Ajker Patrika

নেছারাবাদে বিদ্যালয়ের সভাপতির বিরুদ্ধে প্রধান শিক্ষিকার লিখিত অভিযোগ

নেছারাবাদ (পিরোজপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৬ মার্চ ২০২৩, ১৭: ২৮
Thumbnail image

পিরোজপুরের নেছারাবাদের পূর্ব কামারকাঠি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতির বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলেছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা। এ বিষয়ে তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ (ইউএনও) কয়েকজনের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। বিদ্যালয়ে আধিপত্য বিস্তার, স্বেচ্ছাচারিতা, শিক্ষকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার, শিক্ষকদের হয়রানি, বিদ্যালয়ের উন্নয়নমূলক বরাদ্দ থেকে অর্থ আত্মসাৎসহ নানা অভিযোগ তুলেছেন তিনি।

গতকাল রোববার এ লিখিত অভিযোগ ইউএনও, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা শিক্ষা অফিসে জমা দেওয়া হয়েছে। এতে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শিরিন আখতারসহ অন্য শিক্ষিকাদের স্বাক্ষর রয়েছে। গতকাল রাতে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শিরিন আখতার অভিযোগ জমা দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, গত বছরের ১২ মে বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদে স্থানীয় এইচ এম মুনিরুজ্জামান সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হন। কমিটির সভাপতি হওয়ার পর তিনি বিদ্যালয়ের দাপ্তরিক কাজে অসহযোগিতা শুরু করেন। এতে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের পাঠদানে বিঘ্ন ঘটছে।

অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়, গত ফেব্রুয়ারিজুড়ে বাচ্চাদের ক্লাস নিতে না দিয়ে ক্রীড়া অনুষ্ঠানের কথা বলে বাচ্চাদের প্রশিক্ষণের নির্দেশ দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানের সব আয়োজন করে হঠাৎ তিনি তাঁর সে অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেন।

এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক শিরিন আখতার বলেন, ‘সভাপতি তাঁর ইচ্ছামতো সরকারি বিধি-বহির্ভূতভাবে বিদ্যালয় পরিচালনা করতে চাপ প্রয়োগ করেন। শিক্ষকেরা তা মেনে না চললে তিনি লোকজন দিয়ে অপমান করেন। তিনি নিজেও শিক্ষিকাদের শাসিয়ে থাকেন। বিদ্যালয়ের উন্নয়নমূলক কাজ থেকে তাঁর স্বার্থ হাসিল না হওয়ায় বিভিন্ন মহলে তিনি আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন।’

বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রুশিয়া খাতুন অভিযোগ করেন, ‘সভাপতি তাঁর ইচ্ছে অনুযায়ী আমাদের বিদ্যালয় পরিচালনা করতে বলেন। যা আমাদের জন্য খুবই অপমানজনক। এ ছাড়া তিনি বিদ্যালয়ে নানা সমস্যা তৈরি করছেন। এ থেকে আমরা পরিত্রাণ চাই।’

তবে বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি মুনিরুজ্জামান বলেন, ‘বিদ্যালয়ে সরকারি অনুদানের উন্নয়নমূলক বড় একটি অংশ প্রধান শিক্ষিকা আত্মসাতের চেষ্টা করেছিলেন। যা আমার শক্ত অবস্থানের কারণে পারেননি। এ নিয়ে আমি উপজেলা শিক্ষা অফিসে অভিযোগ করেছিলাম। একটি তদন্তও হয়েছিল। সম্প্রতি বিদ্যালয়ের স্লিপের টাকায় প্রধান শিক্ষিকার একক কর্তৃত্বের জন্য আমার স্বাক্ষর নিতে এসেছিলেন। আমি তাতে স্বাক্ষর না করায় তিনি আমার বিরুদ্ধে এসব মিথ্যা নাটক সাজাচ্ছেন।’

এ বিষয়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল হক বলেন, ‘একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। শিগগিরই বিষয়টি তদন্তে কমিটি করা হবে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন না পাওয়া পর্যন্ত এ বিষয়ে চূড়ান্ত কিছু বলা যাচ্ছে না।’

এ বিষয়ে জানতে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নাসির উদ্দীনকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মজনু মোল্লা বলেন, ‘লিখিত অভিযোগের একটি অনুলিপি আমাকেও দেওয়া হয়েছে।’ 

নেছারাবাদ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাহাবুব উল্লাহ মজুমদার বলেন, ‘অভিযোগের অনুলিপি এখনো হাতে পাইনি। অফিসে গিয়ে বিষয়টি দেখছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত