Ajker Patrika

ইউটিউবে জনপ্রিয় গেমার পিউডিপাই উইন্ডোজ ছেড়ে লিনাক্সে কেন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ১৬: ৩৮
পিউডিপাই তার ভিডিওতে লিনাক্স ব্যবহার শুরুর কারণগুলোও তুলে ধরেছেন। ছবি: সংগৃহীত
পিউডিপাই তার ভিডিওতে লিনাক্স ব্যবহার শুরুর কারণগুলোও তুলে ধরেছেন। ছবি: সংগৃহীত

সুইডিশ ইউটিউবার ফেলিক্স আর্ভিড উলফ শেলবার্গ, তিনি পিউডিপাই নামেই বেশি পরিচিত। মূলত গেমিং ভিডিওর জন্য তিনি বিখ্যাত। ইউটিউবে ফেলিক্সের জনপ্রিয়তা এবং তাঁর প্রতি গণমাধ্যমের মনোযোগ তাঁকে অন্যতম উল্লেখযোগ্য অনলাইন ব্যক্তিত্ব এবং কনটেন্ট ক্রিয়েটরে পরিণত করেছে। বর্তমানে তাঁর ইউটিউব চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবার ১১০ মিলিয়ন।

সম্প্রতি এক ভিডিওতে পিউডিপাই জানিয়েছেন, ২০২৫ সালের শুরুতে তিনি ডেস্কটপে ওপেনসোর্স অপারেটিং সিস্টেম লিনাক্স ইনস্টল করেন। গেমার হয়েও মাইক্রোসফটের উইন্ডোজ বাদ দিয়ে প্রথমে লিনাক্স মিন্ট (লিনাক্সের একটি জনপ্রিয় সংস্করণ) এবং আর্চ লিনাক্সের (কমিউনিটি পরিচালিত লিনাক্স সংস্করণ) সঙ্গে হাইপারল্যান্ড টাইলিং উইন্ডো ম্যানেজার ব্যবহার শুরু করেন।

লিনাক্সের একটি বড় সীমাবদ্ধতা হলো, এই অপারেটিং সিস্টেমের জন্য কম্পিউটার গেমের সংখ্যা খুবই সীমিত। এ ছাড়া জনপ্রিয় গ্রাফিকস কার্ডের জন্য উপযুক্ত ড্রাইভারও পাওয়া যায় না।

এরপরও পিউডিপাইয়ের মতো গেমার কেন উইন্ডোজ ছেড়ে লিনাক্স ব্যবহার শুরু করলেন? সেটির জবাব তাঁর ভিডিওতে তুলে ধরেছেন পিউডিপাই:

ব্যক্তিগত গোপনীয়তা নিয়ে উদ্বেগ

উইন্ডোজ ব্যবহার থেকে সরে যাওয়ার কারণ হিসেবে ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষার উদ্বেগকেই উল্লেখ করেছেন পিউডিপাই। তিনি বলছেন, লিনাক্স যেহেতু ওপেনসোর্স, এটি ব্যবহারকারীকে কোড দেখার সুযোগ দেয়, ফলে তারা প্রোপ্রায়েটরি টেলিমেট্রি (যা ব্যবহারকারীর তথ্য সংগ্রহ করে) এড়াতে পারে। এই সুবিধা ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষায় সহায়ক। যেখানে ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষা ও গোপনীয়তা এখন বেশির ভাগ মানুষের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

লিনাক্সে অনন্য অভিজ্ঞতা

লিনাক্সে একটি মসৃণ এবং আরও কাস্টমাইজ যোগ্য অভিজ্ঞতা উপভোগ করার কথা উল্লেখ করেছেন পিউডিপাই। ব্যবহারকারী-বান্ধব এবং স্থিতিশীল (স্ট্যাবল) হওয়ার কারণে লিনাক্স মিন্ট ছিল তাঁর প্রথম পছন্দ। তবে আর্চ লিনাক্স তাঁকে আরও বেশি কাস্টমাইজেশনের সুযোগ দিয়েছে।

গেমিং এবং পারফরম্যান্স

লিনাক্স এখন গেমিংয়ের জন্য অনেক বেশি কার্যকর হয়ে উঠেছে, বিশেষ করে স্টিমের প্রোটন এবং স্টিম ডেক টুলের সাহায্যে। পিউডিপাই গেম খেলতে ও তা নিয়ে কনটেন্ট তৈরি করতে পছন্দ করেন। তাই লিনাক্সে গেম খেলার সুযোগ তাঁর জন্য বড় বিষয়। কারণ এর আগে লিনাক্সে সেভাবে গেমিংয়ের সুযোগ ছিল না। তবে বর্তমানে লিনাক্সের মাধ্যমে পিউডিপাই তাঁর গেম খেলার চাহিদা ভালোভাবে পূরণ করতে পারছেন।

ব্যক্তিগত চ্যালেঞ্জ ও কৌতূহল

পিউডিপাই সব সময় নতুন কিছু শিখতে আগ্রহী আর বিভিন্ন শখে গভীরভাবে জড়িয়ে পড়ার ইতিহাসও তাঁর আছে—যেমন পেইন্টিং বা রক ক্লাইম্বিং। আর্চ লিনাক্স ব্যবহার শুরু করাও তাঁর এমন এক নতুন চ্যালেঞ্জ। কারণ আর্চ লিনাক্স ব্যবহার করতে কিছুটা প্রযুক্তিগত জ্ঞান প্রয়োজন। তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে দেখা যায়, তিনি জিএসএইচ (zsh), কিটি টার্মিনাল (টার্মিনাল ইম্যুলেটর) ও হাইপারল্যান্ডের মতো কম্পোজিটর টুল ব্যবহার করছেন। এতে বোঝা যায়, তিনি লিনাক্স সেটআপ নিজের মতো করে কাস্টমাইজ করতে সময় ও মনোযোগ দিয়েছেন।

উইন্ডোজ নিয়ে অসন্তুষ্টি

অনেক ব্যবহারকারীর মতো পিউডিপাইও উইন্ডোজ, বিশেষ করে উইন্ডোজ ১১–এর ব্যক্তিগত গোপনীয়তা সমস্যা, অতিরিক্ত অপ্রয়োজনীয় সফটওয়্যার (ব্লোটওয়্যার) এবং ব্যবহারের অভিজ্ঞতা নিয়ে হতাশ হতে পারেন। বিভিন্ন ফোরাম ও সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর মন্তব্যগুলো ইঙ্গিত দেয় যে, তিনি মাইক্রোসফটের বর্তমান নীতিমালা নিয়ে অসন্তুষ্ট এবং এ জন্যই লিনাক্স ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

পিউডিপাইকে প্রথম গত ফেব্রুয়ারিতে একটি গেমিং পিসি তৈরির ভিডিওতে লিনাক্স মিন্ট ব্যবহার করতে দেখা যায়, তাঁর সেসময়ের ভিডিওতে শুধু মিন্টের টাস্কবার দেখা দেখা যায়। এরপর মার্চের মধ্যে তিনি আরও উন্নত ও কাস্টমাইজযোগ্য আর্চ লিনাক্সে চলে যান, যেখানে হাইপারল্যান্ড উইন্ডো ম্যানেজার ব্যবহার করছেন।

পিউডিপাইয়ের লিনাক্স সেটআপ। ছবি: ইউটিউব
পিউডিপাইয়ের লিনাক্স সেটআপ। ছবি: ইউটিউব

২০২৫ কি তাহলে লিনাক্স ডেস্কটপের বছর!

‘লিনাক্স ডেস্কটপের বছর’ বলতে লিনাক্স ব্যবহারকারীদের মধ্যে প্রচলিত একটি মিম বোঝায়। এটি সেই সময়কে ইঙ্গিত করে যখন লিনাক্স মূলধারার ডেস্কটপ অপারেটিং সিস্টেম হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে উঠবে। যদিও এই কথা অনেক বছর ধরেই অনেকে বলে আসছে তবে, ২০২৫ সালে পিউডিপাইয়ের মতো জনপ্রিয় একজন ইউটিউবারের লিনাক্স ব্যবহার এই আলোচনাকে নতুন করে উসকে দিয়েছে।

২০২৫ সালকে ‘লিনাক্স ডেস্কটপের বছর’ হিসেবে সমর্থন করেছেন অনেকেই। তাদের যুক্তিগুলো হলো—

পিউডিপায়ের প্রভাব: ১১০ মিলিয়নেরও বেশি ইউটিউব সাবস্ক্রাইবার নিয়ে বিশাল প্রভাবশালী ব্যক্তি পিউডিপাই। তাই তিনি যখন লিনাক্স মিন্ট এবং পরে আর্চ লিনাক্স ব্যবহার শুরু করেন, তখন তা প্রযুক্তি জগতে বেশ উত্তেজনা সৃষ্টি করে। তাঁর অনেক ভক্তই তরুণ এবং প্রযুক্তি নিয়ে আগ্রহী। ফলে উইন্ডোজের পরিবর্তে তাঁর লিনাক্সের ব্যবহার অনেককে উৎসাহ দিতে পারে। এমনকি সামাজিক মাধ্যমে অনেকেই এটিকে ‘টাইমলাইন বদলে দেওয়ার’ মুহূর্ত হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

গেমিংয়ের উন্নতি

স্টিম প্রোটন প্রযুক্তির মাধ্যমে লিনাক্সে গেম খেলা এখন অনেক সহজ ও কার্যকর হয়েছে। এর মাধ্যমে এখন লিনাক্সে হাজার হাজার উইন্ডোজ গেম চালানো সম্ভব হচ্ছে। একই সঙ্গে, গেমিং জগতে লিনাক্সের অবস্থানকে আরও শক্ত করেছে লিনাক্স-ভিত্তিক অপারেটিং সিস্টেমে চলা স্টিম ডেকও। পিউডিপাই এই সক্ষমতাগুলো তাঁর বিশাল দর্শকগোষ্ঠীর সামনে তুলে ধরছেন।

উইন্ডোজের সমস্যা

উইন্ডোজ ১১–এর গোপনীয়তা লঙ্ঘন, জোরপূর্বক আপডেট এবং অতিরিক্ত অপ্রয়োজনীয় সফটওয়্যারের কারণে অনেক ব্যবহারকারী বিকল্প খুঁজতে বাধ্য হচ্ছেন। বিভিন্ন ফোরাম পোস্টে বলা হয়েছে, অনেক সময় লিনাক্সের প্রতি আগ্রহ লিনাক্সের গুণের চেয়ে বরং উইন্ডোজের দুর্বলতা থেকেই তৈরি হয়।

সাংস্কৃতিক প্রভাব

সোশ্যাল মিডিয়া এক্স এবং রেডিট–এর অনেক পোস্টে ২০২৫ সালকে এক ধরনের ‘লিনাক্স সিটকম’ হিসেবে ব্যাখ্যা করছে। এসব প্ল্যাটফর্মে পিউডিপাইয়ের লিনাক্স ব্যবহার, হাইপারল্যান্ডের জনপ্রিয়তা এবং লিনাক্স কার্নেল নিয়ে বিতর্ক মিলিয়ে এক অনন্য প্রযুক্তিগত সংস্কৃতি তৈরি করেছে। পিউডিপাইয়ের মতো একজন জনপ্রিয় সেলিব্রিটি লিনাক্স ব্যবহার শুরু করায় এটি অনেকের চোখে আকর্ষণীয় হয়ে উঠছে।

লিনাক্স বিরোধী যুক্তি:

লিনাক্সের সীমাবদ্ধতা: পিউডিপাইয়ের মতো প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব লিনাক্স ব্যবহার শুরু করলেও, সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য লিনাক্স এখনো কিছুটা জটিল। বিশেষ করে আর্চ লিনাক্স একেবারে নতুন ব্যবহারকারীদের জন্য উপযুক্ত নয়। এমনকি লিনাক্স মিন্টের মতো সহজ ডিস্ট্রিবিউশন ব্যবহারেও উইন্ডোজ বা ম্যাকের তুলনায় কিছুটা বেশি প্রযুক্তিগত জ্ঞানের প্রয়োজন হয়। লিনাক্সের ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতার জন্য সহজ সংস্করণ এবং প্রি-ইনস্টল করা লিনাক্স ল্যাপটপের প্রয়োজন।

বর্তমানে লিনাক্স ডেস্কটপ অপারেটিং সিস্টেমের মার্কেট শেয়ার এখনো ৫ শতাংশের নিচে, যেখানে উইন্ডোজ প্রায় ৭০ শতাংশ এবং ম্যাকওএস প্রায় ১৫ শতাংশ দখল করে আছে। অতীতে বহুবার ‘লিনাক্স ডেস্কটপের বছর’ আসবে বলে বলা হয়েছে, তবে তা কখনো পুরোপুরি বাস্তবে পরিণত হয়নি। তাই পিউডিপাইয়ের এই পরিবর্তন গুরুত্বপূর্ণ হলেও, তা পুরো বিশ্বের ডেস্কটপ ব্যবহারকারীদের আচরণ বদলে দেবে—এমনটা এখনো নিশ্চিত ভাবে বলা যায়। ।

করপোরেট এবং ইকোসিস্টেম বাধা: ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং স্কুলগুলো মূলত উইন্ডোজ বা ম্যাকওএস ব্যবহার করে এবং অনেক গুরুত্বপূর্ণ অ্যাপ্লিকেশন (যেমন মাইক্রোসফট অফিস, অ্যাডোবি স্যুট) লিনাক্স সমর্থন করে না।

গেমিংয়ের সীমাবদ্ধতা: যদিও লিনাক্স গেমিং অভিজ্ঞতা আগের চেয়ে উন্নত হলেও কিছু অ্যান্টি-চিট সিস্টেমসহ গেম ভালোভাবে খেলা যায় না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন: অভিযুক্ত গৃহকর্মীর আসল নাম-পরিচয় শনাক্ত

ইতালির লিওনার্দো এসপিএ থেকে জঙ্গি বিমান কিনছে বাংলাদেশ

ভারত যেন হুঁশে থাকে, এবার পাল্টা আঘাত হবে দ্রুত ও মারাত্মক—পাকিস্তানের সিডিএফ হয়েই আসিম মুনিরের গর্জন

দেড় বছরে ১০ বার থমকে গেছে মেট্রোরেল চলাচল

সাবেক সেনা কর্মকর্তার কাছে দুঃখ প্রকাশ করলেন তারেক রহমান

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভারতে ১৭.৫ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে মাইক্রোসফট

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
মাইক্রোসফটের প্রধান নির্বাহী সত্য নাদেলা আজ মঙ্গলবার নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ছবি: এক্সে
মাইক্রোসফটের প্রধান নির্বাহী সত্য নাদেলা আজ মঙ্গলবার নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ছবি: এক্সে

আগামী চার বছরে ভারতে ১৭ দশমিক ৫ বিলিয়ন বা ১ হাজার ৭৫০ কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে মাইক্রোসফট। এটি এশিয়ায় মাইক্রোসফটের ইতিহাসে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ। ভারতের ক্লাউড ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) অবকাঠামো উন্নয়নে এই অর্থ ব্যয় করা হবে।

আজ মঙ্গলবার মাইক্রোসফটের প্রধান নির্বাহী সত্য নাদেলা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সাক্ষাতের পর এক্সে এ তথ্য জানান। সত্য নাদেলা বলেন, ভারতের ‘এআই ভবিষ্যতের জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো, দক্ষতা ও সার্বভৌম সক্ষমতা’ গড়ে তুলতে মাইক্রোসফট এই বিনিয়োগ করতে যাচ্ছে।

বিশ্বের অনেক প্রযুক্তি কোম্পানিই ভারতে তাদের বাজার সম্প্রসারণের প্রতিযোগিতায় নেমেছে। দ্রুতগতিতে ডিজিটাল অবকাঠামোর বিস্তার হওয়ায় দেশটি এখন বিশ্বের সবচেয়ে আকর্ষণীয় বাজারগুলোর একটি।

এর আগে গত অক্টোবরে গুগল জানিয়েছিল, তারা আগামী পাঁচ বছরে ভারতে ১৫ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে। দক্ষিণাঞ্চলের শহর বিশাখাপত্তনমে প্রতিষ্ঠানটির প্রথম এআই হাব স্থাপন করা হবে, যা হবে গুগলের অন্যতম বৃহত্তম বৈশ্বিক কেন্দ্র।

তিন দিনের ভারত সফরে থাকা নাদেলা নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে আলোচনা ছাড়াও বেঙ্গালুরু ও মুম্বাইয়ে অনুষ্ঠিত এআই-বিষয়ক কর্মসূচিতে অংশ নেবেন।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এআই ও সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদনের বৈশ্বিক কেন্দ্র হওয়ার উচ্চাকাঙ্ক্ষা নিয়ে ভারত সরকার কাজ করছে। দেশটি ইতিমধ্যে বিভিন্ন আর্থিক প্রণোদনা চালু করেছে, যাতে বিশ্বখ্যাত চিপ নির্মাতা ও প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো দেশটিতে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হয়। সরকারের লক্ষ্য উদ্ভাবনী বাজার শক্তিশালী করা, কর্মসংস্থান বাড়ানো ও আমদানিনির্ভরতা কমানো।

সত্য নাদেলার সঙ্গে সাক্ষাতের পর মোদি এক্সে লিখেছেন, ‘এআই নিয়ে বিশ্ব ভারতের ব্যাপারে আশাবাদী।’

ভারতে মাইক্রোসফটের সর্বশেষ বিনিয়োগ ছিল ৩ বিলিয়ন ডলার। তবে এবার সেটি সবকিছুকে ছাড়িয়ে গেছে। আগের পরিকল্পনায় আগামী দুই বছরে নতুন ডেটা সেন্টার, ক্লাউড ও এআই অবকাঠামো তৈরি এবং কর্মীদের দক্ষতা উন্নয়নের উদ্যোগ ছিল।

ভারতে তিন দশকের বেশি সময় ধরে কার্যক্রম পরিচালনা করছে মাইক্রোসফট। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটিতে ২২ হাজারের বেশি কর্মী রয়েছেন। উন্নত কম্পিউটিং চাহিদা পূরণে কোম্পানিটি ক্লাউড ও ডেটা সেন্টারের সক্ষমতা বাড়াচ্ছে।

এক বিবৃতিতে মাইক্রোসফট জানায়, তারা ভারতে চলমান কার্যক্রম আরও বিস্তৃত করতে চায়। দেশটিতে তাদের সবচেয়ে বড় হাইপারস্কেল সুবিধা নিশ্চিত করতে একটি নতুন ডেটা সেন্টার ২০২৬ সালের মাঝামাঝি থেকে কার্যক্রম শুরু করবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন: অভিযুক্ত গৃহকর্মীর আসল নাম-পরিচয় শনাক্ত

ইতালির লিওনার্দো এসপিএ থেকে জঙ্গি বিমান কিনছে বাংলাদেশ

ভারত যেন হুঁশে থাকে, এবার পাল্টা আঘাত হবে দ্রুত ও মারাত্মক—পাকিস্তানের সিডিএফ হয়েই আসিম মুনিরের গর্জন

দেড় বছরে ১০ বার থমকে গেছে মেট্রোরেল চলাচল

সাবেক সেনা কর্মকর্তার কাছে দুঃখ প্রকাশ করলেন তারেক রহমান

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ব্যবহৃত মোবাইল ফোন আমদানিতে বিটিআরসির ‘না’, কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি মোবাইল ব্যবসায়ীদের

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ব্যবহৃত মোবাইল ফোন আমদানিতে বিটিআরসির ‘না’, কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি মোবাইল ব্যবসায়ীদের

বিদেশ থেকে সেকেন্ড হ্যান্ড (ব্যবহৃত), ক্লোনড, রিফারফিশড (সংযোজনকৃত) মোবাইল হ্যান্ডসেট বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ বন্ধের সিদ্ধান্তে অনড় রয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। অন্যদিকে অননুমোদিত মোবাইল আমদানিকারক ও বিক্রেতারা এসব ফোন নিয়মতান্ত্রিকভাবে আমদানি করতে চান। একই সঙ্গে তাঁদের দাবি, এনইআইআর (ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেনটিটি রেজিস্টার) পদ্ধতি কার্যকর করার সময় পেছানো এবং মোবাইল ফোন আমদানির ক্ষেত্রে ভ্যাট-ট্যাক্স কমানো।

এসব দাবি নিয়ে আজ মঙ্গলবার বিটিআরসির সঙ্গে বৈঠক করেন মোবাইল ব্যবসায়ীদের সংগঠন মোবাইল বিজনেস কমিউনিটি বাংলাদেশ (এমবিসিবি)।

রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে বেলা ১১টা নাগাদ এই বৈঠক শুরু হয়। এমবিসিবির ১০ সদস্যের প্রতিনিধিদল এতে অংশ নেয়। প্রায় চার ঘণ্টা ধরে চলে বৈঠক। এ সময় বিটিআরসি ভবনের বাইরে অবস্থান নেন শতাধিক মোবাইল ব্যবসায়ী।

বিটিআরসি থেকে বের হয়ে এমবিসিবির নেতারা জানান বৈঠক ফলপ্রসূ হয়নি। এমবিসিবির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি শামীম মোল্লা বলেন, ‘আমাদের দাবিতে তারা (বিটিআরসি) কর্ণপাত করে নাই, আমাদের দাবি কেউ আমলে নেয় নাই। আমাদের কথা তারা বুঝে, বলার আগেই বুঝে, কিন্তু না বোঝার ভান করে।’

আগামীকাল বুধবার এনবিআর (জাতীয় রাজস্ব বোর্ড), ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ, অর্থ মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক হবে বলে জানান শামীম মোল্লা। সে পর্যন্ত ব্যবসায়ীদের শান্ত থাকার আহ্বান জানান তিনি।

এমবিসিবির সভাপতি মোহাম্মদ আসলাম বলেন, ‘মিটিংয়ে আমাদের একমাত্র অ্যাজেন্ডা ছিল ইউজড (ব্যবহৃত) ফোন। আমরা বলেছি, এ দেশে ৭০-৭৫ শতাংশ মানুষ ইউজড ফোন কেনে, ব্যবহার করে আবার বিক্রি করে বা এক্সচেঞ্জ (বিনিময়) করে। আমরা বারবার বলেছি এই ফোনগুলোকে ক্লোন, কপি ও রিফারবিশড বলে কালিমা লেপন করছেন আপনারা। আমরা ক্লোন-কপি বেচি না, আমরা যে মালটা বিক্রি করি, সেটা ধনী দেশের মানুষেরা ছেড়ে দেয়, আমরা সেটা দেশে নিয়ে এসে বিক্রি করি।’

মোহাম্মদ আসলাম জানান, তাঁদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে ব্যবহৃত ফোনের বাণিজ্য করতে দিতেই হবে। তবে বিটিআরসি বলেছে আপাতত এ বিষয়ে তাদের কোনো পরিকল্পনা নেই।

মোহাম্মদ আসলাম বলেন, ‘আমরা বলেছি যেহেতু তারা এনইআইআর চালু করার জন্য নতুন ফোনের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন, পুরাতন ফোনের জন্য যে সরঞ্জাম লাগে সেটার টাকা আমরা সারা দেশের ব্যবসায়ীরা দেব। কিন্তু তারা অনড়।’

এমবিসিবির নেতারা জানান, বুধবার মোবাইল ব্যবসা-সংশ্লিষ্ট কয়েকটি মন্ত্রণালয় এবং এনবিআরের সঙ্গে বৈঠক হবে। এরপরও তাঁদের দাবি না মানলে কঠোর আন্দোলনে যাবেন তাঁরা।

১৬ ডিসেম্বর থেকে দেশে এনইআইআর কার্যকরের ঘোষণা দিয়েছে বিটিআরসি। মোবাইল হ্যান্ডসেট নিবন্ধনের এই বাধ্যবাধকতা কার্যকর হওয়ার পর কেবল সরকার অনুমোদিত বৈধ হ্যান্ডসেটই নেটওয়ার্কে যুক্ত থাকতে পারবে। এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে দেশে মোবাইল ফোনের দাম বেড়ে যাবে এবং সাধারণ মোবাইলে বিক্রেতা পথে বসবে বলে অভিযোগ এমবিসিবির।

এমবিসিবির সঙ্গে বৈঠকের পর এক বার্তায় বিটিআরসি জানিয়েছে, মোবাইল হ্যন্ডসেট আমদানি এবং ভেন্ডর তালিকাভুক্তকরণ সনদ দেওয়ার বিদ্যমান প্রক্রিয়া সহজ করতে কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শুধু মোবাইল ফোনের মূল উৎপাদনকারী সংস্থার পাশাপাশি যেকোনো অনুমোদিত সরবরাহকারীর প্রত্যয়নপত্রসহ (চুক্তির পরিবর্তে) আবেদন করা হলে বিটিআরসি হতে সহজেই তাদের অনুকূলে আমদানির অনুমোদন দেওয়া হবে। এমবিসিবির চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশের বাজারে থাকা অবিক্রীত সব মোবাইল হ্যান্ডসেট নিয়মিতকরণের জন্য নির্ধারিত ছকে তথ্য জমা দিতে হবে। এরপর বিটিআরসি এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।

‘বেতার যন্ত্রপাতি ব্যবহার, বাজারজাতকরণ ও তালিকা গ্রহণের নির্দেশিকা, ২০২৪’ অনুযায়ী বৈধভাবে মোবাইল ফোন আমদানি করা হলে সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠানকে বিটিআরসি সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে বলে জানিয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন: অভিযুক্ত গৃহকর্মীর আসল নাম-পরিচয় শনাক্ত

ইতালির লিওনার্দো এসপিএ থেকে জঙ্গি বিমান কিনছে বাংলাদেশ

ভারত যেন হুঁশে থাকে, এবার পাল্টা আঘাত হবে দ্রুত ও মারাত্মক—পাকিস্তানের সিডিএফ হয়েই আসিম মুনিরের গর্জন

দেড় বছরে ১০ বার থমকে গেছে মেট্রোরেল চলাচল

সাবেক সেনা কর্মকর্তার কাছে দুঃখ প্রকাশ করলেন তারেক রহমান

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

৩০ মিনিটের বেশি সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার শিশুদের মনোযোগের ক্ষমতা কমায়, বলছে গবেষণা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ৪০
শিশুদের বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় সময় দেওয়া বেড়ে যায়। ছবি: পেক্সেলস
শিশুদের বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় সময় দেওয়া বেড়ে যায়। ছবি: পেক্সেলস

শিশু-কিশোরদের সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার নিয়ে বাড়ছে সচেতনতা। অস্ট্রেলিয়া ইতিমধ্যে আইন তৈরি করেছে যে ১৬ বছরের কম বয়সী কারও ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও স্ন্যাপচ্যাটের মতো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অ্যাকাউন্ট রাখা যাবে না। এরপর আরও অনেক দেশ এই সিদ্ধান্তের দিকে এগোচ্ছে। এদিকে এক গবেষণায় উঠে এসেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দৈনিক ৩০ মিনিটের বেশি সময় করলে শিশুদের মনোযোগ ধরে রাখার সক্ষমতা ধীরে ধীরে কমতে পারে।

৮ হাজারের বেশি শিশুর ওপর পরীক্ষা চালিয়ে এক গবেষণায় এ তথ্য জানিয়েছে সুইডেনের ক্যারোলিনস্কা ইনস্টিটিউট এবং যুক্তরাষ্ট্রের ওরেগন হেলথ অ্যান্ড সায়েন্স ইউনিভার্সিটির গবেষকেরা। তাঁরা এ গবেষণায় স্ক্রিন ব্যবহারের অভ্যাস এবং অ্যাটেনশন-ডেফিসিট/হাইপারঅ্যাকটিভিটি ডিজঅর্ডার (এডিএইচডি)–সম্পর্কিত উপসর্গের সম্ভাব্য সংযোগ খতিয়ে দেখেছেন।

গবেষকেরা যুক্তরাষ্ট্রের ৯ থেকে ১৪ বছর বয়সী মোট ৮ হাজার ৩২৪ শিশুকে চার বছর ধরে অনুসরণ করেন। এ সময় শিশুদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার, টিভি বা ভিডিও দেখা এবং ভিডিও গেম খেলার গড় সময় বিবেচনায় নেওয়া হয়। দেখা যায়, একটি শিশু যেখানে ৯ বছর বয়সে দৈনিক প্রায় ৩০ মিনিট স্ক্রিনে চোখ রাখত, সে ১৩ বছর বয়সে প্রায় আড়াই ঘণ্টা পর্যন্ত স্ক্রিনে সময় ব্যয় করছে।

গবেষণার ফলাফলে দেখা গেছে, যে শিশুরা ইনস্টাগ্রাম, স্ন্যাপচ্যাট, টিকটক, ফেসবুক, এক্স (সাবেক টুইটার) বা মেসেঞ্জারের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশি সময় ব্যয় করেছে, তাদের মধ্যে ধীরে ধীরে অমনোযোগিতার উপসর্গ তৈরি হয়েছে।

গবেষণায় আরও দেখা যায়, অনেক সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের ন্যূনতম বয়সসীমা ১৩ বছর নির্ধারিত থাকা সত্ত্বেও ৯ বছর বয়সে শিশুদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের দৈনিক গড় সময় ছিল প্রায় ৩০ মিনিট, যা ১৩ বছর বয়সে গিয়ে দাঁড়ায় আড়াই ঘণ্টায়।

পিয়ার-রিভিউড জার্নাল পেডিয়াট্রিক্স ওপেন সায়েন্স–এ প্রকাশিত এই গবেষণায় টিভি দেখা বা ভিডিও গেম খেলার ক্ষেত্রে এমন ফলাফল উল্লেখ করা হয়নি।

ক্যারোলিনস্কা ইনস্টিটিউটের নিউরোসায়েন্স বিভাগের কগনিটিভ নিউরোসায়েন্সের অধ্যাপক টরকেল ক্লিংবার্গ বলেন, ‘আমাদের গবেষণা ইঙ্গিত দেয় যে নির্দিষ্টভাবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমই শিশুদের মনোযোগ ধরে রাখার সক্ষমতাকে প্রভাবিত করে।

তিনি আরও যোগ করেন, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বার্তা ও নোটিফিকেশনের মাধ্যমে ক্রমাগত মনোযোগ বিঘ্নিত হয়। এমনকি কোনো বার্তা এসেছে কি না, এই চিন্তাও মনোযোগ সরিয়ে দেয়। এটি মনোসংযোগ ধরে রাখার ক্ষমতাকে প্রভাবিত করে।

পরিবারের আর্থসামাজিক পটভূমি বা এডিএইচডির প্রতি জিনগত প্রবণতা কোনোটিই এই সম্পর্ককে প্রভাবিত করেনি বলে জানান গবেষকেরা।

এ ছাড়া, যেসব শিশুর আগে থেকেই অমনোযোগিতার উপসর্গ ছিল, তারা বেশি করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করা শুরু করেনি। এটি ইঙ্গিত দেয় যে সম্পর্কটি ব্যবহার থেকে উপসর্গের দিকে যায়, উপসর্গ থেকে ব্যবহারের দিকে নয়।

গবেষণায় হাইপার অ্যাকটিভ বা আবেগপ্রবণ আচরণ বৃদ্ধির কোনো প্রমাণও পাওয়া যায়নি। ব্যক্তিগত পর্যায়ে এর প্রভাব সামান্য হলেও জনসংখ্যার বিস্তৃত পরিসরে এর প্রভাব লক্ষণীয় হতে পারে বলে মনে করেন গবেষকেরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন: অভিযুক্ত গৃহকর্মীর আসল নাম-পরিচয় শনাক্ত

ইতালির লিওনার্দো এসপিএ থেকে জঙ্গি বিমান কিনছে বাংলাদেশ

ভারত যেন হুঁশে থাকে, এবার পাল্টা আঘাত হবে দ্রুত ও মারাত্মক—পাকিস্তানের সিডিএফ হয়েই আসিম মুনিরের গর্জন

দেড় বছরে ১০ বার থমকে গেছে মেট্রোরেল চলাচল

সাবেক সেনা কর্মকর্তার কাছে দুঃখ প্রকাশ করলেন তারেক রহমান

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ট্রাম্পের নতি স্বীকার, এনভিডিয়ার শক্তিশালী এআই চিপ চীনে বিক্রির অনুমতি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫: ৪৯
গত এপ্রিলে হোয়াইট হাউসে এনভিডিয়ার সিইও জেনসেন হুয়াং। ছবি: এএফপি
গত এপ্রিলে হোয়াইট হাউসে এনভিডিয়ার সিইও জেনসেন হুয়াং। ছবি: এএফপি

বহু প্রতীক্ষার পর অবশেষে এনভিডিয়াকে তাদের শক্তিশালী কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চিপ চীনে বিক্রি করার অনুমতি দিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই সিদ্ধান্তের ফলে চিপ প্রস্তুতকারক সংস্থা এবং এর সিইও জেনসেন হুয়াং-এর দীর্ঘদিনের হোয়াইট হাউস লবিং সফল হলো। এই অনুমোদনের ফলে এনভিডিয়া শত শত কোটি ডলারের ব্যবসা করার সুযোগ পাবে বলে মনে করা হচ্ছে।

জাতীয় নিরাপত্তা উদ্বেগের কথা বলে পূর্ববর্তী মার্কিন প্রশাসন এনভিডিয়ার সবচেয়ে উন্নত চিপ চীনে বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। কিন্তু গতকাল সোমবার এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার কথা ঘোষণা করেন ট্রাম্প।

সোমবার নিজের ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে ট্রাম্প লেখেন, ‘আমি চীনের প্রেসিডেন্ট সি-কে জানিয়েছি যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এনভিডিয়াকে তার এইচ টু জিরো জিরো (H200) চিপ চীন এবং অন্যান্য দেশে অনুমোদিত গ্রাহকদের কাছে এই শর্তে পাঠানোর অনুমতি দেবে যে, আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা বজায় রাখতে সাহায্য করবে। প্রেসিডেন্ট সি ইতিবাচক সাড়া দিয়েছেন!’

ট্রাম্প জানান, বাণিজ্য বিভাগ বর্তমানে এই চুক্তির চূড়ান্ত বিবরণ তৈরি করছে এবং অ্যাডভান্সড মাইক্রো ডিভাইসেস (এএমডি) এবং ইন্টেল-এর মতো অন্যান্য চিপ কোম্পানিগুলোর কাছেও তিনি একই প্রস্তাব দেওয়ার পরিকল্পনা করছেন।

এই চুক্তির সবচেয়ে অস্বাভাবিক দিক হলো, ট্রাম্পের ঘোষণা অনুযায়ী মার্কিন সরকার চিপ বিক্রি থেকে হওয়া আয়ের ২৫ শতাংশ ভাগ পাবে, যা এনভিডিয়ার সঙ্গে পূর্ববর্তী আলোচনার মাধ্যমে সম্মত হওয়া ১৫ শতাংশের চেয়ে ঢের বেশি। অতীতেও ব্যক্তিগত ব্যবসায়িক লেনদেন থেকে ফেডারেল সরকারের আর্থিক অংশ নেওয়ার অনুরূপ অভিনব পরিকল্পনা করেছেন ট্রাম্প।

এনভিডিয়ার H200 চিপগুলো এই কোম্পানির দ্বিতীয়-সর্বোচ্চ শক্তিশালী চিপ এবং এটি H20 মডেলের চেয়ে অনেক উন্নত। উল্লেখ্য, H20 চিপটি চীনা বাজারের জন্য অপেক্ষাকৃত কম ক্ষমতাসম্পন্ন মডেল হিসেবে তৈরি করা হলেও গত এপ্রিলে সেটির ওপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল।

তবে এই সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেছেন ডেমোক্র্যাট সিনেটররা। ম্যাসাচুসেটস-এর এলিজাবেথ ওয়ারেন এবং নিউজার্সির অ্যান্ডি কিম বাণিজ্যমন্ত্রীকে লেখা এক চিঠিতে তাঁদের উদ্বেগের কথা বলেছেন। তাঁদের আশঙ্কা, চীনে এই চিপ বিক্রির ফলে সেই দেশের নজরদারি, সেন্সরশিপ এবং সামরিক অ্যাপ্লিকেশনগুলোকে শক্তি জোগানোর ঝুঁকি রয়েছে।

সিনেটর ওয়ারেন সামাজিক মাধ্যমে এনভিডিয়ার সিইও হুয়াংকে কংগ্রেসের সামনে শপথের অধীনে সাক্ষ্য দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

এনভিডিয়া সিইও জেনসেন হুয়াং দীর্ঘদিন ধরে হোয়াইট হাউসের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছেন এবং একাধিকবার ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করেছেন। নিষেধাজ্ঞার কারণে চীনা বাজারে এনভিডিয়ার হিস্যা ৯৫ শতাংশ থেকে ০ শতাংশ-এ নেমে আসে। তিনি এই নিষেধাজ্ঞাকে বরাবরই ‘কৌশলগত ভুল’ বলে উল্লেখ করেছেন।

ট্রাম্প প্রশাসনের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে এনভিডিয়া। একজন মুখপাত্র বলেছেন, ‘বাণিজ্য বিভাগ কর্তৃক যাচাইকৃত অনুমোদিত বাণিজ্যিক গ্রাহকদের কাছে H200 চিপ সরবরাহ করার এই সিদ্ধান্ত আমেরিকার জন্য একটি সুচিন্তিত ভারসাম্য বজায় রাখার কাজ হয়েছে।’ এনভিডিয়া এবং ট্রাম্প উভয়েই দাবি করেছেন, এই পদক্ষেপ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কর্মসংস্থান ও উৎপাদনকে সমর্থন করবে।

ট্রাম্প পূর্ববর্তী বাইডেন প্রশাসনের কঠোর রপ্তানি নীতির নিন্দা করে বলেন, ‘সেই যুগ শেষ!’ তাঁর প্রশাসন সবসময় ‘আমেরিকাকে সর্বাগ্রে’ রাখবে।

এদিকে, চীনা কর্তৃপক্ষ এখনো এই ঘোষণার বিষয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে একজন টেলিকম শিল্প বিশ্লেষক মা জিহুয়া রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম গ্লোবাল টাইমস-কে বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কয়েক বছরের নিষেধাজ্ঞা চীনের দেশীয় চিপ শিল্পের উন্নতি ও সম্প্রসারণে একটি বিরল সুযোগ করে দিয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন: অভিযুক্ত গৃহকর্মীর আসল নাম-পরিচয় শনাক্ত

ইতালির লিওনার্দো এসপিএ থেকে জঙ্গি বিমান কিনছে বাংলাদেশ

ভারত যেন হুঁশে থাকে, এবার পাল্টা আঘাত হবে দ্রুত ও মারাত্মক—পাকিস্তানের সিডিএফ হয়েই আসিম মুনিরের গর্জন

দেড় বছরে ১০ বার থমকে গেছে মেট্রোরেল চলাচল

সাবেক সেনা কর্মকর্তার কাছে দুঃখ প্রকাশ করলেন তারেক রহমান

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত