লুৎফর হাসান
প্রস্থানপর্ব
ধরো, আর কালো পর্দা সরিয়ে
হাসল না পৃথিবী,
প্রজাপতির পাখনা হতে আর
ছুটল না বৈরী মাকড়সার
জটিল বন্ধন,
আর একটি গাছেও লাগল না
সুপ্রিয় বসন্ত সবুজ,
একটি ফুলের পাপড়িও আর
মেলল না চোখ সুন্দর,
পাখিদের বন উজাড় হয়ে গেল
নতুন গানের সুর তাল লয়
ঠিক করতে করতে,
ধরো, গলির মোড়ে কেবলই
বড় হতে লাগল
মৃত কুকুরের কঙ্কালের স্তূপ,
টবের গাছ হতে সরে পড়ল
নয়নতারা রোদ,
দূর আকাশের দশ দিক হতে
আর উড়ে এলো না
সমুদ্র হিম বাউল বাতাস,
কিংবা আর একটি রিকশাও
ছুটে এলো না প্রিয়তম রিংটোন
বাজাতে বাজাতে আমাদের পথের মোড়ে
আর একটিবার।
তুমি-আমি তখন দাঁড়াব কোথায়
কোন অপেক্ষার যাত্রীছাউনিতে
অথবা শপিংমলের মসৃণ করিডরে
যেভাবে আগে দাঁড়াতাম এই সব
শোকমিছিল গ্লাসের ওপাশ দিয়ে
দেখতে দেখতে
যেন শুধু আমাদের দেখার পালা
অথচ আজ তুমি আমি
দুজন মিলে তাকিয়ে দেখছি
পৃথক আকাশ পৃথক জানালায় বসে
আর ভাবছি আমরা একসাথে বাঁচতে চেয়েছিলাম
এই মৃত্যুগন্ধা পৃথিবীর ওপর নিশ্চল দাঁড়িয়ে চিরকাল।
বিপরীত প্রত্যাখ্যান
তুমি বা আমি আমাদের কেউ একজন
ধরো মরে গেলাম,
আমাদের এই সব দিনরাত্রির
সুন্দরতম দৃশ্য যখন আবার সামনে আসবে,
সেই সকাল নটার বাস ছেড়ে যাবে
একই স্টেশন হতে
একই ট্রাফিক সিগন্যালে বিশ্রাম নেবে বাস
সেই পরিচিত স্টপেজে গিয়ে নেমে পড়বে সকলে,
শুধু আমি নামব না অথবা তুমিও থাকবে না
চিরায়ত সুন্দরতম ঝলমলে অপেক্ষায়,
তারপর সবুজ উদ্যানের যেদিকের কোল ঘেঁষে
শেওলা রঙের লেক ভর্তি জল নড়ে উঠছে
বসন্তের বাতাসে, সেদিকের গাছের ডালে
অনেকগুলো পাখি গাইবে আগেকার গান,
আর তুমি হয়তো চোখ মুছছ রুমালে কিংবা
আমি একা একা একটা অভ্যাস ভুলে যাওয়া
সিগারেটের সূর্যে পুড়িয়ে নেব হৃদয়,
কেমন হবে সেই একলার সংসার তোমার
কিংবা আমার!
অথচ আমরা একত্রে দীর্ঘ দম নিয়ে হেঁটে যেতে
চেয়েছিলাম ছায়া বিছানো নরম পথে,
পথ আমাদের নিল না,
নিল পথের চিহ্ন, আর কেউ না।
যদি শব্দটি যেভাবে প্রিয় হয়ে ওঠে
তারপর আমাদের আর দেখা হলো না
প্রিয়তম ছাতিম গাছের তলায়,
আমাদের আর দেখা হলো না
নির্ভরতার লোডশেডিংয়ে
আর কোনো সন্ধ্যার ঘোরগ্রস্ত সময়ে।
মাথার ওপর দিয়ে আগেকার মতো
উড়ে যাচ্ছে শহুরে পাখির ঝাঁক
আমরা তাদের আর গুনে দেখছি না,
গুনতে গুনতে হিসেব গুলিয়ে ফেলছি না
আবার শুরু থেকে গুনছি না আর,
ততক্ষণে পাখিরা চলে গেছে এবং
আমরা তাকিয়ে থাকব না কোনো দিন
তাদের পথ ধরে পাখিপুরে যাব বলে,
যেখানে আমাদের নতুন সংসার
আমরা ঠিক করে রেখেছিলাম কবে কোন
আকাশের পথে যেতে যেতে উড়ে উড়ে
মিহিনলঙ্কায়।
আমরা সকলই ভুলতে বসেছি অথবা
আমাদের মনে নেই আর আমরা
ঘষে নিচ্ছি অস্বীকারের যন্ত্রপাতি
যেন আমাদের কারো কাছে কারো
কোনো কথা ছিল না এত দিন,
তাই আমাদের আর দেখা হবে না
কোনো দিন কোনো কালে।
সেই নদীটার জল আজ
আরও বেশি টলটলে
সেই নদীটার বুকে আজ
আরও বেশি পবিত্র বাতাস
সেই নদীটার বুকে
আজ আর কেউ নেই
যেদিকে আমাদের নৌকোভ্রমণ
পড়ে আছে এখনো কথার বরখেলাপে,
আমাদের আর যাওয়া হলো না
গভীর শীতে কিংবা হালকা বর্ষায়।
এ রকম অনেক রকম আধখাওয়া কথা
ঝুলে আছে সবুজ কামরাঙার ডালে
যার নিচে শীতল মাটি আর ওপরে
অজস্র নীল নীল পাতার বৈভব,
আমাদের যাবার কথা ছিল সেখানেও৷
কিন্তু আমরা আর কোথাও যাব না
আমাদের আর দেখা হবে না কোনো দিন
কোনো পথভোলা উৎসবেও।
নদীতে জাগছে চর সুন্দরের
নতুন রোদ উঠে গেলে যেমন
হেসে ওঠে ঝড়ভাঙা ধানগাছ
যেমন চোখ মেলে তাকায়
বৃষ্টিভেজা শিমফুল আবার বেগুনি রঙে
উঠোনের সবুজ মাটি হয় আবার
খটখটে সুন্দর দৌড়াবে নতুন শিশু তাই,
সেরকম আবার ঘুরে দাঁড়াবে
পৃথিবী আমাদের।
আবার তুমিও দাঁড়াবে প্রিয়
একলা দুপুর হাতের মুঠোয় নিয়ে
সেই পরিচিত বাসস্টপ ঘেঁষে,
একটি মাত্র ছাতার নিচে
আমরা দুজন মানুষ
ভালোবেসে হাঁটব সঙ্গে নিয়ে পথ
কৃষ্ণচূড়ার,
সবজি খিচুড়ির সঙ্গে ডিমভাজি
মচমচে ইলিশ মাছ আলুঝোল গরুর মাংস
সাদা ভাত প্রিয়তম লাঞ্চবক্স ভরে উঠবে
আবার সেই আগেকার টানে প্রতিদিন।
আবার শহরের অচেনা ফুলের গন্ধে
আমরা ফিরে তাকাব পেছনের রিকশায়
ভীষণ উৎসুক যেন কেউ নিয়েছে আমাদের পিছু,
খোলা আকাশকে পেছনে ফেলে
আবার আমরা চলে যাব কোনো
সুন্দরতম এক ফালি সন্ধ্যার তোড়ে ঠিকঠাক,
রাত বাড়তেই আমাদের সুখ-দুঃখের
অপরিসীম ভাগাভাগি চলবে ভবিষ্যৎ নাগাদ
যেন আমরা থাকব স্বপ্নের দেশে মাথা গেড়ে সেদিনও।
আরও একবার শুভরাত্রি বলে ঘুমাব
নতুন করে জেগে উঠব বলে প্রতিবার।
প্রস্থানপর্ব
ধরো, আর কালো পর্দা সরিয়ে
হাসল না পৃথিবী,
প্রজাপতির পাখনা হতে আর
ছুটল না বৈরী মাকড়সার
জটিল বন্ধন,
আর একটি গাছেও লাগল না
সুপ্রিয় বসন্ত সবুজ,
একটি ফুলের পাপড়িও আর
মেলল না চোখ সুন্দর,
পাখিদের বন উজাড় হয়ে গেল
নতুন গানের সুর তাল লয়
ঠিক করতে করতে,
ধরো, গলির মোড়ে কেবলই
বড় হতে লাগল
মৃত কুকুরের কঙ্কালের স্তূপ,
টবের গাছ হতে সরে পড়ল
নয়নতারা রোদ,
দূর আকাশের দশ দিক হতে
আর উড়ে এলো না
সমুদ্র হিম বাউল বাতাস,
কিংবা আর একটি রিকশাও
ছুটে এলো না প্রিয়তম রিংটোন
বাজাতে বাজাতে আমাদের পথের মোড়ে
আর একটিবার।
তুমি-আমি তখন দাঁড়াব কোথায়
কোন অপেক্ষার যাত্রীছাউনিতে
অথবা শপিংমলের মসৃণ করিডরে
যেভাবে আগে দাঁড়াতাম এই সব
শোকমিছিল গ্লাসের ওপাশ দিয়ে
দেখতে দেখতে
যেন শুধু আমাদের দেখার পালা
অথচ আজ তুমি আমি
দুজন মিলে তাকিয়ে দেখছি
পৃথক আকাশ পৃথক জানালায় বসে
আর ভাবছি আমরা একসাথে বাঁচতে চেয়েছিলাম
এই মৃত্যুগন্ধা পৃথিবীর ওপর নিশ্চল দাঁড়িয়ে চিরকাল।
বিপরীত প্রত্যাখ্যান
তুমি বা আমি আমাদের কেউ একজন
ধরো মরে গেলাম,
আমাদের এই সব দিনরাত্রির
সুন্দরতম দৃশ্য যখন আবার সামনে আসবে,
সেই সকাল নটার বাস ছেড়ে যাবে
একই স্টেশন হতে
একই ট্রাফিক সিগন্যালে বিশ্রাম নেবে বাস
সেই পরিচিত স্টপেজে গিয়ে নেমে পড়বে সকলে,
শুধু আমি নামব না অথবা তুমিও থাকবে না
চিরায়ত সুন্দরতম ঝলমলে অপেক্ষায়,
তারপর সবুজ উদ্যানের যেদিকের কোল ঘেঁষে
শেওলা রঙের লেক ভর্তি জল নড়ে উঠছে
বসন্তের বাতাসে, সেদিকের গাছের ডালে
অনেকগুলো পাখি গাইবে আগেকার গান,
আর তুমি হয়তো চোখ মুছছ রুমালে কিংবা
আমি একা একা একটা অভ্যাস ভুলে যাওয়া
সিগারেটের সূর্যে পুড়িয়ে নেব হৃদয়,
কেমন হবে সেই একলার সংসার তোমার
কিংবা আমার!
অথচ আমরা একত্রে দীর্ঘ দম নিয়ে হেঁটে যেতে
চেয়েছিলাম ছায়া বিছানো নরম পথে,
পথ আমাদের নিল না,
নিল পথের চিহ্ন, আর কেউ না।
যদি শব্দটি যেভাবে প্রিয় হয়ে ওঠে
তারপর আমাদের আর দেখা হলো না
প্রিয়তম ছাতিম গাছের তলায়,
আমাদের আর দেখা হলো না
নির্ভরতার লোডশেডিংয়ে
আর কোনো সন্ধ্যার ঘোরগ্রস্ত সময়ে।
মাথার ওপর দিয়ে আগেকার মতো
উড়ে যাচ্ছে শহুরে পাখির ঝাঁক
আমরা তাদের আর গুনে দেখছি না,
গুনতে গুনতে হিসেব গুলিয়ে ফেলছি না
আবার শুরু থেকে গুনছি না আর,
ততক্ষণে পাখিরা চলে গেছে এবং
আমরা তাকিয়ে থাকব না কোনো দিন
তাদের পথ ধরে পাখিপুরে যাব বলে,
যেখানে আমাদের নতুন সংসার
আমরা ঠিক করে রেখেছিলাম কবে কোন
আকাশের পথে যেতে যেতে উড়ে উড়ে
মিহিনলঙ্কায়।
আমরা সকলই ভুলতে বসেছি অথবা
আমাদের মনে নেই আর আমরা
ঘষে নিচ্ছি অস্বীকারের যন্ত্রপাতি
যেন আমাদের কারো কাছে কারো
কোনো কথা ছিল না এত দিন,
তাই আমাদের আর দেখা হবে না
কোনো দিন কোনো কালে।
সেই নদীটার জল আজ
আরও বেশি টলটলে
সেই নদীটার বুকে আজ
আরও বেশি পবিত্র বাতাস
সেই নদীটার বুকে
আজ আর কেউ নেই
যেদিকে আমাদের নৌকোভ্রমণ
পড়ে আছে এখনো কথার বরখেলাপে,
আমাদের আর যাওয়া হলো না
গভীর শীতে কিংবা হালকা বর্ষায়।
এ রকম অনেক রকম আধখাওয়া কথা
ঝুলে আছে সবুজ কামরাঙার ডালে
যার নিচে শীতল মাটি আর ওপরে
অজস্র নীল নীল পাতার বৈভব,
আমাদের যাবার কথা ছিল সেখানেও৷
কিন্তু আমরা আর কোথাও যাব না
আমাদের আর দেখা হবে না কোনো দিন
কোনো পথভোলা উৎসবেও।
নদীতে জাগছে চর সুন্দরের
নতুন রোদ উঠে গেলে যেমন
হেসে ওঠে ঝড়ভাঙা ধানগাছ
যেমন চোখ মেলে তাকায়
বৃষ্টিভেজা শিমফুল আবার বেগুনি রঙে
উঠোনের সবুজ মাটি হয় আবার
খটখটে সুন্দর দৌড়াবে নতুন শিশু তাই,
সেরকম আবার ঘুরে দাঁড়াবে
পৃথিবী আমাদের।
আবার তুমিও দাঁড়াবে প্রিয়
একলা দুপুর হাতের মুঠোয় নিয়ে
সেই পরিচিত বাসস্টপ ঘেঁষে,
একটি মাত্র ছাতার নিচে
আমরা দুজন মানুষ
ভালোবেসে হাঁটব সঙ্গে নিয়ে পথ
কৃষ্ণচূড়ার,
সবজি খিচুড়ির সঙ্গে ডিমভাজি
মচমচে ইলিশ মাছ আলুঝোল গরুর মাংস
সাদা ভাত প্রিয়তম লাঞ্চবক্স ভরে উঠবে
আবার সেই আগেকার টানে প্রতিদিন।
আবার শহরের অচেনা ফুলের গন্ধে
আমরা ফিরে তাকাব পেছনের রিকশায়
ভীষণ উৎসুক যেন কেউ নিয়েছে আমাদের পিছু,
খোলা আকাশকে পেছনে ফেলে
আবার আমরা চলে যাব কোনো
সুন্দরতম এক ফালি সন্ধ্যার তোড়ে ঠিকঠাক,
রাত বাড়তেই আমাদের সুখ-দুঃখের
অপরিসীম ভাগাভাগি চলবে ভবিষ্যৎ নাগাদ
যেন আমরা থাকব স্বপ্নের দেশে মাথা গেড়ে সেদিনও।
আরও একবার শুভরাত্রি বলে ঘুমাব
নতুন করে জেগে উঠব বলে প্রতিবার।
হিমালয় পাই এর নতুন বই’ ডিটাচমেন্ট টু ডিপার্চার’ প্রকাশিত হয়েছে। বইটি বাজারে এনেছে জনপ্রিয় প্রকাশনা সংস্থা আদর্শ প্রকাশনী। বইটিতে মূলত উত্তর ভারতের বিভিন্ন শহর পরিভ্রমণের প্রেক্ষিতে লেখকের সোশিওলজিকাল, পলিটিক্যাল কালচারাল, হিস্টরিকাল, এনথ্রোপলজিকাল যেসব পর্যবেক্ষণ তৈরি হয়েছে সেগুলোকেই সোশ্যাল থিসিসরূ
১৪ দিন আগে‘স্বাধীনতা সাম্য সম্প্রীতির জন্য কবিতা’ স্লোগান নিয়ে শুরু হচ্ছে জাতীয় কবিতা উৎসব ২০২৫। আগামী ১ ও ২ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি চত্বরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে কবিতার এই আসর। আজ শনিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে এটি জানানো হয়েছে...
২১ দিন আগেবাংলা একাডেমি ২০২৪ সালের ষাণ্মাসিক ফেলোশিপ এবং ছয়টি পুরস্কারের জন্য মনোনীতদের নাম ঘোষণা করেছে। মুক্তিযুদ্ধ, ইতিহাস, বিজ্ঞান, শিল্পকলা এবং ভাষা গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য বিভিন্ন ব্যক্তি ফেলোশিপ পাচ্ছেন। এ ছাড়া প্রবন্ধ, শিশুসাহিত্য, নাটক এবং কথাসাহিত্যে অবদানের জন্য মোট ছয়টি পুরস্কার দেওয়া হচ্
২৬ ডিসেম্বর ২০২৪সূক্ষ্মচিন্তার খসড়াকে ধারণ করে শিল্প-সাহিত্য ভিত্তিক ছোটকাগজ ‘বামিহাল’। বগুড়ার সবুজ শ্যামল মায়াময় ‘বামিহাল’ গ্রামের নাম থেকেই এর নাম। ‘বামিহাল’ বিশ্বাস করে বাংলার আবহমান জীবন, মানুষ-প্রকৃতি কিংবা সুচিন্তার বিশ্বমুখী সূক্ষ্ম ভাবনার প্রকাশই আগামীর সবুজ-শ্যামল মানববসতি বিনির্মাণ করতে পারে...
২১ ডিসেম্বর ২০২৪