Ajker Patrika

রাজনৈতিক বিজ্ঞাপন দেখানোয় মেটাকে ২ কোটি ৪৬ লাখ ডলার জরিমানা

অনলাইন ডেস্ক
Thumbnail image
২০২২ সালে আগস্টে এই মামলা বাতিল করার জন্য চেষ্টা করে মেটা। ছবি: টেইল উইন্ড

যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনের ‘ফেয়ার ক্যাম্পেইন প্র্যাকটিসেস অ্যাক্ট’ লঙ্ঘনের জন্য ২ কোটি ৪৬ লাখ ডলার জরিমানা দিতে হবে ফেসবুকের মূল কোম্পানি মেটাকে। এই আইনটির মূল উদ্দেশ্য হল নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা এবং রাজনৈতিক প্রচারণার ক্ষেত্রে ন্যায্য আচরণকে উৎসাহিত করা। তবে স্বচ্ছতা বজায় না রেখে মেটা রাজনৈতিক বিজ্ঞাপন দেখানোয় আদালত এই জরিমানা করেছে।

গত সোমবার ওয়াশিংটন রাজ্যের কোর্ট অফ আপিলস ২০২২ সালের একটি সিদ্ধান্তকে সমর্থন করে, যার ফলে এই জরিমানা বহাল থাকে।

২০২০ সালে মেটার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এবং নির্বাচিত গভর্নর বব ফার্গুসন। এই মামলা অভিযোগে বলা হয়, কোম্পানিটি ইচ্ছাকৃতভাবে আইনটি ৮০০ বার লঙ্ঘন করেছে। মেটা রাজনৈতিক বিজ্ঞাপন বিক্রি করেছিল। তবে এই সম্পর্কে ব্যবহারকারীদের কাছে স্বচ্ছতা বজায় রাখেনি কোম্পানিটি।

২০২২ সালে কিং কাউন্টি সুপিরিয়র কোর্টের বিচারক ডগলাস নর্থ মেটা কোম্পানির বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ জরিমানা আরোপ করেন। এই জরিমানা মধ্যে মেটার বিরুদ্ধে আইনজীবীদের খরচ (অ্যাটর্নি ফি) ছিল ১ কোটি ৫ লাখ ডলার।

এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পাবলিক ডিসক্লোজার কমিশনের (পিডিসি) চেয়ারম্যান অ্যালেন হেওয়ার্ড বলেছেন, ‘৫০ বছরেরও বেশি আগে ওয়াশিংটন রাজ্যের ভোটাররা রাজনৈতিক ব্যয়ের স্বচ্ছতার জন্য দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করেছিলেন।

অ্যাপিলেট কোর্ট পিডিসির সঙ্গে একমত যে, ‘আধুনিক রাজনৈতিক বিজ্ঞাপনগুলোর ক্ষেত্রেও এটি সমানভাবে প্রযোজ্য।’

পিডিসি অনুযায়ী, এটি যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় জরিমানা, যা ক্যাম্পেইন ফাইন্যান্স (নির্বাচনী প্রচারণার জন্য অর্থ সংগ্রহ এবং ব্যয়ের প্রক্রিয়া) লঙ্ঘনের জন্য আরোপ করা হয়েছে। মেটার এসব আইন ইচ্ছাকৃত ভাবে লঙ্ঘন করেছে বলে আদালত চিহ্নিত করে। এ জন্য জরিমানা তিনগুণ বেড়েছে।

১৯৭২ সালে পাশ হওয়া ফেয়ার ক্যাম্পেইন প্র্যাকটিস অ্যাক্ট অনুযায়ী, বিজ্ঞাপনদাতাদের রাজনৈতিক বিজ্ঞাপন ক্রেতাদের নাম এবং ঠিকানা, বিজ্ঞাপনের লক্ষ্যপ্রাপ্ত জনগণের বয়স ও অন্যান্য বৈশিষ্ট্য এবং বিজ্ঞাপনের ভিউ সংখ্যা প্রকাশ করতে হবে। মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, ফেসবুক রাজনৈতিক কমিটিগুলোর কাছে শত শত বিজ্ঞাপন বিক্রি করেছে কিন্তু এই তথ্যগুলো প্রকাশ করেনি।

২০১৮ সালে একই ধরনের লঙ্ঘনের জন্য ফেসবুকের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন ফার্গুসন। এর ফলে, কোম্পানিটি ২ লাখ ৩৮ হাজার ডলার জরিমানা দেয়। এর পর ফেসবুক জানিয়েছিল, তারা আর ওয়াশিংটনে রাজনৈতিক বিজ্ঞাপন বিক্রি করবে না।

বিচারক নর্থ তার রায়ে উল্লেখ করেন, ২০১৯ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে তিনজন ব্যক্তি মেটার কাছ থেকে বিজ্ঞাপন সংক্রান্ত তথ্য চেয়েছিলেন। তবে মেটা এসব তথ্য কখনো সেই ব্যক্তিদের সরবরাহ করেনি।

পাবলিক ডিসক্লোজার কমিশন এই মামলা তদন্ত করে এবং এটি অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিসে পাঠায়। এরপর ২০২০ সালে আবারও ফেসবুকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন ফার্গুসন।

২০২০ সালে ফার্গুসন বলেছিলেন, ‘যে বড় প্রযুক্তি কোম্পানিই হোক বা একটি ছোট সংবাদপত্র, যারা রাজনৈতিক বিজ্ঞাপন বিক্রি করেন তাদের আমাদের ক্যাম্পেইন ফাইন্যান্স আইন অনুসরণ করতে হবে। তাদের ভোট প্রভাবিত করতে যে বিজ্ঞাপনগুলি দেখানো হচ্ছে, তার পেছনে কে রয়েছে তা জানার অধিকার ওয়াশিংটনবাসীর রয়েছে।

২০২২ সালে আগস্টে এই মামলা বাতিল করার জন্য চেষ্টা করে মেটা। ওয়াশিংটনের ক্যাম্পেইন ফাইন্যান্স আইনকে অ–সংবিধানিক ঘোষণা করা হয়। তারা যুক্তি দেয় যে, এই আইন ‘রাজনৈতিক বক্তব্যের উপর অযথা চাপ সৃষ্টি করে’এবং এটি ‘সম্পূর্ণরূপে অনুসরণ করা প্রায় অসম্ভব।’

নতুন এই জরিমানা সম্পর্কে মেটা কোনো মন্তব্য করেনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত