জসীমউদ্দীন
ফরিদপুর সেবা-সমিতির সভ্য হলেন জসীমউদ্দীন। শহরের বহু বাড়িতে গিয়ে রোগীর সেবা করে দিন কাটতে লাগল। রামকৃষ্ণ মিশনে বসে বহু বই পড়েছিলেন। এর মধ্যে বিদ্যাসাগরের জীবনীতে দেখেছেন কুলি হয়ে কত লোকের মোট বহন করেছেন বিদ্যাসাগর।
এরই মধ্যে একদিন বাড়ির সামনের রেলস্টেশনে দেখলেন এক বৃদ্ধ তাঁর মেয়েকে নিয়ে স্টেশনে নামলেন বড় একটা স্যুটকেস নিয়ে। ভদ্রলোক কিছুতেই তাঁর মালপত্র সামলে রাখতে পারছিলেন না। জসীমউদ্দীন তাঁদের কাছে গিয়ে বললেন, ‘বড় স্যুটকেসটি আমাকে দিন। আমি ঘোড়ার গাড়িতে পৌঁছে দিচ্ছি।’
ভদ্রলোক ইতস্তত করছিলেন। মেয়েটি বলল, ‘বাবা, দাও এঁর মাথায়। এঁরা মানুষ নয়, দেবতা।’
জসীমউদ্দীন মাথায় করে স্যুটকেসটি নিয়ে পৌঁছে দিলেন ঘোড়ার গাড়ির কাছে।
অন্য একদিন এক দরিদ্র বৃদ্ধ তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে গাড়ি থেকে নামলেন। স্টেশন থেকে শহরের পথ দুই মাইলের বেশি। ঘোড়ার গাড়িতে করে যাওয়ার মতো টাকা নেই তাঁদের। হেঁটেই যেতে হবে। এবারও জসীমউদ্দীন তাঁদের সাহায্য করতে চাইলেন।
মালপত্র মাথায় করে আগে আগে চলেছেন জসীম, পেছনে বৃদ্ধ-বৃদ্ধা। মাঝে মাঝে খানিক এগিয়ে তাঁদের জন্য অপেক্ষা করলেন জসীম। তারপর আবার একটু এগিয়ে গেলেন।
মুশকিল হলো, আলিপুরের মোড়ের কাছে এসে জসীমউদ্দীন দেখলেন, সামনেই তাঁর বাবা তিন-চারজন বন্ধুর সঙ্গে গল্প করতে করতে বাড়ি ফিরছেন। মাথায় করে পরের মোট বয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, সেটা দেখে ‘বাজান’ কী মনে করবেন ভেবে জসীমউদ্দীন দ্রুত একটি জঙ্গলে ঢুকে পড়লেন। বুড়া-বুড়ি তো মনে করলেন, ছেলেটা তাঁদের মোট নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে। তাই তাঁরা দুজনেই চিৎকার শুরু করলেন।
খুঁজতে গিয়ে জসীমকে দেখলেন স্বয়ং তাঁর বাবা। তিনি জানতে চাইলেন ব্যাপারখানা। সবকিছু শুনে পরিষ্কার হলো ব্যাপারটা। বাবা জসীমকে টানতে টানতে বাড়ি নিয়ে এলেন। বললেন, ‘পড়াশোনার নাম নেই, শুধু আজেবাজে কাজ করে সময় কাটাও!’
কিন্তু মনে মনে বাবা খুশি হয়েছিলেন ছেলের প্রতি।
সূত্র: জসীমউদ্দীন, জীবনকথা, পৃষ্ঠা ২৪৪-২৪৫
ফরিদপুর সেবা-সমিতির সভ্য হলেন জসীমউদ্দীন। শহরের বহু বাড়িতে গিয়ে রোগীর সেবা করে দিন কাটতে লাগল। রামকৃষ্ণ মিশনে বসে বহু বই পড়েছিলেন। এর মধ্যে বিদ্যাসাগরের জীবনীতে দেখেছেন কুলি হয়ে কত লোকের মোট বহন করেছেন বিদ্যাসাগর।
এরই মধ্যে একদিন বাড়ির সামনের রেলস্টেশনে দেখলেন এক বৃদ্ধ তাঁর মেয়েকে নিয়ে স্টেশনে নামলেন বড় একটা স্যুটকেস নিয়ে। ভদ্রলোক কিছুতেই তাঁর মালপত্র সামলে রাখতে পারছিলেন না। জসীমউদ্দীন তাঁদের কাছে গিয়ে বললেন, ‘বড় স্যুটকেসটি আমাকে দিন। আমি ঘোড়ার গাড়িতে পৌঁছে দিচ্ছি।’
ভদ্রলোক ইতস্তত করছিলেন। মেয়েটি বলল, ‘বাবা, দাও এঁর মাথায়। এঁরা মানুষ নয়, দেবতা।’
জসীমউদ্দীন মাথায় করে স্যুটকেসটি নিয়ে পৌঁছে দিলেন ঘোড়ার গাড়ির কাছে।
অন্য একদিন এক দরিদ্র বৃদ্ধ তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে গাড়ি থেকে নামলেন। স্টেশন থেকে শহরের পথ দুই মাইলের বেশি। ঘোড়ার গাড়িতে করে যাওয়ার মতো টাকা নেই তাঁদের। হেঁটেই যেতে হবে। এবারও জসীমউদ্দীন তাঁদের সাহায্য করতে চাইলেন।
মালপত্র মাথায় করে আগে আগে চলেছেন জসীম, পেছনে বৃদ্ধ-বৃদ্ধা। মাঝে মাঝে খানিক এগিয়ে তাঁদের জন্য অপেক্ষা করলেন জসীম। তারপর আবার একটু এগিয়ে গেলেন।
মুশকিল হলো, আলিপুরের মোড়ের কাছে এসে জসীমউদ্দীন দেখলেন, সামনেই তাঁর বাবা তিন-চারজন বন্ধুর সঙ্গে গল্প করতে করতে বাড়ি ফিরছেন। মাথায় করে পরের মোট বয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, সেটা দেখে ‘বাজান’ কী মনে করবেন ভেবে জসীমউদ্দীন দ্রুত একটি জঙ্গলে ঢুকে পড়লেন। বুড়া-বুড়ি তো মনে করলেন, ছেলেটা তাঁদের মোট নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে। তাই তাঁরা দুজনেই চিৎকার শুরু করলেন।
খুঁজতে গিয়ে জসীমকে দেখলেন স্বয়ং তাঁর বাবা। তিনি জানতে চাইলেন ব্যাপারখানা। সবকিছু শুনে পরিষ্কার হলো ব্যাপারটা। বাবা জসীমকে টানতে টানতে বাড়ি নিয়ে এলেন। বললেন, ‘পড়াশোনার নাম নেই, শুধু আজেবাজে কাজ করে সময় কাটাও!’
কিন্তু মনে মনে বাবা খুশি হয়েছিলেন ছেলের প্রতি।
সূত্র: জসীমউদ্দীন, জীবনকথা, পৃষ্ঠা ২৪৪-২৪৫
বন্ধুত্ব শুধু পারস্পরিক ভালোবাসা নয়, বরং এটি নির্ভরতা ও স্বতঃস্ফূর্ত আন্তসম্পর্কের এক জটিল বিন্যাস। নর্দান ইলিনয় ইউনিভার্সিটির মনোবিজ্ঞানী ও বন্ধুত্ববিষয়ক বিশেষজ্ঞ ড. সুজান ডেগস-হোয়াইট বলেন, বন্ধুত্বে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দুটি উপাদান হলো পারস্পরিক নির্ভরতা ও সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার ইচ্ছা।
১৬ ঘণ্টা আগে১৬৪৯ সালে যশোরের ফৌজদার হিসেবে নিযুক্ত হন বাংলার সুবেদার শাহ সুজার শ্যালকপুত্র মীর্জা সাফসি খান। কপোতাক্ষ নদের তীরে যে মীর্জানগর গ্রাম, সেটি কিন্তু তাঁরই নামানুসারে। সম্রাট আওরঙ্গজেবের আমলে ফৌজদার হন নুরল্লা খাঁ। তিনি এই গ্রামে বুড়িভদ্রা নদীর তীরে সুবিস্তৃত পরিখা খনন করে আট-দশ ফুট উঁচু...
৯ দিন আগেঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার গোরকই গ্রামে রয়েছে প্রাচীন এক মন্দির। গোরক্ষনাথ মন্দির বা গোরকই মন্দির নামেই এটি পরিচিত। মন্দির প্রাঙ্গণে তিনটি শিবমন্দির, একটি কালীমন্দির ও একটি নাথমন্দির ও নাথ আশ্রমের পাশাপাশি রয়েছে বড় বড় কালো পাথর দিয়ে নির্মিত রহস্যময় এক কূপ। কথিত আছে, গুপ্ত যুগ থেকে সেন...
১২ দিন আগেআর এক বছর পর ৪০-এর কোঠায় পৌঁছাবে বয়স। হঠাৎ পদোন্নতি হলো পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কাজ করা ক্যারেন উডসের। এখন থেকে ই-মেইল লিখতে হবে তাঁকে। কিন্তু তিনি তো নিরক্ষর। কীভাবে পড়তে-লিখতে হয় জানেন না। প্রথমে বেশ লজ্জায় পড়ে যান। সবাই জেনে ফেললে কী ভাববে! তবে, সেই লজ্জা-ভয় তাঁকে আটকে রাখেনি। বরং নতুন পথ...
১৬ দিন আগে