Ajker Patrika

মঞ্চে ফেলুদা

সম্পাদকীয়
মঞ্চে ফেলুদা

ফেলুদা করার ইচ্ছে জেগেছিল সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে দেখেই। সব্যসাচী চক্রবর্তীর জীবনে অন্যতম আইডল হলেন সৌমিত্র। সব্যসাচী প্রথম যে টিভি সিরিয়াল করেছিলেন গল্প বিচিত্রা নামে, তাতে সব্যসাচীর বাবার ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। আর মা হয়েছিলেন তৃপ্তি মিত্র।

সৌমিত্রের মতোই বামপন্থায় আস্থা সব্যসাচীর। কোনো সমাজে উন্নতি করতে হলে বামপন্থাই তার একমাত্র উপায় বলে মনে করেন তিনি। সৌমিত্রকে অনুসরণ করেন, সে কথা অকপটেই বলেন।

‘বাক্স রহস্য’ তৈরি করবেন সন্দীপ রায়, ডাক পড়ে সব্যসাচীর। মেকআপ টেস্টে থাকলেন সন্দীপ রায়, ললিতা রায় আর বিজয়া রায়। বেশ নার্ভাস হয়ে গিয়েছিলেন সব্যসাচী। কিন্তু বিজয়া রায় যখন বললেন, ‘ভালোই তো লাগছে’, তখন বুঝলেন, এ যাত্রা নতুন ফেলুদার নাম সব্যসাচী চক্রবর্তী। কিন্তু শুটিং শুরু হওয়ার পর সন্দীপ রায় বললেন, ‘ভালোই হয়েছে, বুঝলে। কিন্তু তুমি বড় গম্ভীর হয়ে সংলাপ বলছ। বাচ্চারা তোমাকে ভয় পাচ্ছে।’

এরপর সাধ্যমতো কণ্ঠটা মোলায়েম করে কথা বলার চেষ্টা করেছেন তিনি। টেলিভিশনে সব্যসাচীকে অনেকেই দেখেছেন, সেই তো শুরু। তারপর বড় পর্দায়ও ফেলুদার আনাগোনা।

কিন্তু মঞ্চনাটক হিসেবেও ফেলুদার কাহিনি হয়েছে এবং তাতে ফেলুদার ভূমিকায় অভিনয় করেছেন সব্যসাচী। মঞ্চে কোন নাটক করা যায়, ভাবছিলেন তাঁরা। সে সময় অরিন্দম গাঙ্গুলী বললেন, ‘ফেলুদার একটা কাহিনি করা যাক।’ কিন্তু কোনটা? ফেলুদার বেশির ভাগ কাহিনিই তো ট্রাভেলগ। অরিন্দমকে খুঁজে দেখতে বলা হলো, এমন কোনো গল্প, যাতে ভ্রমণ নেই।

খুঁজে পাওয়া গেল। ‘অপ্সরা থিয়েটারের মামলা’। ফেলুদা সিরিজের সবচেয়ে দুর্বল গল্প—সত্যজিৎ, সন্দীপ দুজনই এমনটা মনে করতেন। টিভি বা সিনেমায় এ গল্প চলবে না। কিন্তু মঞ্চে চলতে পারে। অনুমতি মিলল। অরিন্দম লিখলেন এবং সেই ফেলুদা কাহিনি এল কলকাতার মঞ্চে। শুধু কি এল? ১০২টি শো চলল দারুণভাবে। 

সূত্র: জাহীদ রেজা নূর, চোখের আলোয় ২, পৃষ্ঠা ১৩৮-১৩৯

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত