Ajker Patrika

‘এত ভালোবাসার প্রতিদান দিতে পারলাম না’

 আগৈলঝাড়া (বরিশাল) প্রতিনিধি 
আপডেট : ২৬ মে ২০২৫, ২০: ০৭
সজীব বাড়ৈ। ছবি: সংগৃহীত
সজীব বাড়ৈ। ছবি: সংগৃহীত

বরিশালের আগৈলঝাড়ার সজীব বাড়ৈ নামের এক মেডিকেল কলেজের ছাত্র গত শনিবার বিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। ২২ মে রাতে নিজের শরীরে বিষাক্ত ইনজেকশন পুশ করে আত্মহত্যার চেষ্টা করার পর থেকে তিনি ঢাকায় চিকিৎসাধীন ছিলেন। সহপাঠী ও পরিবার বলছে, অতিরিক্ত পড়াশোনার চাপ কুলাতে না পেরে মানসিকভাবে হতাশাগ্রস্ত ছিলেন সজীব। তাঁর কাছে পাওয়া একটি চিরকুটে লেখা ছিল, ‘নিজের সাথে যুদ্ধ করে করে ক্লান্ত আমি। একটু বিশ্রাম চাই। ক্ষমা করে দিও। এত ভালোবাসার প্রতিদান দিতে পারলাম না।’

সজীব বাড়ৈ উপজেলার বাকাল গ্রামের সুধীর বাড়ৈর ছেলে। এলাকার বিত্তশালীদের সহযোগিতায় বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজে পড়ালেখা করছিলেন তিনি। গতকাল রোববার উপজেলার বাকাল গ্রামের পারিবারিক শ্মশানে সজীবের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হয়। তাঁর মৃত্যুতে ওই পরিবারসহ এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

মেডিকেল কলেজে সজীবের রুমমেট সুমন হালদার জানান, পড়াশোনার অতিরিক্ত চাপ সামলাতে না পেরে নিজেই শরীরে ইনজেকশন পুশ করে আত্মহত্যা করেছেন সজীব বাড়ৈ। পড়াশোনার অতিরিক্ত চাপ সামলাতে না পেরে সজীব প্রায়ই অসুস্থ হয়ে পড়তেন। তিনি তৃতীয় বর্ষের মাইক্রোবায়োলজিতে আটকে ছিলেন। তাঁর সঙ্গের শিক্ষার্থীরা সবাই এমবিবিএস পাস করে ইন্টার্নশিপ করছেন। ক্লাস, এক্সাম সজীব খুবই ভয় পেতেন। যে কারণে ২২ মে রাতে সজীব কোনাজিপাম ও ফুক্সেটিন গুঁড়া করে শিরা দিয়ে পুশ করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। সহপাঠীরা বিষয়টি টের পেয়ে তাঁকে প্রথমে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি করার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত শনিবার বিকেলে তিনি মারা যান।

সুমন হালদার আরও বলেন, ‘সজীব বাড়ৈ বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজের ৫০তম ব্যাচের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। মারা যাওয়ার আগে সজীব একটি চিরকুটে লিখে গেছেন, ‘নিজের সাথে যুদ্ধ করে করে ক্লান্ত আমি। একটু বিশ্রাম চাই। ক্ষমা করে দিও। এত ভালোবাসার প্রতিদান দিতে পারলাম না।’

এ ব্যাপারে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ফয়জুল বাশার জানান, মানসিকভাবে বিধ্বস্ত হয়ে সজীব কিছুদিন আগে শরীরে ইনজেকশন পুশ করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। তাঁকে হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসা দেওয়া হয়। অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় মুমূর্ষু অবস্থায় সজীব বাড়ৈকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছিল। পরে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

সজীব বাড়ৈর বাবা সুধীর বাড়ৈ বলেন, ‘আমার ছেলে বরিশাল মেডিকেলে পড়াশোনা করত। সে মাঝে মাঝে বলত, পড়াশোনার অতিরিক্ত চাপে তার খুবই কষ্ট হতো। কিন্তু সে এভাবে আত্মহত্যা করবে, তা আমরা কেউ মেনে নিতে পারছি না।’

এ ব্যাপারে আগৈলঝাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. অলিউল ইসলাম জানান, চিকিৎসাধীন অবস্থায় মেডিকেল শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শেখ হাসিনা যাঁকে ঢাকায় ‘হত্যা করলেন’, তিনি ময়মনসিংহে জীবিত!

চরফ্যাশন থেকে গেটিসবার্গ কলেজ

জীবিত ভাইকে জুলাই আন্দোলনে নিহত দেখিয়ে মামলায় সাক্ষীও দুই ভাই, নেপথ্যে যা জানা গেল

যুক্তরাষ্ট্রে সি চিন পিংয়ের মেয়েকে বহিষ্কারের দাবি, হঠাৎ কেন এই বিতর্ক

নগদে স্ত্রীর চাকরি, স্বার্থের সংঘাতে জড়ালেন নাহিদের সাবেক পিএ আতিক মুর্শেদ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত