Ajker Patrika

স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জমি দখল

প্রতিনিধি, মুলাদী (বরিশাল) 
স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জমি দখল

মুলাদীতে প্যাদারহাট উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের দুই কোটি টাকার সম্পত্তি দখলের অভিযোগ উঠেছে। দীর্ঘদিন ধরে স্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রায় ৬০ শতাংশ জমি স্থানীয় একটি মহল দখল করে রেখেছে। দখলদাররা সরকারি জমিতে দোকান নির্মাণ করেছেন। তবে অভিযুক্তদের দাবি, তাঁরা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের কোনো জমি দখল করেননি। তাঁদের পৈতৃক সম্পত্তিতে দোকান নির্মাণ করেছেন।

স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, স্থানীয় ইউপি সদস্য কাঞ্চন প্যাদা, আলীম প্যাদা ও তাঁর লোকজন প্যাদারহাট উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের জমি দখল করে ভবনের চারদিকে দোকান নির্মাণ করেছেন। স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চারদিকে এক শতাংশ জমিও খালি নেই। এমনকি প্যাদারহাট সংলগ্ন খালে নির্মিত স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ঘাটটিও দখল হয়ে গেছে। চারদিকে ফাঁকা জায়গা না থাকায় চিকিৎসক, নার্স, কর্মচারীদের আবাসনের ব্যবস্থা করা যাচ্ছে না। স্বাস্থ্য কেন্দ্রের জমি দখল করে দোকান নির্মাণ করা হলেও প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

জানা গেছে, ১৯৪৭ সালে উপজেলার কাজিরচর ইউনিয়নের প্যাদারহাটে স্বাস্থ্য কেন্দ্র নির্মাণ শুরু হয়। ওই সময় স্বাস্থ্য কেন্দ্রের জন্য ডিক্রীরচর গ্রামের হযরত আলী প্যাদা, কদম আলী প্যাদা, গোলাম আলী প্যাদা ১১ শতাংশ করে ৩৩ শতাংশ জমি দান করেন। একই সঙ্গে ধলু মৃধা ও সোবাহান হাওলাদার সাড়ে ১৬ শতাংশ করে ৩৩ শতাংশ জমি দেন। বন্দরের ৬৬ শতাংশ জমির ওপর টিনের স্বাস্থ্য কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়। ১৯৯৫-১৯৯৬ সালে ওই জমির ৪–৫ শতাংশের ওপর স্বাস্থ্য কেন্দ্রটির দ্বিতল ভবন নির্মাণ করা হয়। পরবর্তীতে বন্দরের পরিসর বড় হতে থাকলে দোকানের সংখ্যা বাড়তে থাকে। সেই সঙ্গে প্যাদারহাট বন্দরের জমির মূল্যও বেড়ে যায়। বর্তমানে বন্দরের প্রতি শতাংশ জমির মূল্য ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা। সেই হিসেবে স্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রায় ২ কোটি টাকার জমি দখল হয়ে গেছে। স্থানীয় একটি মহল ধীরে ধীরে এই জমি দখল করছে।

ডিক্রীরচর গ্রামের বাসিন্দা জয়নাল আবেদীন জানান, ১৯৯০ সালেও প্যাদারহাট স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চারদিকে অনেক জায়গা ফাঁকা ছিল। জমির দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় একটি মহল সরকারি জমি দখল করে দোকান নির্মাণ করেছেন। অনেকে পাকা ভবন নির্মাণ করে ভাড়া দিচ্ছেন।

ইউপি সদস্য অভিযুক্ত কাঞ্চন প্যাদা বলেন, ‘আমার পৈতৃক জমিতে দোকান নির্মাণ করেছি। যারা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে জমি দিয়েছিল তাদের জমি অন্য জায়গায় আছে।’

অভিযুক্ত আব্দুল আলীম প্যাদা বলেন, ‘আমি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র কিংবা কোনো সরকারি জমিতে দোকান করিনি। আমার বাবার জমিতে দোকান নির্মাণ করেছি।’

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সাইয়েদুর রহমান জানান, স্বাস্থ্য কেন্দ্রের জমি উদ্ধারের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসক ও সিভিল সার্জনের কাছে আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু তাঁদের সহযোগিতা না পাওয়ায় জমি উদ্ধারের কাজ করা সম্ভব হয়নি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নূর মোহাম্মাদ হোসাইনী বলেন, ‘স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের জমি উদ্ধারের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত