Ajker Patrika

ভোটের আগে অসংলগ্ন ট্রাম্প

আজকের পত্রিকা ডেস্ক
ভোটের আগে অসংলগ্ন ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বেখেয়ালি, সেটা আগা থেকেই সবার জানা। তবে দেশটির নির্বাচনের দুই সপ্তাহ আগে এসেও তিনি অসংলগ্ন, অশ্লীল, স্বৈরতান্ত্রিক বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন। এ থেকে অন্তত একটি ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে, তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে একটি ‘আনপ্রেডিক্টেবল’ সরকারের নেতৃত্ব দেবেন। কখন কী করে বসবেন, কারও জানার সুযোগ থাকবে না। 

ট্রাম্পের এমন বক্তব্যের সুযোগ নিচ্ছেন ডেমেক্রেটিক পার্টির নেতারা। দলটির প্রার্থী ও ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের নির্বাচনী প্রচারে এ বিষয়টি সামনে নিয়ে এসেছেন। এ ছাড়া ট্রাম্পের একের পর এক সাক্ষাৎকার বাতিলকে তাঁর অস্থির আচরণের দৃষ্টান্ত হিসেবে তুলে ধরছেন ডেমোক্র্যাট নেতারা। 

সম্প্রতি পেনসিলভানিয়ার এক সভায় কমলা হ্যারিসকে আক্রমণ করে ট্রাম্প বলেছেন, প্রেসিডেন্ট প্রার্থীদের মানসিক সক্ষমতার পরীক্ষা দেওয়া উচিত। বয়সের ওপর ভিত্তি করে নয়, প্রার্থী হতে ইচ্ছুক সবারই এটা করা উচিত। এ সময় নিজের বয়স ৮০ বা তার কাছাকাছিও নয় বলে দাবি করেন ৭৮ বছরের ট্রাম্প। তবে এ ধরনের মন্তব্যকে ব্যক্তিগত আক্রমণ হিসেবে উল্লেখ করে কমলা বলেছেন, এমন মন্তব্যের মধ্য দিয়ে প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের পদমর্যাদা ক্ষুণ্ন করেছেন ট্রাম্প। 

এর আগে কমলা হ্যারিসকে একজন বাজে ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে আখ্যায়িত করেন ট্রাম্প। তবে কমলা হ্যারিস মনে করেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প কোনো বিষয়ে সিরিয়াস নন এবং ক্ষমতায় এলে তিনি দেশকে ‘অত্যন্ত গুরুতর’ পরিণতির দিকে ঠেলে দিতে পারেন। দৃশ্যত তাঁর ওই মন্তব্যকেই এখন যৌক্তিক হিসেবে প্রমাণের পথে হাঁটছেন ট্রাম্প। যদিও ভোটের ফলাফল কী হবে, তা এখনো অনেকাংশে নির্ভর করছে বিভিন্ন রাজ্যের দোদুল্যমান ভোটারদের রায়ের ওপর। 

এবারের নির্বাচনে ট্রাম্প এখনো অত্যন্ত শক্তিশালী প্রার্থী। বিভিন্ন জরিপে উঠে এসেছে, আবাসন, দ্রব্যমূল্য ও অভিবাসন ইস্যুতে এখনো ভোটারদের একটি বড় অংশ তাঁর ওপর আস্থাশীল। দৃশ্যত বর্তমান ক্ষমতাসীনেরা এই বিষয়গুলোকে রাজনৈতিকভাবে শতভাগ মোকাবিলার ক্ষেত্রে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। 

কর্মকর্তারা বলছেন, বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মেয়াদের প্রথম দিকে ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতি ছিল অপেক্ষাকৃত ক্ষণস্থায়ী। ফলে লাখ লাখ মার্কিন নাগরিক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পরও সামগ্রিকভাবে দেশের অর্থনীতি সুস্থ ধারায় ছিল। তবে ট্রাম্পের ভোটাররা এখনো তাঁকে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থার প্রতি তাঁদের হতাশা কাটানোর জন্য উপযুক্ত প্রার্থী মনে করেন। 

ট্রাম্পের সাম্প্রতিক আচরণ বা কর্মকাণ্ডে ভোটাররা কীভাবে তাঁদের প্রতিক্রিয়া জানাবেন, সেটি তাঁদের ওপরই নির্ভর করবে। তবে তার প্রতিপক্ষ কমলা হ্যারিসের প্রচার শিবিরের পক্ষ থেকে ট্রাম্পের নানা দুর্বলতা পুরোপুরিভাবে কাজে লাগানো হচ্ছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম এমএসএনবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন কমলা হ্যারিস। গত রোববার দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টকে অবশ্যই একটি স্ট্যান্ডার্ডের হতে হবে। সেটি হবে এই দেশ ও পুরো বিশ্বের জন্য। 

কমলা হ্যারিস বলেন, ‘আপনি আমার প্রতিপক্ষের মধ্যে যা দেখছেন, সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের একজন সাবেক প্রেসিডেন্ট তাঁর নিজের অফিসকে হেয়প্রতিপন্ন করেছেন।’ কমলা হ্যারিসের রানিং মেট মিনেসোটার গভর্নর টিম ওয়ালজ শনিবার নেব্রাস্কায় বলেন, রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় সহনশীলতার অভাব রয়েছে। ২০১৬ সালের তুলনায় এবার তিনি আরও অনেক বেশি অযোগ্য। আরও বেশি বিভ্রান্তিতে রয়েছেন তিনি। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত