ফজলুল কবির
করোনা সাম্রাজ্যে আজ দুর্যোগের ঘনঘটা—এই একটা মাত্র বাক্য বারবার করে নিজস্ব সম্প্রচারমাধ্যমে প্রচার করছেন করোনারাজ। গত কয়েক দিন ধরে হুট করেই যেন তার বয়স বেড়ে গেল। তারুণ্যের প্রতীক যে লাল মুকুট, তার নানা প্রান্তে খয়েরি রংয়ের দেখাও মিলছে মাঝেমধ্যে। রাজা এখন মসনদে বসে কেবলই অতীতচারণ করেন, আর ভাবেন—কী দারুণ সময়ই না কাটছিল!
গত বছর শুরু হওয়া সাম্রাজ্য বিস্তার অভিযান বেশ ভালোই চলছিল। সঙ্গে ছিল নিজেদের মানোন্নয়নের তাগাদা। এ কাজে গোটা সাম্রাজ্যের প্রতিটি সদস্য এতটাই নিবেদিত ছিল যে, মানুষের নাভিশ্বাস উঠে পড়ছিল। মানুষ এই টিকা বানায়, তো করোনামহল নতুন ফর্মুলা বের করে নিজেদের বদলে নেয়। কত টিকা আশা জাগিয়ে অঙ্কুরেই শেষ হলো, সে ফিরিস্তি না হয় উহ্য থাকল।
করোনারাজ সেই সুদিনের কথা ভাবতে ভাবতে, যেই না মুচকি হাসলেন, অমনি এক অমাত্য ছুটতে ছুটতে এসে জানাল, ‘ও গাঁয়ে আর যাব না’ বলে প্রজা বিদ্রোহ এক নতুন দিকে মোড় নিয়েছে। করোনারাজ ভ্রু কুঁচকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে বললেন, ‘গাঁয়ে যেতে কে বলেছে, দেশের শহর–টহরে যেতে বল। আর এত গ্রামবিমুখ হলে তো হবে না বাছা।’ অমাত্য ফের বললেন—‘না। একটা চালু গানের লাইন ধার করে স্লোগান দিচ্ছে ওরা। কিন্তু গাঁ বলতে ওই দেশই বোঝাচ্ছে আরকি।’
রাজা আবার ভাবনায় পড়লেন। তা তিনি আর কতটা জোর করতে পারেন। কতটা আর অপমান নেওয়া যায়! কত দেশই তো দেখল তার প্রজারা। কিন্তু এমন কারবার দেখেনি কোথাও। লকডাউন দিলে লোকেরা লকডাউন দেখতে বেরোয়—এমন দেশও আছে আগে জানা ছিল না। গেলবার এটা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছেন করোনারাজ।
এবার হয়েছে আরেক যন্ত্রণা। নির্দেশনা। এই এক শব্দ। গুণীজনেরা তো আর এমনি এমনি বলে না—যায় দিন ভালো, আসে দিন খারাপ। কিন্তু তা যে এত খারাপ; কে জানত? গেলবার তবু একটা ব্যাপার ছিল। যেনতেন হোক একটা লকডাউন তো দিল। মানুষ না হয় মানেনি। মান–মুখ দুই তো বাঁচল অন্তত। কিন্তু এবার! প্রথমে বলা হলো—সন্ধ্যা ৬টার আগে গণপরিবহন ছাড়া সব চলবে। করোনাসমাজ বুঝল যে, ৬টার আগে শুধু রোড–ঘাটের দিকে নজর রাখলেই চলবে। কোনো গণপরিবহন বের হলেই হুট করে ঢুকে পড়তে হবে। অবশ্য এই নির্দেশনা মানাতেও করোনারাজকে কম জল ঘোলা করতে হয়নি।
কিন্তু এই দুর্যোগ কাটতে না কাটতেই এল নতুন নির্দেশনা—সন্ধ্যা ৬টার আগে গণপরিবহনও চলবে। অর্থাৎ, শান্তির স্বার্থেই এই সময়ে আক্রমণ–তালিকা থেকে গণপরিবহন বাদ দিতে হলো। প্রজাদের বুঝিয়ে–শুনিয়ে বহু কষ্টে এই দুর্যোগও কোনোমতে উৎরে যাওয়া গেল। কিন্তু সব সীমা অতিক্রম করে এখন এল নতুন নির্দেশনা—শপিং মলসহ সব দোকানপাট সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলবে। ‘আচ্ছা, সময়ের হিসাব রাখতে আলাদা দপ্তর পুষতে হবে দেখছি। সহ্যের একটা সীমা তো আছে, নাকি’—মনে মনেই গজরাতে থাকেন করোনারাজ। ভাবেন—‘তোমার যদি দেশ হয়, বাবা আমার তো সাম্রাজ্য। আন্দোলনের কথা আগে থেকে ভেবে একটা কিছু করলেই তো হয়।’
এখন এই নির্দেশনার যন্ত্রণায় করোনারাজ্যে তাকেও একের পর এক নির্দেশনা দিতে হচ্ছে। প্রজারা মানবে কেন? মানছে না। একের পর এক ধর্মঘটের খবর আসছে। মূল দাবি—পুরোদস্তুর আক্রমণ করতে না দিলে তারা নাকি ‘ও গাঁয়ে আর যাবে না’। করোনারাজ পড়েছেন মহাবিপাকে। নিজের মসনদের স্বার্থেই হামলার কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু করোনা হলেও তার তো একটা মন আছে। পুরো হামলার ঘোষণা দিলে প্রজারা কী থেকে কী করে, তার কী আর ঠিক আছে? ভাবতেই খারাপ লাগছে করোনারাজে। একটু অভিমানও যে হয় না, তা নয়। এ কেমন বঙ্গভূমি! ভাবতে ভাবতে সরিষা তেলের অভাবে বঙ্গদেশীয় দু নম্বরী স্যানিটাইজার মুকুটে মাখতে মাখতে ঘুমিয়ে পড়ার আগে শুধু বললেন—‘অগত্যা।’ তাই শুনে তীব্র হর্ষধ্বনী হলো প্রথমে দরবারে ও পরে রাজ্যজুড়ে। গভীর ঘুমে তলিয়ে যাওয়া করোনারাজ তার কিছুই টের পেলেন না।
করোনা সাম্রাজ্যে আজ দুর্যোগের ঘনঘটা—এই একটা মাত্র বাক্য বারবার করে নিজস্ব সম্প্রচারমাধ্যমে প্রচার করছেন করোনারাজ। গত কয়েক দিন ধরে হুট করেই যেন তার বয়স বেড়ে গেল। তারুণ্যের প্রতীক যে লাল মুকুট, তার নানা প্রান্তে খয়েরি রংয়ের দেখাও মিলছে মাঝেমধ্যে। রাজা এখন মসনদে বসে কেবলই অতীতচারণ করেন, আর ভাবেন—কী দারুণ সময়ই না কাটছিল!
গত বছর শুরু হওয়া সাম্রাজ্য বিস্তার অভিযান বেশ ভালোই চলছিল। সঙ্গে ছিল নিজেদের মানোন্নয়নের তাগাদা। এ কাজে গোটা সাম্রাজ্যের প্রতিটি সদস্য এতটাই নিবেদিত ছিল যে, মানুষের নাভিশ্বাস উঠে পড়ছিল। মানুষ এই টিকা বানায়, তো করোনামহল নতুন ফর্মুলা বের করে নিজেদের বদলে নেয়। কত টিকা আশা জাগিয়ে অঙ্কুরেই শেষ হলো, সে ফিরিস্তি না হয় উহ্য থাকল।
করোনারাজ সেই সুদিনের কথা ভাবতে ভাবতে, যেই না মুচকি হাসলেন, অমনি এক অমাত্য ছুটতে ছুটতে এসে জানাল, ‘ও গাঁয়ে আর যাব না’ বলে প্রজা বিদ্রোহ এক নতুন দিকে মোড় নিয়েছে। করোনারাজ ভ্রু কুঁচকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে বললেন, ‘গাঁয়ে যেতে কে বলেছে, দেশের শহর–টহরে যেতে বল। আর এত গ্রামবিমুখ হলে তো হবে না বাছা।’ অমাত্য ফের বললেন—‘না। একটা চালু গানের লাইন ধার করে স্লোগান দিচ্ছে ওরা। কিন্তু গাঁ বলতে ওই দেশই বোঝাচ্ছে আরকি।’
রাজা আবার ভাবনায় পড়লেন। তা তিনি আর কতটা জোর করতে পারেন। কতটা আর অপমান নেওয়া যায়! কত দেশই তো দেখল তার প্রজারা। কিন্তু এমন কারবার দেখেনি কোথাও। লকডাউন দিলে লোকেরা লকডাউন দেখতে বেরোয়—এমন দেশও আছে আগে জানা ছিল না। গেলবার এটা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছেন করোনারাজ।
এবার হয়েছে আরেক যন্ত্রণা। নির্দেশনা। এই এক শব্দ। গুণীজনেরা তো আর এমনি এমনি বলে না—যায় দিন ভালো, আসে দিন খারাপ। কিন্তু তা যে এত খারাপ; কে জানত? গেলবার তবু একটা ব্যাপার ছিল। যেনতেন হোক একটা লকডাউন তো দিল। মানুষ না হয় মানেনি। মান–মুখ দুই তো বাঁচল অন্তত। কিন্তু এবার! প্রথমে বলা হলো—সন্ধ্যা ৬টার আগে গণপরিবহন ছাড়া সব চলবে। করোনাসমাজ বুঝল যে, ৬টার আগে শুধু রোড–ঘাটের দিকে নজর রাখলেই চলবে। কোনো গণপরিবহন বের হলেই হুট করে ঢুকে পড়তে হবে। অবশ্য এই নির্দেশনা মানাতেও করোনারাজকে কম জল ঘোলা করতে হয়নি।
কিন্তু এই দুর্যোগ কাটতে না কাটতেই এল নতুন নির্দেশনা—সন্ধ্যা ৬টার আগে গণপরিবহনও চলবে। অর্থাৎ, শান্তির স্বার্থেই এই সময়ে আক্রমণ–তালিকা থেকে গণপরিবহন বাদ দিতে হলো। প্রজাদের বুঝিয়ে–শুনিয়ে বহু কষ্টে এই দুর্যোগও কোনোমতে উৎরে যাওয়া গেল। কিন্তু সব সীমা অতিক্রম করে এখন এল নতুন নির্দেশনা—শপিং মলসহ সব দোকানপাট সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলবে। ‘আচ্ছা, সময়ের হিসাব রাখতে আলাদা দপ্তর পুষতে হবে দেখছি। সহ্যের একটা সীমা তো আছে, নাকি’—মনে মনেই গজরাতে থাকেন করোনারাজ। ভাবেন—‘তোমার যদি দেশ হয়, বাবা আমার তো সাম্রাজ্য। আন্দোলনের কথা আগে থেকে ভেবে একটা কিছু করলেই তো হয়।’
এখন এই নির্দেশনার যন্ত্রণায় করোনারাজ্যে তাকেও একের পর এক নির্দেশনা দিতে হচ্ছে। প্রজারা মানবে কেন? মানছে না। একের পর এক ধর্মঘটের খবর আসছে। মূল দাবি—পুরোদস্তুর আক্রমণ করতে না দিলে তারা নাকি ‘ও গাঁয়ে আর যাবে না’। করোনারাজ পড়েছেন মহাবিপাকে। নিজের মসনদের স্বার্থেই হামলার কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু করোনা হলেও তার তো একটা মন আছে। পুরো হামলার ঘোষণা দিলে প্রজারা কী থেকে কী করে, তার কী আর ঠিক আছে? ভাবতেই খারাপ লাগছে করোনারাজে। একটু অভিমানও যে হয় না, তা নয়। এ কেমন বঙ্গভূমি! ভাবতে ভাবতে সরিষা তেলের অভাবে বঙ্গদেশীয় দু নম্বরী স্যানিটাইজার মুকুটে মাখতে মাখতে ঘুমিয়ে পড়ার আগে শুধু বললেন—‘অগত্যা।’ তাই শুনে তীব্র হর্ষধ্বনী হলো প্রথমে দরবারে ও পরে রাজ্যজুড়ে। গভীর ঘুমে তলিয়ে যাওয়া করোনারাজ তার কিছুই টের পেলেন না।
সাপের কামড়ে মানুষ মারা যাবে—এ তো চিরচেনা খবর! কিন্তু এবার খবর উল্টো। বিহারের এক প্রত্যন্ত গ্রামে ১ বছরের এক শিশু কামড়ে মেরে ফেলেছে বিষধর গোখরোকে! চোখ কপালে তুলে দেওয়া এই ঘটনা ঘটেছে রাজ্যের পশ্চিম চম্পারণ জেলার মোহাচ্ছি বাংকটওয়া গ্রামে। স্থানীয়রা বলছেন, এমন ঘটনা তাঁরা জীবনে কখনো দেখেননি—শুধু সিনেমাতে
১ ঘণ্টা আগে‘নির্ভীক’ শব্দটা অনেকেই গর্বের সঙ্গে ব্যবহার করেন। কিন্তু মানুষ সত্যিকার অর্থে পুরোপুরি নির্ভীক নয়। জন্মগতভাবে মানুষের ভয় খুব সীমিত—মাত্র দুটি। গবেষণা বলছে, মানুষ জন্মগতভাবে যেসব ভয় নিয়ে আসে, তার মধ্যে রয়েছে উঁচু থেকে পড়ে যাওয়ার ভয় এবং বিকট শব্দে চমকে ওঠা।
১১ ঘণ্টা আগেবেশির ভাগ বিড়ালপ্রেমীই আতঙ্কে থাকেন, কখন তাদের পোষা বিড়াল কোনো ইঁদুর বা পাখি শিকার করে বাসায় নিয়ে আসে। তবে নিউজিল্যান্ডের অকল্যান্ড শহরের এক পরিবারের বিড়ালের কর্মকাণ্ড এই সাধারণ দুশ্চিন্তার চেয়েও ভয়াবহ। কারণ, তাদের ১৫ মাস বয়সী বিড়ালটি একা পুরো এলাকায় চুরির রাজত্ব কায়েম করেছে। পুরো এলাকার অপরাধ জগতে
১৯ ঘণ্টা আগেভারতের মধ্যপ্রদেশের জব্বলপুরে এক নাটকীয় দৃশ্যের অবতারণা হয়েছিল। মাঝ রাস্তায় দুই ঘোড়ার লড়াইয়ে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের সৃষ্টি হয়। এই তাণ্ডবের মধ্যে একটি ঘোড়া একটি অটো রিকশার ওপর লাফিয়ে পড়ে। এতে দুজন গুরুতর আহত হন। এরপর ঘোড়াটি প্রায় ২০ মিনিট রিকশার ভেতরে আটকে ছিল।
৩ দিন আগে