Ajker Patrika

হ‌ুমায়ূন আহমেদের কবিতা

মাসুদ রানা
Thumbnail image

গৃহত্যাগী জোছনা

প্রতি পূর্ণিমার মধ্যরাতে একবার আকাশের দিকে তাকাই
গৃহত্যাগী হবার মত জোছনা কি উঠেছে? 
বালিকা ভুলানো জোছনা নয়।
যে জোছনায় বালিকারা ছাদের রেলিং ধরে 
ছুটোছুটি করতে করতে বলবে,
ও মাগো, সুন্দর চাঁদ! 
নবদম্পতির জোছনাও নয়।
যে জোছনা দেখে স্বামী গাঢ়স্বরে স্ত্রীকে বলবেন—
দেখো নীতু চাঁদটা তোমার মুখের মতোই সুন্দর।
কাজলা দিদির স্যাঁতস্যাঁতে জোছনা নয়। 
যে জোছনা বাসি স্মৃতিপূর্ণ ডাস্টবিন উল্টে দেয় আকাশে। 
কবির জোছনা নয়। যে জোছনা দেখে কবি বলবেন—
কি আশ্চর্য রূপার থালার মতো চাঁদ। 
আমি সিদ্ধার্থের মতো গৃহত্যাগী জোছনার জন্যে বসে আছি। 
যে জোছনা দেখামাত্র গৃহের সমস্ত দরজা খুলে যাবে—
ঘরের ভেতর ঢুকে পড়বে বিস্তৃত প্রান্তর। 
প্রান্তরে হাঁটব, হাঁটব আর হাঁটব—
পূর্ণিমার চাঁদ স্থির হয়ে থাকবে মধ্য আকাশে। 
চারদিক থেকে বিবিধ কণ্ঠ ডাকবে—আয় আয় আয়।

 

অলংকরণ: মীম রহমানকাচপোকা

একটা ঝকঝকে রঙিন কাচপোকা
হাঁটতে হাঁটতে এক ঝলক রোদের মধ্যে পড়ে গেল। 
ঝিকমিকিয়ে উঠল তার নকশাকাটা লাল নীল সবুজ শরীর। 
বিরক্ত হয়ে বলল, রোদ কেন? 
আমি চাই অন্ধকার। চির অন্ধকার
আমার ষোলটা পায়ে একটা ভারি শরীর বয়ে নিয়ে যাচ্ছি
অন্ধকার দেখব বলে। 
আমি চাই অন্ধকার। চির অন্ধকার

একটা সময়ে এসে রোদ নিভে গেল। 
বাদুড়ে ডানায় ভর করে নামল আঁধার। 
কি গাঢ়, পিচ্ছিল থকথকে অন্ধকার! 
কাচপোকার ষোলটা ক্লান্ত পা বার বার 
সেই পিচ্ছিল আঠালো অন্ধকারে ডেবে যাচ্ছিল। 
তার খুব কষ্ট হচ্ছিল হাঁটতে। 
তবু সে হাঁটছে—
তাকে যেতে হবে আরো গভীর অন্ধকারে। 
যে অন্ধকার—আলোর জন্মদাত্রী। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত