Ajker Patrika

বন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ১০ লক্ষাধিক টাকার গাছ বিক্রি করার অভিযোগ

মির্জাগঞ্জ (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
বন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ১০ লক্ষাধিক টাকার গাছ বিক্রি করার অভিযোগ

পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে একটি গ্রামীণ সড়কের উপকূলীয় সামাজিক বনায়নের ১০ লক্ষাধিক টাকা মূল্যের বিভিন্ন প্রজাতির গাছ গোপনে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে মির্জাগঞ্জ উপজেলা বন কর্মকর্তা মো. জহিরুল কবির শাহিন মিয়ার বিরুদ্ধে। বিভাগীয় তদন্ত কমিটি প্রাথমিক তদন্তে এ ঘটনার সত্যতা পেয়েছে। আজ বুধবার সরেজমিন তদন্ত শেষে কমিটির আহ্বায়ক পটুয়াখালী সহকারী বন সংরক্ষক সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 
 
স্থানীয় সূত্রে জান যায়, পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার দেউলী সুবিদখালী ইউনিয়নের ডোকলাখালী এলাকায় ব্যক্তি মালিকানাধীন বিভিন্ন প্রজাতির ৬৪টি গাছসহ সাড়ে ৩০০ মিটার সবুজ বেষ্টনী প্রকল্পের আরও ৩ শতাধিক গাছ গোপনে বিক্রির অভিযোগ উঠে উপজেলা বন কর্মকর্তা মো. জহিরুল কবির শাহিন মিয়ার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় বরিশাল বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কার্যালয় পটুয়াখালী সহকারী বন সংরক্ষক মো. তারিকুল ইসলাম, বরগুনা রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. মতিয়ার রহমানসহ তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করে। তদন্ত কমিটি বুধবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ ঘটনার প্রাথমিকভাবে সত্যতা পেয়েছেন বলে জানান। 
 
উপজেলা বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, উপকূলীয় সবুজ বেষ্টনী প্রকল্পের আওতায় ১৯৯৭-৯৮ সালে ডোকলাখালী বক্স কালভার্ট থেকে লেমুয়া মাদ্রাসা পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার বাঁধ সৃষ্টি করা হয়। ২০২১ সালে এ সড়ক উন্নয়নের নিমিত্তে ২১০ মিটার বাঁধের ওপর ১৫৩টি গাছ অপসারণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এবং দরপত্র আহ্বান করা হয়। গাছগুলো অপসারণের কাজটি সর্বোচ্চ দরদাতা হিসাবে স্থানীয় গাছ ব্যবসায়ী মো. আলমগীর হোসেন কাজটি পান। কিন্তু গাছ ব্যবসায়ী মো. আলমগীর হোসেন ও উপজেলা বন কর্মকর্তা মো. জহিরুল কবির শাহিন মিয়ার সঙ্গে যোগসাজশে দরপত্রের ১৫৩টি গাছের সঙ্গে ব্যক্তি মালিকানাধীন ৬৪ টিসহ ওই সড়কের আরও অতিরিক্ত ৩৪০ মিটার সড়কের প্রায় ৩০০ বিভিন্ন প্রজাতির মূল্যবান গাছ কেটে নিয়ে যায়। যার আনুমানিক মূল্য ১০ লক্ষাধিক টাকা। 
 
ডোকলাখালী উপকূলীয় সবুজ বেষ্টনী প্রকল্পের সভাপতি মো. আবদুল বারেক হাওলাদার বলেন, দরপত্রের বাইরে ব্যক্তিমালিকানাধীন ৬৪টি গাছ ছাড়াও আরও ৪০০ মিটার এলাকার গাছ বেশি কেটে নিয়েছে বন কর্মকর্তা ও গাছ ব্যবসায়ী। 

ডোকলাখালী গ্রামের উপকারভোগী ভুক্তভোগীরা বলেন, আমাদের রেকর্ডীয় মালিকানা জমিতে গাছ লাগিয়েছি। তাও সরকারি দেখিয়ে কেটে নিয়েছে। এখান থেকে উপকূলীয় সবুজ বনায়নের মেয়াদ শেষে উপকূলীয় সবুজ বনায়নের মেয়াদ শেষে বন বিভাগ ১৫% পানি উন্নয়ন বোর্ড ১৫% ইউনিয়ন পরিষদ পাবে ১৫% ও উপকারভোগীদের ৫৫% পাওয়ার কথা থাকলেও আমরা কিছুই পায়নি। 

উদ্ধারকৃত গাছঠিকাদার মো. আলমগীর হোসেন বলেন, উপজেলা বন কর্মকর্তা যে গাছগুলো চিহ্নিত করে দিয়েছে সেই গাছগুলোই আমি কেটেছি। 
 
এ ব্যাপারে মির্জাগঞ্জ উপজেলা ভারপ্রাপ্ত বন কর্মকর্তা মো. জহিরুল কবির শাহিন মিয়া বলেন, জেলা বন বিভাগ থেকে ২১০ মিটার সড়কের গাছ দরপত্রের মাধ্যমে বিক্রি করা হয়েছে। তবে কিছু গাছ অতিরিক্ত কর্তন করা হয়েছে। 

তদন্ত কমিটির প্রধান ও পটুয়াখালী জেলা বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক মো. তারিকুল ইসলাম বলেন, দরপত্রের বাইরে গাছ কেটে বিক্রির অভিযোগ প্রাথমিক ভাবে প্রমাণিত হয়েছে তবে তদন্তের স্বার্থে এর বেশি কিছু বলা যাচ্ছে না। 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোসাঃ তানিয়া ফেরদৌস বলেন, এলাকাবাসীর অভিযোগ পেয়ে আমি সরেজমিনে গিয়ে অতিরিক্ত গাছ কর্তনের বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা বন কর্মকর্তা ও গাছ ব্যবসায়ী সঠিক জবাব দিতে পারেনি। এ সময়ে গাছ ভর্তি একটি ট্রলি জব্দ করে বিভাগীয় বন কর্মকর্তাকে অবহিত করি। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত