Ajker Patrika

পেটাহার্টজ গতির ট্রানজিস্টর উদ্ভাবন, আলোর গতিতে কাজ করবে কম্পিউটার

অনলাইন ডেস্ক
গ্রাফিন ও লেজার স্পন্দন ব্যবহার করে নির্মিত বিশ্বের দ্রুততম কোয়ান্টাম ট্রানজিস্টর। ছবি: এআই দিয়ে তৈরি
গ্রাফিন ও লেজার স্পন্দন ব্যবহার করে নির্মিত বিশ্বের দ্রুততম কোয়ান্টাম ট্রানজিস্টর। ছবি: এআই দিয়ে তৈরি

নতুন যুগের দ্বারপ্রান্তে কম্পিউটার প্রযুক্তি। যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা দাবি করছেন, তাঁরা এমন এক ট্রানজিস্টর তৈরি করেছেন, যা পেটাহার্টজ (১ পেটাহার্টজ = ১০ ^ ১৫ হার্টজ) গতিতে কাজ করতে সক্ষম। এই সাফল্যের ফলে ভবিষ্যতের কম্পিউটারগুলো আলোর গতিতে কাজ করতে পারবে, যা বর্তমান প্রযুক্তির তুলনায় লাখ গুণ দ্রুত।

সম্প্রতি নেচার কমিউনিকেশন সাময়িকীতে প্রকাশিত এক গবেষণাপত্রে জানানো হয়েছে, এই আবিষ্কারের কেন্দ্রে রয়েছে গ্রাফিন নামের এক অণু-স্তর বিশিষ্ট পদার্থ। আলট্রাফাস্ট লেজার পালস বা অতি দ্রুত আলোক স্পন্দনের মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা গ্রাফিনের ভেতর ইলেকট্রনের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছেন। একে বলা হয় কোয়ান্টাম টানেলিং—যেখানে ইলেকট্রন কোনো প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করে প্রায় তাৎক্ষণিকভাবে একপাশ থেকে আরেক পাশে পৌঁছে যায়।

গবেষণা দলের নেতৃত্ব দেন অ্যারিজোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যা ও অপটিক্যাল সায়েন্সেস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ হাসান। তিনি এর আগে বিশ্বের দ্রুততম ইলেকট্রন মাইক্রোস্কোপ উদ্ভাবনের জন্য আলোচিত হন। এই প্রকল্পে তাঁর সঙ্গে কাজ করেন ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির জেট প্রপালশন ল্যাবরেটরি ও জার্মানির লুডভিগ ম্যাক্সিমিলিয়ান ইউনিভার্সিটি অব মিউনিখের গবেষকেরা।

গবেষণার প্রাথমিক পর্যায়ে বিজ্ঞানীরা লক্ষ্য করেন, গ্রাফিনে লেজার আলো প্রয়োগ করলে উভয় পাশে যে বিদ্যুৎ চালনা হয়, তা একে অপরকে বাতিল করে দেয়। ফলে কোনো নিট বৈদ্যুতিক প্রবাহ তৈরি হয় না। তবে গ্রাফিনে সামান্য পরিবর্তন আনার পর এক বিস্ময়কর ঘটনা ঘটে—একটি ইলেকট্রন গ্রাফিনের ভেতর দিয়ে ‘টানেলিং’ করে পার হতে পারে এবং এই মুহূর্তটি বাস্তব সময়ে ধরা যায়।

এই আবিষ্কারের ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে বিশ্বের প্রথম পেটাহার্টজ কোয়ান্টাম ট্রানজিস্টর। এ জন্য তারা একটি বাজারজাত গ্রাফিন ফোটো ট্রানজিস্টরের সঙ্গে বিশেষ সিলিকন স্তর যুক্ত করে এবং প্রতি ৬৩৮ অ্যাটোসেকেন্ড (এক অ্যাটোসেকেন্ড = এক কুইন্টিলিয়ন ভাগের এক ভাগ সেকেন্ড) অন্তর লেজার আলো প্রয়োগ করে। এভাবে একটি ট্রানজিস্টর, যা পেটাহার্টজ গতিতে কাজ করতে সক্ষম।

সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো—এই ট্রানজিস্টরটি অত্যন্ত নিয়ন্ত্রিত ল্যাবরেটরির বাইরে, সাধারণ পরিবেশেও কাজ করে। এর ফলে প্রযুক্তিটি বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহারের সম্ভাবনা অনেক বেড়ে গেছে।

বর্তমানে মোহাম্মদ হাসান ও তাঁর দল ‘টেক লঞ্চ অ্যারিজোনা’-এর সঙ্গে কাজ করে উদ্ভাবনটির পেটেন্ট ও বাজারজাতকরণের উদ্যোগ নিচ্ছেন। তাঁদের পরবর্তী লক্ষ্য হচ্ছে, এমন একটি সংস্করণ তৈরি করা যা সাধারণভাবে বাজারে পাওয়া যায় এমন লেজার দিয়েই পরিচালনা করা সম্ভব। এর ফলে শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো সহজেই এটি গ্রহণ করতে পারে।

এই যুগান্তকারী ট্রানজিস্টরের সফল বাস্তবায়ন কম্পিউটিং, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, মহাকাশ গবেষণা, রসায়ন, স্বাস্থ্যসেবাসহ অসংখ্য ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।

তথ্যসূত্র: টেকস্পট

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শেখ হাসিনা যাঁকে ঢাকায় ‘হত্যা করলেন’, তিনি ময়মনসিংহে জীবিত!

চরফ্যাশন থেকে গেটিসবার্গ কলেজ

নগদে স্ত্রীর চাকরি, স্বার্থের সংঘাতে জড়ালেন নাহিদের সাবেক পিএ আতিক মুর্শেদ

জীবিত ভাইকে জুলাই আন্দোলনে নিহত দেখিয়ে মামলায় সাক্ষীও দুই ভাই, নেপথ্যে যা জানা গেল

যুক্তরাষ্ট্রে সি চিন পিংয়ের মেয়েকে বহিষ্কারের দাবি, হঠাৎ কেন এই বিতর্ক

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত