Ajker Patrika

অনলাইনে ‘ভুয়া’ তথ্য প্রচারে যুক্ত মার্কিন সেনাবাহিনী, বলছে মেটা 

প্রযুক্তি ডেস্ক
আপডেট : ২৫ নভেম্বর ২০২২, ১১: ২৭
অনলাইনে ‘ভুয়া’ তথ্য প্রচারে যুক্ত মার্কিন সেনাবাহিনী, বলছে মেটা 

অনলাইনে ভুয়া তথ্য প্রচারে মার্কিন সেনাবাহিনীর সম্পৃক্ততা খুঁজে পেয়েছে ফেসবুকের মূল প্রতিষ্ঠান মেটা। গত আগস্টে স্বতন্ত্র গবেষকেরা জানান, এটিই যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম কোনো বড় গোপন প্রচারণা কার্যক্রম, যা মেটা বন্ধ করেছে।

মেটা জানায়, এই অপপ্রচার কার্যক্রমের সঙ্গে যাঁরা যুক্ত ছিলেন, তাঁরা নিজেদের পরিচয় লুকিয়ে রাখলেও আমাদের তদন্তে এসব অ্যাকাউন্টের সঙ্গে মার্কিন সেনাবাহিনীর সম্পৃক্ততা খুঁজে পাওয়া গেছে। ভুয়া তথ্যসংবলিত পোস্টগুলোর লাইক, কমেন্ট, শেয়ার ইত্যাদিতে বেশির ভাগই ভুয়া অ্যাকাউন্ট দেখা গেছে।

মেটা আরও জানায়, অপপ্রচার কার্যক্রমটি যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র দেশগুলোকে সমর্থন করত। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বৈরী সম্পর্ক থাকা দেশগুলোর বিরোধিতা করত, যার মধ্যে রাশিয়া, চীন ও ইরান উল্লেখযোগ্য। ফেসবুকের নিয়ম লঙ্ঘন করায় সংশ্লিষ্ট ৩৯টি অ্যাকাউন্ট, ১৬টি পেজ এবং দুটি গ্রুপ মুছে ফেলা হয়েছে। পুরো কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত নেটওয়ার্কটির উৎস যুক্তরাষ্ট্রেই বলে নিশ্চিত করেছে মেটা।

অপপ্রচার কার্যক্রমটি আফগানিস্তান, আলজেরিয়া, ইরান, ইরাক, কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান, রাশিয়া, সোমালিয়া, সিরিয়া, তাজিকিস্তান, উজবেকিস্তান ও ইয়েমেনের মতো দেশগুলোকে লক্ষ্য করে পরিচালিত হচ্ছিল। সাধারণত পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাতে যেসব পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়, ঠিক সেগুলোই এখানে ব্যবহার করা হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, ভুয়া ব্যক্তি, কৃত্রিমভাবে তৈরি করা ছবি এবং একাধিক প্ল্যাটফর্মজুড়ে প্রচারণা।

গবেষকেরা বলেন, যেসব অ্যাকাউন্ট ইরানকে লক্ষ্য করে প্রচারণা চালাচ্ছিল, সেগুলো মূলত ইরান সরকার ও তাদের নীতি নিয়ে সমালোচনা করেছে। এ ছাড়া নারী অধিকারের প্রসঙ্গ টেনেও ইরানের সমালোচনা করা হয়েছে।

যারা যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছিল, তাদের মধ্যে কেউ কেউ স্বাধীন মিডিয়া আউটলেট হিসেবে নিজেদের জাহির করেছিল। আবার অনেক অ্যাকাউন্ট থেকে স্বনামধন্য মিডিয়া আউটলেটগুলো থেকে প্রকাশিত খবরকে বিকৃত করে প্রচার করা হয়েছিল।

মেটা জানায়, পুরো কার্যক্রমটি শুধু ফেসবুকে সীমাবদ্ধ থাকেনি। টুইটার, ইউটিউব, টেলিগ্রামের মতো প্ল্যাটফর্ম থেকেও অপপ্রচার চালানো হয়েছিল।

এ ব্যাপারে মার্কিন থিংক ট্যাংক আটলান্টিক কাউন্সিলের ডিজিটাল ফরেনসিক রিসার্চ ল্যাবের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক অ্যান্ডি কারভিন বিবিসিকে বলেন, ‘এ ধরনের অপপ্রচার গণতন্ত্রের জন্য ক্ষতিকর। এ ধরনের কাজের মানে হচ্ছে, প্রতিপক্ষের কৌশল ব্যবহার করে জনগণের বিশ্বাসকে টলে দেওয়া।’

মেটার এই দাবি এর আগে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট থেকে প্রকাশিত হওয়া এক প্রতিবেদনকে সমর্থন করে। জানা যায়, সংবাদমাধ্যমগুলোর অপপ্রচার কার্যক্রম নিয়ে উদ্বেগ মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগকে সামরিক বাহিনীর ‘গোপন তথ্যযুদ্ধ’ নিয়ে তদন্তে নামতে বাধ্য করেছে।

এর প্রতিক্রিয়ায় মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগ বিবিসি নিউজকে জানায়, তারা মেটার প্রতিবেদনের ব্যাপারে জেনেছে। আপাতত প্রতিবেদন ও এর পরিপ্রেক্ষিতে তাদের পদক্ষেপ নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে চায় না। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত