নদীভাঙন

মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার বরাইদ ইউনিয়নের খলিশা ডহরা আশ্রয়ণ প্রকল্পের পাশেই সুজাদ আলীর বাড়ি। নদীভাঙনে ঘরবাড়ি হারিয়ে দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে এক আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে বসবাস করছেন তিনি। এরপরও তিনি ওই আশ্রয়ণ প্রকল্পে কোনো ঘর পাননি।

চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে ১৪২ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের ২০-২৫টি অংশে ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত সোমবার সারা দিনের বৃষ্টিতে জোয়ারের পানি বেড়ে বেড়িবাঁধে এই ভাঙন দেখা দেয়...

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে নদীতে পানি অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় খুলনার দাকোপে ওয়াপদা বেড়িবাঁধের ১৫টি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। শিগগিরই এই ভাঙনগুলোর সংস্কার করা না হলে যে কোনো সময় বেড়িবাঁধ ভেঙে পানিতে প্লাবিত হতে পারে...

বঙ্গোপসাগরের ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে টানা বৃষ্টিতে মানিকগঞ্জের ঘিওরে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। গতকাল সোমবার সকাল থেকেই শুরু হওয়া বৃষ্টিতে ঘিওরের তিনটি নদীর পানি বাড়ার পাশাপাশি পাড়ের ভাঙন বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানিয়েছেন তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দারা। তা ছাড়া বৃষ্টিতে চলতি রবিশস্যের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা কর

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে অসময়ে ঝিনাই নদে (স্থানীয় নাম বউমরা) ভাঙন শুরু হয়েছে। নতুন করে নদের ভাঙনে পাকা রাস্তা, ফসলি জমি, ব্যবসাকেন্দ্র ও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঝুঁকির মুখে

লক্ষ্মীপুর কমলনগরে মেঘনা নদীর ভাঙনে ভিটেমাটি হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন সেখানকার বেশ কয়েকজন বাসিন্দা। তাদের একটাই দাবি, এলাকায় টেকসই বাঁধ নির্মাণ। ভাঙনরোধে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন তারা। 

সিরাজগঞ্জের চৌহালীতে যমুনা নদীর ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। ভাঙনে চাঁদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি ভবন পুরোপুরি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। আরেকটি ভবন ভাঙনের মুখে রয়েছে। ভবনটির অধিকাংশ নদীর পাড়ে ঝুলে আছে...

অসময়ে নদীর পানি বাড়তে থাকায় মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার বুক চিরে বয়ে যাওয়া ইছামতী, পুরাতন ধলেশ্বরী ও কালীগঙ্গা নদী পাড়ের মানুষজনের মাঝে দেখা দিয়েছে ভাঙনের আতঙ্ক। 

‘একটা ঘর নদীত গ্যাছে, আর একটা কিনারে দাঁড়ায় আছে। যেকোনো সময় হেইটাও যাইব। ঘর সরায় যেইহানে যামু হেই জমিতেও পানি। কই যামু, যাওনের জায়গা তো নাই। যে ভাঙনি ধরে, কোনো বুদ্ধি পাওয়া যায় না।’ কথাগুলো বলেন ব্রহ্মপুত্র নদে ভিটেবাড়ি হারাতে বসা

মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার পয়লা ইউনিয়নের বড় কুষ্টিয়া এলাকার ভাঙনকবলিত রাস্তাটির সংস্কারকাজ অবশেষে শুরু হয়েছে।  গতকাল শনিবার সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলা এলজিইডির কর্মকর্তাদের তত্ত্বাবধানে রাস্তাটির গর্ত ভরাটের কাজ চলছে।

খুলনার দাকোপ খেয়াঘাটটি যানবাহন ও জনসাধারণ চলাচলের অনুপযোগী হয়েছে পড়েছে। বিশেষ করে নদীভাঙনের কারণে ঘাটের রাস্তাটি ঢাকি নদীতে বিলীন হওয়ায় এমন দুর্ভোগে পড়েছে ৫ ইউনিয়নের হাজারো মানুষ।

বরিশালের মুলাদীতে মাত্র ১ কিলোমিটার নদীশাসন না হওয়ায় ভাঙনের ঝুঁকিতে পড়েছে সফিপুর ইউনিয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ব্রজমোহন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। আর ১০ গজ নদী ভাঙলেই হারিয়ে যাবে এই প্রতিষ্ঠান দুটি।

বরিশালের মুলাদিতে জয়ন্তী নদীর ভাঙনের ফলে হুমকিতে পড়েছে সফিপুর ইউনিয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়। সেই সঙ্গে বিলীনের পথে একই অবস্থানে থাকা আরেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ব্রজমোহন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। আর মাত্র দশ গজ ভাঙলেই তলিয়ে যাবে বিদ্যালয় দুটি...

পদ্মার ভাঙনে দীর্ঘ এক মাস পরও রাজবাড়ীর গোয়ালন্দের দৌলতদিয়ার ৫ নম্বর ঘাটটি চালু নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। এই ঘাটকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা হোটেল, মুদিদোকান, ওষুধের দোকানের ব্যবসায়ীরাসহ কর্মহীন হয়ে পড়েছেন শতাধিক মানুষ।

চলতি বছরের বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই প্রমত্তা যমুনা নদীর দুই পাড়ের ভাঙন মানুষকে আতঙ্কিত করে তুলেছে। নদীতীরবর্তী জেলার পাঁচটি উপজেলার শত শত ঘরবাড়ি, বসতভিটা, রাস্তাঘাট, স্কুল-কলেজ, মসজিদ-মাদ্রাসা, সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা ইতিমধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের সিমনা থেকে বিজয়নগর উপজেলার পত্তন ইউনিয়নের সিমনা পর্যন্ত ‘শেখ হাসিনা সড়ক’-এর নির্মাণকাজ এখন শেষ পর্যায়ে। বর্ষাকালে ভাঙনরোধে সড়কের পাশে বসানো হয়েছে সিসি ব্লক। সড়কের তিনটি সেতুর সব কটিরই নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে।

গড়াই নদের ভাঙনের কবলে পড়েছে ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার ৭ নম্বর হাকিমপুর ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম। অনেকের বসতবাড়ি ইতিমধ্যে বিলীন হয়ে গেছে। নতুন করে ঝুঁকির মুখে রয়েছে গুচ্ছগ্রাম ও আশ্রয়ণ প্রকল্পের অনেক বাড়ি। ঝুঁকিতে রয়েছে এসব গ্রামের শত শত বসতবাড়িও।