Ajker Patrika

মুলাদীতে শস্যখেত ডুবিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে

মুলাদী (বরিশাল) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২: ৪৮
মুলাদীতে শস্যখেত ডুবিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে

বরিশালের মুলাদীতে সেচ দিয়ে প্রায় ৩৮ একর জমির রবিশস্য ডোবানোর অভিযোগ উঠেছে এক ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে। সফিপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য জসিম উদ্দীন হাওলাদারের বিরুদ্ধে উত্তর বালিয়াতলী এলাকার রবিশস্য নষ্টের অভিযোগ ওঠে। ইউপি সদস্যের সেচ প্রকল্পে বোরো ধান চাষ করতে না চাওয়ায় ফসল নষ্ট করেছেন বলে অভিযোগ চাষিদের। 

তবে ইউপি সদস্যের দাবি, কৃষকেরা ইরি ধান চাষ না করার বিষয়টি আগে না জানানোয় সেচের কাজ শুরু করা হয়েছে। এতে কিছু কৃষকের সরিষা, গম ও ডাল নষ্ট হলেও কোনো চাষির জমিতে ইচ্ছাকৃত সেচ দেওয়া হয়নি। 

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা জানান, সফিপুর ইউনিয়নের উত্তর বালিয়াতলী মৌজায় প্রায় ৪০ একর জমিতে দুই ও তিন ফসলি জমি রয়েছে। গত দুই বছর সেচের সাহায্যে ইরি ধান চাষ করে অনেক লোকসান হয়েছে। তাই কৃষকেরা এ বছর ধানের বদলে সরিষা, গম, খেসারি ডাল চাষের সিদ্ধান্ত নেন। সেচের সঙ্গে জড়িতদের জানিয়েই প্রায় ৩৮ একর জমিতে রবিশস্য চাষ করা হয়েছে। এতে সেচ প্রকল্পের নেতা ইউপি সদস্য জসিম ক্ষিপ্ত হন এবং খেতে ইচ্ছেকৃত সেচের পানি দিয়ে ফসল নষ্ট করে দেন। 

বালিয়াতলী গ্রামের আব্দুল করিম মাল বলেন, ইরি চাষ অনেক ব্যয়বহুল। ফলন ভালো না হওয়ায় কৃষকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তাই কিছুটা লাভের আশায় এ বছর সম্মিলিতভাবে রবিশস্য চাষের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কৃষকের রবিশস্য চাষের পর থেকেই স্থানীয় ইউপি সদস্য জসিম উদ্দীন হাওলাদার ও তার সহযোগীরা সেচ প্রকল্প শুরু করেন। তাঁরা মাত্র এক একর জমিতে ইরি ধান চাষ করছেন। আর সেচের নামে পানি দিয়ে কৃষকের ফসল নষ্ট করছেন। 

তিনি আরেও বলেন, সেচ প্রকল্প বন্ধের জন্য ২০২৩ সালের ৪ ডিসেম্বর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন করা হয়েছিল। তিনি বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দিয়েছিলেন। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় গত ২০ ডিসেম্বর থেকে গতকাল পর্যন্ত প্রায় ৩৮ একর জমির ফসল সেচের কারণে নষ্ট হয়েছে। 

এ ব্যাপারে ইউপি সদস্য জসিম উদ্দীন হাওলাদার বলেন, ইরি ধান চাষ না করার বিষয়টি কৃষকেরা আগে অবহিত করেননি। ওই জমিতে ছয় বছর ধরে ইরি চাষ হচ্ছে এবং তিন বছর ধরে বৈদ্যুতিক মোটরের মাধ্যমে সেচ দিয়ে চাষের কার্যক্রম চলছে। এতে অনেক টাকা খরচ হয়েছে। খরচের টাকা ওঠাতে এ বছরও ইরি ধান চাষের জন্য কৃষকদের অনুরোধ করা হয়েছে। কিছু কৃষক রাজি হওয়ায় সেচ প্রকল্প শুরু হয়েছে। এতে কিছু নিচু জমির রবিশস্য নষ্ট হতে পারে। কিন্তু কারও জমিতে ইচ্ছেকৃত সেচ দিয়ে ফসল নষ্ট করা হয়নি। 

সেচের পানি জমে আছে রবিশস্যের জমিতে। ছবি: আজকের পত্রিকাএ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘উত্তর বালিয়াতলী এলাকার কৃষকদের আবেদনের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ পেয়ে আমি অপারগতা প্রকাশ করেছি। বিষয়টি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে সমাধানের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অনুরোধ করা হয়েছিল।’ 

এ ব্যাপারে সহকারী কমিশনার (ভূমি) হাসনাত জাহান খান বলেন, কৃষকেরা না চাইলে ইরি ধান চাষে বাধ্য করা যাবে না। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত