসিকিউশন শাখার কোর্ট পরিদর্শক জাকের হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সিআইডির তদন্ত প্রতিবেদন আমার হাতে এসেছে। এখনো খুলে দেখা হয়নি। তাই বিস্তারিত বলতে পারছি না।’ 

২০১৬ সালের ২০ নভেম্বর রাতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ ক্যাম্পাসের নিজ বাসা থেকে উদ্ধার হয় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসম্পাদক দিয়াজের ঝুলন্ত লাশ। ঘটনার তিন দিন পর ২৩ নভেম্বর চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের চিকিৎসকদের দেওয়া ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে ঘটনাটিকে ‘আত্মহত্যা’ উল্লেখ করা হয়। তার ভিত্তিতে হাটহাজারী থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা করে পুলিশ। 

তবে, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন নির্মাণকাজের দরপত্র নিয়ে কোন্দলের সূত্র ধরে এ ঘটনাকে ‘পরিকল্পিত হত্যা’ বলে শুরু থেকেই দিয়াজের পরিবার ও তাঁর অনুসারী ছাত্রলীগের কর্মীরা দাবি করে আসছিলেন। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে ওই বছরের ২৪ নভেম্বর দিয়াজের মা জাহেদা আমিন চৌধুরী বাদী হয়ে আদালতে হত্যা মামলা করেন। 

মামলায় ছাত্রলীগের ওই সময়ের সভাপতি আলমগীর টিপু, সহকারী প্রক্টর আনোয়ার হোসেন, ছাত্রলীগ নেতা জামশেদুল আলম চৌধুরী, তাঁদের অনুসারী রাশেদুল আলম জিশান, আবু তোরাব পরশ, মনসুর আলম, আবদুল মালেক, মিজানুর রহমান, আরিফুল হক অপু ও মোহাম্মদ আরমানকে আসামি করা হয়। তাঁরা সবাই চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। দিয়াজও ছিলেন নাছিরেরই অনুসারী। 

আলোচিত এই মামলাটি পুলিশের বিভিন্ন সংস্থা তদন্তের একপর্যায়ে আদালতের আদেশে সিআইডিকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়। এরপর দিয়াজের লাশের দ্বিতীয় দফা ময়নাতদন্ত করেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের চিকিৎসকেরা। 

২০১৭ সালের ৩০ জুলাই দেওয়া দ্বিতীয় দফা ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে দিয়াজের শরীরে হত্যার আলামত থাকার কথা উল্লেখ করা হয়। ওই প্রতিবেদনের পর দিয়াজের মায়ের করা এজাহার হত্যা মামলা হিসেবে নিতে হাটহাজারী থানার ওসিকে নির্দেশ দেন আদালত। এরপর মামলার তদন্ত যায় সিআইডির হাতে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত