Ajker Patrika

ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে চালকের কাছে জিম্মি অ্যাম্বুলেন্স সেবা

ঝালকাঠি প্রতিনিধি  
অ্যাম্বুলেন্স চালক শাহাদাত গাড়ি থেকে নেমে গণমাধ্যম কর্মীদের দিকে তেড়ে আসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
অ্যাম্বুলেন্স চালক শাহাদাত গাড়ি থেকে নেমে গণমাধ্যম কর্মীদের দিকে তেড়ে আসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে মানুষের জরুরি সেবায় রয়েছে ২টি সরকারি ও ভারত সরকারের কাছ থেকে উপহার হিসেবে পাওয়া ১টি লাইফ সাপোর্ট অ্যাম্বুলেন্স। তিনটি অ্যাম্বুলেন্স থাকলেও চালক আছে মাত্র ১ জন। তিনিও ঠিক মতো কর্মস্থলে থাকেন না। অনুপস্থিতির কারণে সময়মতো সেবা পাচ্ছেন না রোগীরা।

সরকারি অ্যাম্বুলেন্সের চালককে সময়মতো না পেয়ে জরুরি চিকিৎসা সেবা নিতে মানুষকে ভরসা করতে হয় বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স, মাইক্রোবাস অথবা অটো রিকশার ওপর। এতে বাড়তি ভাড়া ও চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে রোগীদের।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, মহসিন নামে একজন চালককে অনিয়মের অভিযোগে কয়েক দিন আগে বদলি করা হয়। এরপর থেকে অ্যাম্বুলেন্স চালকের দায়িত্ব পালন করে আসছেন শাহাদাত। শাহাদাত জেনারেটরের তেল ভর্তির দায়িত্বেও আছেন। জেনারেটর না চললেও দেখানো হচ্ছে তেলের খরচ। তত্ত্বাবধায়কের সঙ্গে সুসম্পর্ক তৈরি করে তিনি অনিয়ম ও কর্তব্যকাজে ফাঁকি দিয়ে আসছেন নিয়মিত।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হাসপাতাল থেকে অ্যাম্বুলেন্স ও জেনারেটরের জ্বালানি ভরার জন্য স্লিপে পাম্প থেকে যে পরিমাণ জ্বালানি নিতে বলা হয়, তিনি তা না এনে বিক্রি করে দেন।

আজ শনিবার দুপুরে সদর উপজেলার ধারাখানা এলাকার অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ রিয়া মনিকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন স্বজনরা। কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে রেফার্ড করেন।

কিন্তু প্রায় এক ঘণ্টা অপেক্ষা করেও চালককে না পেয়ে দুর্ভোগে পড়তে হয় তাদের। পরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের ফোনে ছুটে আসেন শাহাদাত।

রোগীর স্বজনদের অভিযোগ দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করেছি। অ্যাম্বুলেন্স গ‍্যরেজেই ছিল কিন্তু চালক শাহাদাত আমাদের সেবা দিতে চায়নি। তিনি জানান, আপনারা অন্য গাড়িতে বরিশাল চলে যান, আমার ট্রিপ আছে।

গতকাল শুক্রবার হাসপাতালে সেবা নিতে আসা রোগীর স্বজন কাওসার আজকের পত্রিকাকে বলেন, আমার শাশুড়িকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল রেফার করেন চিকিৎসক। কিন্তু অ্যাম্বুলেন্স চালককে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি। পরবর্তীতে একজন গণমাধ্যম কর্মীকে বিষয়টা জানালে সে ফোন দিলে চালক সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে ছুটে আসে।

হাসপালটিতে সেবা নিতে আসা একাধিক রোগীর স্বজনদের অভিযোগ অ্যাম্বুলেন্স চালক আমাদের সকলকে জিম্মি করে রেখেছে। এর একটা সমাধান হওয়া দরকার।

এ বিষয়ে চালক শাহাদাত বলেন, অফিসের কাজের জন্য ব্যস্ত ছিলাম। আমি সেবা দিতে চাইনি, এটা সত্য নয়। কিন্তু খোঁজ নিয়ে জানা যায় তিনি তখন ডরমিটরি ভবনে ছিলেন। তার শয়ন কক্ষে ঘুমিয়ে ছিলেন, যেখানে তার থাকার কথা নয়।

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থী ইয়াসিন ফেরদৌস ইফতি আজকের পত্রিকাকে বলেন, রোগীরা হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্স সেবা পাচ্ছে না, আমরা খবর পেয়ে হাসপাতালে যাই। ভুক্তভোগী পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারি অনেক বার ফোন দেওয়ার পরও অ্যাম্বুলেন্স চালক আসেনি। পরবর্তীতে আমি ফোন দিলে তার কিছুক্ষণ পর চালক গাড়ির কাছে আসেন।

ঘটনাস্থলে থাকা গণমাধ্যম কর্মীরা বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি তাদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করে গাড়ি থেকে নেমে তাদের দিকে তেড়ে আসেন। এমনকি রাগে ক্ষোভে তিনি অ্যাম্বুলেন্সের দরজায় সজোরে লাথি মেরে তা আটকায়। এতে ভয় পেয়ে যায় গাড়িটির ভেতরে থাকা রোগী ও স্বজনরা।

এ বিষয়ে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. শামীম আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, অ্যাম্বুলেন্স চালক শাহাদাত আউটসোর্সিংয়ে কাজ করে। তার সঙ্গে আমার কোনো সুসম্পর্ক নেই। আমাদের চালক সংকট আছে, তবে ঘটনার বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পদোন্নতি দিয়ে ৬৫ হাজার সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগের পরিকল্পনা: ডিজি

দিনাজপুরে হিন্দু নেতাকে অপহরণ করে হত্যা: ভারত সরকার ও বিরোধী দল কংগ্রেসের উদ্বেগ

সমালোচনার মুখে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের নিয়োগ বাতিল

আজ থেকে ৫০০ টাকায় মিলবে ১০ এমবিপিএস গতির ইন্টারনেট

যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৫ হাজার শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল, বেশির ভাগই ভারতীয়, আছে বাংলাদেশিও

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত