Ajker Patrika

ডা. মোহাম্মদ ইব্রাহিম

সম্পাদকীয়
ডা. মোহাম্মদ ইব্রাহিম

ডা. মোহাম্মদ ইব্রাহিম ছিলেন বাংলাদেশের চিকিৎসাসেবার একজন কিংবদন্তি পুরুষ। তাঁর মূল নাম শেখ আবু মোহাম্মদ ইব্রাহিম। ডা. ইব্রাহিমের ব্যক্তিগত উদ্যোগের সুফল যুগ যুগ ধরে ভোগ করছে সাধারণ মানুষ।

তিনি ১৯১১ সালের ৩১ ডিসেম্বর পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদের ভরতপুর ইউনিয়নের খাঁড়েরা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।

গ্রামের স্কুল থেকে প্রাইমারি শেষ করে মুর্শিদাবাদের এডওয়ার্ড হাইস্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন এবং কলকাতা ইসলামিয়া কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় পাস করেন। এরপর ১৯৩৮ সালে কলকাতা মেডিকেল কলেজ থেকে চূড়ান্ত মেধাতালিকায় স্থান পেয়ে এমবিবিএস পাস করেন। তাঁর কর্মজীবন শুরু হয় কলকাতা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।

দেশভাগের পর তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে চলে এসে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন হন তিনি। তারপর এমআরসিপি ডিগ্রি অর্জনের জন্য পাড়ি জমান লন্ডনের বিশ্বখ্যাত রয়েল কলেজ অব ফিজিশিয়ানে। সেখানে ডিগ্রি সম্পন্ন করে এফসিসিপি ডিগ্রির জন্য চলে যান যুক্তরাষ্ট্রে।

১৯৫০ সালে দেশে ফিরে এসে ডা. ইব্রাহিম ঢাকা মেডিকেল কলেজে ফিজিশিয়ান হিসেবে যোগ দেন। পঞ্চাশের দশকেই তিনি বুঝতে পেরেছিলেন, ডায়াবেটিস হতে যাচ্ছে এ দেশের মানুষের অন্যতম বড় শত্রু। ১৯৫৬ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি তাঁর উদ্যোগে মাত্র ৩৮০ স্কয়ার ফুটের একটি টিনের ঘরে ২৩ জন ডায়াবেটিক রোগী নিয়ে প্রতিষ্ঠা করেন পাকিস্তান ডায়াবেটিক সমিতি।

এরপর সত্তরের দশকেই তিনি প্রতিষ্ঠা করেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব রিহ্যাবিলিটেশন ইন ডায়াবেটিস, এন্ডোক্রাইন অ্যান্ড মেটাবলিক ডিজঅর্ডারস (বারডেম)। পাশাপাশি একাধারে তিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন বাংলাদেশ ফলিত পুষ্টিবিজ্ঞান গবেষণা ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং পুনর্বাসন ও কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র।

তিনি মন্ত্রীর পদমর্যাদায় স্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের রাষ্ট্রপতির উপদেষ্টা, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এশিয়া অঞ্চলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিক ম্যানেজমেন্ট বোর্ডের সদস্য পদে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৪ সালে তিনিই প্রথম চিকিৎসাবিদ হিসেবে জাতীয় অধ্যাপকের মর্যাদা পান। তাঁর সহধর্মিণী ছিলেন শিক্ষাবিদ ড. নীলিমা ইব্রাহিম।

ডা. মোহাম্মদ ইব্রাহিম ১৯৮৯ সালের ৬ সেপ্টেম্বর মৃত্যুবরণ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত