Ajker Patrika

সুই-সুতায় স্বাবলম্বী হচ্ছেন নারীরা

সাইফুল ইসলাম সানি, সখীপুর (টাঙ্গাইল) 
সুই-সুতায় স্বাবলম্বী হচ্ছেন নারীরা

বয়নশিল্পের নিরিখে টাঙ্গাইলের সুনাম আছে দেশব্যাপী। এখানকার শাড়ির খ্যাতি সে কথাই জানান দেয়। তবে এখন আর শুধু শাড়িই নয়, টাঙ্গাইলের বিভিন্ন এলাকায় নারীরা সূচিকর্ম করে সুনামের সঙ্গে জীবিকা নির্বাহ করছেন।

নারীদের এমনই কর্ম প্রচেষ্টার দেখা মিলবে টাঙ্গাইলের সখীপুরে গেলে। শখের বশে নয়; জীবনের তাগিদে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টায় নারীরা বিভিন্ন ধরনের হাতের কাজ করছেন। সখীপুর পৌরসভার কোনো কোনো বাড়িতে এককভাবে আবার কোথাও দল বেঁধে নারীরা রঙিন সুতা ও পুঁতি দিয়ে থ্রি-পিস কিংবা শাড়িতে নকশা করছেন, জামাকাপড় তৈরি ও বিভিন্ন ধরনের শো-পিস তৈরি করছেন। এসব পণ্য কেউ বাড়ির ছোট্ট দোকানে আবার কেউ কেউ অনলাইনেও বিক্রি করছেন। 

নারীদের এভাবে উৎপাদনমুখী করার পেছনে ভূমিকা রেখেছে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে নারীদের জন্য ইনকাম জেনারেটিং অ্যাকটিভিটিস বা আইজিএ প্রকল্প। এই প্রকল্পের আওতায় উপজেলার ৮৫০ জন নারী প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। ফ্যাশন ডিজাইন ও ক্রিস্টাল শো-পিস এই দুই ট্রেডে তিন মাসের প্রশিক্ষণ শেষে প্রত্যেক নারীকে ১২ হাজার টাকা করে প্রণোদনা দেওয়া হয়। যাঁরা প্রশিক্ষণ নিয়েছেন, তাঁরা এখন নিজ নিজ বাড়িতে নকশিকাঁথা সেলাই, বুটিক, হ্যান্ড পেইন্ট ও মোমবাতি তৈরির কাজ করছেন। এগুলো সমন্বয় করে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাও হয়েছেন অনেক নারী। আবার কেউ কেউ নিজ উদ্যোগে গ্রামীণ নারীদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন।

সুই-সুতা দিয়ে বিভিন্ন পণ্য তৈরি করছেন নারীরা।তেমনি একজন উদ্যোক্তা মধ্য ত্রিশ পেরোনো পারুল আক্তার। স্বামীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয়ে গেলে পারুল বাবার বাড়িতে চলে আসেন। এরপর প্রশিক্ষণ নিয়ে পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের পিচেরমাথা এলাকায় ছোট্ট একটি দোকান দেন। বিভিন্ন নকশার পোশাক, নকশিকাঁথা তৈরি ও বিক্রি করে এখন তিনি মাসে প্রায় ১৫ হাজার টাকা আয় করছেন। পাশাপাশি পারুল আক্তার একটি এনজিওর প্রশিক্ষক হিসেবে চাকরিও পেয়েছেন। সম্প্রতি মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন নিজের উপার্জন 
করা অর্থে।

সখীপুর পৌরসভার মন্দিরপাড়া এলাকার রাশেদা আক্তার ও সবিতা রানীও প্রশিক্ষণ নিয়েছেন আইজিএ প্রকল্পের অধীনে। তাঁরাও এখন মেয়েদের কামিজ, সালোয়ার, বিভিন্ন ধরনের ওয়াল হ্যাংগিং, ছবি, ভ্যানিটি ব্যাগ ও শো-পিস তৈরি করছেন। এতে মাসে তাঁদের আয় আট থেকে নয় হাজার টাকা। এই প্রকল্পের প্রশিক্ষণ শেষে ক্ষুদ্র নারী উদ্যোক্তা হয়েছেন ফারহানা হক শান্তা ও প্রিয়াঙ্কা। তাঁরা শিশুদের জন্য ব্লক, বুটিকের আকর্ষণীয় পোশাক তৈরি করছেন।

দল বেঁধে নকশি কাঁথা সেলাই করছেন গ্রামের নারীরাস্বল্প পরিসর ও সময়ে প্রশিক্ষণ শেষ করায় এ প্রকল্পের উন্নয়ন যথাযথ হবে না বলে মনে করেন উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা ফিরোজা আক্তার। তিনি জানান, আইজিএ প্রশিক্ষণ প্রকল্পের আওতায় পিছিয়ে পড়া গ্রামীণ নারীদের স্বাবলম্বী করা হচ্ছে। এতে অনেক নারী নিজেই উদ্যোক্তা হয়ে অর্থ উপার্জন করছেন। প্রকল্পটিকে আরও কার্যকর এবং আরও বেশি মানুষের কাছে নিয়ে যাওয়ার জন্য সময়সীমা বাড়ানোর আবেদন করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

বিবাহিতদের পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশ না করার প্রস্তাব

বন্ধুকে ছাত্রলীগ সাজিয়ে পুলিশে দিয়ে তাঁর প্রেমিকাকে ধর্ষণ করলেন ছাত্রদল নেতা

পেহেলগাম হামলা: ধরা খেয়ে গেল মোদির কাশ্মীর ন্যারেটিভ

পরিপাকতন্ত্রের ওষুধের পেছনেই মানুষের ব্যয় সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত