অন্তর্বর্তী সরকারের বাজেট

বাজেট প্রস্তাবে তিনি বলেন, ‘২০২৫-২৬ অর্থবছরে মোট ৫ লাখ ৬৪ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আয়ের প্রস্তাব করছি, যা জিডিপির ৯ শতাংশ। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মাধ্যমে ৪ লাখ ৯৯ হাজার কোটি টাকা এবং অন্যান্য উৎস থেকে ৬৫ হাজার কোটি টাকা সংগ্রহ করার প্রস্তাব করছি।’

২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে দেশের কর-জিডিপি অনুপাত বৃদ্ধি এবং একটি আদর্শ ভ্যাট ব্যবস্থা প্রবর্তনের লক্ষ্যে সরকার কিছু নির্দিষ্ট পণ্য ও সেবার ওপর মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) হার বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে। অর্থ উপদেষ্টা আজ সোমবার বাজেট বক্তৃতায় এই পরিবর্তনের কথা জানান।

আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের পরিবার এবং আহতদের জন্য ভাতা, চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের জন্য ৪০৫ কোটি ২০ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখার প্রস্তাব করেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। আজ সোমবার বিকেলে প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপনকালে তিনি এ কথা বলেন।

আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে শিক্ষা খাতে মাত্র ৯৩৪ কোটি টাকা বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে। এর ফলে নতুন বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে ৯৫ হাজার ৬৪৪ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে বরাদ্দ ছিল ৯৪ হাজার ৭১০ কোটি টাকা।

২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। আজ সোমবার বেলা ৩টায় তিনি নতুন অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন শুরু করেন। সংসদ না থাকায় তাঁর বাজেট বক্তৃতা বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারে সম্প্রচার করা হচ্ছে।

অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ তাঁর বাজেট বক্তব্যে বলেন, প্রস্তাবিত ২০২৫-২৬ অর্থবছরের ৭ লাখ ৮৯ হাজার ৯৯৯ কোটি টাকার বাজেটে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করছি।

আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরে নারী উদ্যোক্তাদের জন্য ১২৫ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। আজ সোমবার অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপনায় এ তথ্য জানানো হয়।

দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতির রেখায় সাময়িক ওঠানামা থাকলেও মোটের ওপর তা জনজীবনকে স্বস্তি দিচ্ছে না। সরকার নিত্যপণ্যের ব্যবসায়ীদের একের পর এক সুবিধা দিলেও এর সুফল কাঙ্ক্ষিতভাবে ভোক্তার হাতে পৌঁছায়নি। আইনশৃঙ্খলার অবনতি এবং অবকাঠামোগত দুর্বলতা ব্যবসার পরিবেশকে করেছে নাজুক।

অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ ও রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার মধ্যে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব করছে অন্তর্বর্তী সরকার। চলতি বছরের তুলনায় এই বাজেট আকারে কিছুটা ছোট হলেও, জনস্বস্তির বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে বেশ কয়েকটি খাতে ভ্যাট ও আবগারি শুল্ক প্রত্যাহারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

স্বাধীনতা-পরবর্তী বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত মোট ১৩ মন্ত্রী বা সমমর্যাদার ব্যক্তি জাতীয় বাজেট উপস্থাপনের দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁদের হাত ধরে এসেছে ৫৫টি বাজেট। আজ সোমবার অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ দেশের ৫৬তম বাজেট ঘোষণা করবেন। এর মধ্য দিয়ে তিনি হবেন বাজেট পেশকারী ১৪তম ব্যক্তি।

বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর এই প্রথম বাজেটের আকার আগের বছরের তুলনায় কমেছে। দেশে এবার ৫৫তম বারের মতো বাজেট উপস্থাপন করা হচ্ছে। এবারে আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করা হতে পারে। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, মূল্যস্ফীতি কমানো, ব্যবসা-বাণিজ্য সহজ

আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করা হতে পারে। আগামীকাল সোমবার অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ আগামী অর্থবছরের জাতীয় বাজেট ঘোষণা করবেন। কর্মসংস্থান সৃষ্টি, মূল্যস্ফীতি কমানো, ব্যবসা-বাণিজ্য সহজ করা, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা, আর্থিক শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনাসহ বেশ কিছু

২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে বিভিন্ন আয়কর বাড়ানোর সঙ্গে স্থানীয় শিল্পে মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট সুবিধা প্রত্যাহার করা হচ্ছে। দেশীয় অনেক শিল্পে কর অব্যাহতি সুবিধাও তুলে নেওয়া হচ্ছে। ফলে উৎপাদন খাতে চাপ বাড়বে।

২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট আসছে এমন এক সময়, যখন অর্থনীতি আছে একযোগে চাপ, সংকট এবং শর্তের ঘূর্ণাবর্তে। রাজস্ব আয় কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় না পৌঁছানো, বিনিয়োগে স্থবিরতা ও কর্মসংস্থানের সীমাবদ্ধতা এখন সরকারের নীতিনির্ধারকদের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ।