Ajker Patrika

আমতলীর নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, বাঁধ ভাঙার আতঙ্কে ৩০ হাজার মানুষ

প্রতিনিধি
আমতলীর নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, বাঁধ ভাঙার আতঙ্কে ৩০ হাজার মানুষ

আমতলী (বরগুনা): ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে সাগর ও পায়রা নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়ে বরগুনা জেলার আমতলী উপজেলার উপকূলীয় এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে নিম্নাঞ্চলের ঘর-বাড়ি ও পুকুর তলিয়ে গেছে। মানুষ বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ এবং সাইক্লোন শেল্টারে আশ্রয় নিয়েছে। আমতলী উপজেলার ৩০ হাজার মানুষ বাঁধ ভেঙে পানিতে প্লাবিত হওয়ার আতঙ্কে রয়েছে।

আমতলী পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় ইয়াস ও অমাবস্যার জোর প্রভাবে সাগর ও পায়রা নদীতে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে বিপৎসীমার ৩ ফুট ওপরে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় উপকূলীয় এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে ঘর-বাড়ি ও পুকুর তলিয়ে গেছে।

আমতলী উপজেলার কুকুয়া ইউনিয়নে পূর্ব কৃষ্ণনগর এলাকার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে এলাকা তলিয়ে গেছে বলে জানান ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ বোরহান উদ্দিন মাসুম তালুকদার। তিনি এরই মধ্যে ওই বাঁধ সংস্কার কাজ শুরু করেছেন। মানুষ বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ এবং সাইক্লোন শেল্টারে আশ্রয় নিয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে উপকূলীয় অঞ্চলে গুমোট আবহাওয়া বিরাজ করছে। হালকা দমকা বাতাসের সঙ্গে ভারী বজ্র বৃষ্টি হয়েছে।

এদিকে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে পায়রা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় উপজেলার আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের বালিয়াতলী-পশুরবুনিয়া ও ডাঙ্গার খাল এলাকায় পাঁচশ মিটার, চাওড়া ইউনিয়নের পশ্চিম ঘটখালী এলাকায় দুইশ মিটার, গুলিশাখালী ইউনিয়নের আঙ্গুলকাটা এলাকায় তিনশ মিটার, হলদিয়া ইউনিয়নের পূর্ব চিলা এলাকায় দুইশ মিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ অধিক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে ঝুঁকিপূর্ণ বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে পানিতে এলাকা তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা। এতে ঝুঁকি নিয়ে অন্তত ৩০ হাজার মানুষ আতঙ্কে বাঁধ এলাকায় বসবাস করছে।

আমতলী ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কেন্দ্রে সূত্রে জানা গেছে, উপকূলীয় অঞ্চল আমতলীতে দুই নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। সাগরে ৬৫ দিনের মাছ শিকার বন্ধ থাকায় জেলেরা উপকূলেই অবস্থান করছে। কিন্তু মাছ শিকারের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে সাগরে কেউ গিয়ে থাকলে তাদেরকে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আমতলী উপজেলার সাগর ও পায়রা নদী সংলগ্ন বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের বাইরে বালিয়াড়ি, ঘোপখালী, পশুরবুনিয়া, আড়পাঙ্গাশিয়া, লোচা, আমতলী পৌরসভার ফেরিঘাট, শ্মশানঘাট, পানি উন্নয়ন বোর্ড, আঙ্গুলকাটা, গুলিশাখালী ও গুলিশাখালীর জেলে পল্লিসহ উপকূলের অধিকাংশ বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের বাইরের নিম্নাঞ্চল পানিয়ে তলিয়ে গেছে। ওই নিম্নাঞ্চলে বসবাসরত ঘর-বাড়ি ও পুকুর তলিয়ে গেছে। মানুষ বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ এবং সাইক্লোন শেল্টারে আশ্রয় নিয়েছে।

আমতলী পৌর শহরের আমুয়ার চর এলাকার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, পানিতে ঘর-বাড়ি তলিয়ে গেছে।

আমতলী ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি সহকারী পরিচালক এম মাহতাবুল বারী বলেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াস পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৪৮০ কিলোমিটার দুরে বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। ইয়াস মোকাবিলায় ইতিমধ্যে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। মানুষকে নিরাপদে আনতে ইতিমধ্যে স্বেচ্ছাসেবকেরা প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আসাদুজ্জামান বলেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াস মোকাবিলায় মানুষকে সচেতন ও জেলেদের নিরাপদে থাকতে বলা হয়েছে। উপজেলার সকল সাইক্লোন শেল্টার খোলা রাখা রয়েছে। সাইক্লোন সেন্টারগুলো পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে বসবাস উপযোগী করা হয়েছে।

বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ কায়সার আলম বলেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে পায়রা নদীতে বিপৎসীমার ৩ ফুট ওপরে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ এলাকা রক্ষায় কাজ চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

বগুড়ায় ছাত্রদল নেতার ওপর হামলা, পাঁচ নেতা-কর্মীকে শোকজ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত