Ajker Patrika

কেটে ফেলা হয় গুলিবিদ্ধ কিডনি, ১১ ব্যাগ রক্ত দিয়েও বাচাঁনো যায়নি আবদুল্লাহকে

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল
আপডেট : ২৭ জুলাই ২০২৪, ২২: ৫৭
কেটে ফেলা হয় গুলিবিদ্ধ কিডনি, ১১ ব্যাগ রক্ত দিয়েও বাচাঁনো যায়নি আবদুল্লাহকে

নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাপোর্ট স্টাফ আবদুল্লাহ আল আবির (২৩) কোটা সংস্কার আন্দোলনে নেমে পুলিশের গুলিতে আহত হয়েছিলেন। ১৯ জুলাই ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের দিনভর সংঘর্ষ চলে। সন্ধ্যায় গুলিতে পেটের ভেতরটা ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় তাঁর। কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ঢাকা মেডিকেলে অস্ত্রোপচারে ১১ ব্যাগ রক্ত দিয়েও বাঁচানো যায়নি তাঁকে। পরদিন ২০ জুলাই সকালে হাসপাতালে মারা যান আবদুল্লাহ। ২১ জুলাই রাতে বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার বাহেরচর ক্ষুদ্রকাঠী গ্রামে জানাজা শেষে তাঁকে দাফন করা হয়। 

বাবুগঞ্জের ক্ষুদ্রকাঠী গ্রামের মিজানুর রহমান বাচ্চুর ছেলে আবদুল্লাহ বোনের সঙ্গে ঢাকার ভাড়া বাসায় থাকতেন। ভগ্নিপতি মহিমুল ইসলাম নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি করার সুবাদে আবদুল্লাহরও সেখানে চাকরির ব্যবস্থা হয়। তাঁর পিতা বাচ্চু বরিশাল নগরের জননিরাপত্তা অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী। 

ক্ষুদ্রকাঠী গ্রামে এখনো শোকের ছায়া। এলাকার মানুষ আবদুল্লাহকে বেশ ভদ্র এবং মিশুক ছেলে হিসেবেই চিনতেন। একমাত্র ভাইয়ের মৃত্যু কিছুতেই মানতে পারছেন না বোন মারিয়া আক্তার। গ্রামের বাড়িতে বসে মারিয়া বলেন, ‘আগের দিন বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন পুলিশ ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ চলছে। গত শুক্রবার দুপুরে আবদুল্লাহ ক্যাম্পাসের উদ্দেশে বের হয়ে যায়। যাওয়ার আগে জানতে চায়, বাসায় জাতীয় পতাকা আছে কি না? সে পতাকা ছাড়াই বেরিয়ে যায়। বারবার বারণ করলেও শোনেনি।’  

মারিয়া আরও বলেন, `কয়েকবার ফোন দিয়ে তাকে বাসায় ফিরতে বললেও প্রতিবারই সে বলেছে ভালো আছে। সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে অজ্ঞাত একজন ফোন দিয়ে বলেন, আবির আহত হয়েছে। দ্রুত ঢাকা মেডিকেলে যেতে হবে। অলিগলি পেরিয়ে রাত ৯টার পর মেডিকেলে পৌঁছে দেখি তার পেটে ব্যান্ডেজ করা।' 

মারিয়া চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে বলেন, গুলিতে পেটের ভেতরটা ছিন্নভিন্ন হওয়ায় রক্তক্ষরণ বন্ধ হচ্ছিল না। রাতের মধ্যেই তাই অপারেশন করতে হয়েছিল। আবদুল্লাহ তখনো মানসিকভাবে শক্ত ছিল, কথা বলছিল। তার সঙ্গে আহত অন্যদের সম্পর্কে তখন সে জানতে চায়। 

মারিয়া বলেন, গুলিতে তার কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় চিকিৎসকেরা একটি কিডনি কেটে ফেলেন। তারপরও ভেতরের রক্তক্ষরণ বন্ধ হয়নি। ১১ ব্যাগ রক্ত দিলেও শরীরে ধরে রাখা যায়নি।  

ছেলেকে হারিয়ে বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন আবদুল্লাহর মা পারভীন সুলতানা। কান্নায় ভেঙে পড়ে তিনি বলেন, ‘আমার ছেলে শহীদ হয়েছে। তার বিজয় হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী সব দাবি মেনে নিয়েছে। কিন্তু আমার আবির দেখে যেতে পারল না।’

এ সময় আবদুল্লাহর শোকাহত বাবা মিজানুর রহমান বাচ্চু বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন। একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পদোন্নতি দিয়ে ৬৫ হাজার সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগের পরিকল্পনা: ডিজি

দিনাজপুরে হিন্দু নেতাকে অপহরণ করে হত্যা: ভারত সরকার ও বিরোধী দল কংগ্রেসের উদ্বেগ

সমালোচনার মুখে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের নিয়োগ বাতিল

আজ থেকে ৫০০ টাকায় মিলবে ১০ এমবিপিএস গতির ইন্টারনেট

মির্জা ফখরুলের কাছে অভিযোগ, ১৬ দিনের মাথায় ঠাকুরগাঁও থানার ওসি বদলি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত