Ajker Patrika

বিটকয়েনের দরে ব্যাপক পতন: ৭ মাসের মধ্যে প্রথম ৯০ হাজার ডলারের নিচে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
বিটকয়েনের দরে ব্যাপক পতন: ৭ মাসের মধ্যে প্রথম ৯০ হাজার ডলারের নিচে

ক্রিপ্টোকারেন্সি বাজারে তীব্র মন্দার কারণে বিটকয়েনের দরপতন অব্যাহত রয়েছে। সাত মাসের মধ্যে প্রথমবার ৯০ হাজার ডলারের নিচে নেমে গেছে। মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছানোর পর এই দরপতন হলো। এর ফলে চলতি বছরের সমস্ত অর্জন মুছে গেছে বলে মন্তব্য করেছে ব্লুমবার্গ।

বছরের শুরু থেকে ধরে রাখা সব লাভ মুছে দিয়ে, সপ্তাহান্তে বিটকয়েনের দরপতন শুরু হয় যখন এটি ৯৩ হাজার ৭১৪ ডলারের নিচে নেমে যায়। অক্টোবরের ৬ তারিখে ট্রাম্প প্রশাসনের ক্রিপ্টো-বান্ধব অবস্থানের আশাবাদে বিটকয়েনের দাম ১ লাখ ২৬ হাজার ২৫১ ডলার পৌঁছায়, যা সর্বকালের সর্বোচ্চ। তবে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অপ্রত্যাশিত শুল্ক-সম্পর্কিত মন্তব্যের কারণে বৈশ্বিক বাজারে অস্থিরতা তৈরি হলে সেই উত্থান দ্রুত ভেস্তে যায়।

গতকাল সোমবার এই বিক্রি আরও গভীর হয়, যখন বিটকয়েন ৯১ হাজার ৫০০ ডলারের বাধা পেরিয়ে যায়। ব্যবসায়ীরা তখন দ্রুত অতিরিক্ত ক্ষতি থেকে বাঁচতে হেজ (ঝুঁকি কমানো) করার জন্য ছুটতে থাকে। ডেরিবিট (কয়েনবেসের মালিকানাধীন) থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে, অপশন কার্যকলাপও ক্রমবর্ধমান হতাশাকে প্রতিফলিত করছে। ৯০ হাজার, ৮৫ হাজার, এবং ৮০ হাজার ডলারে দরপতনের বিরুদ্ধে সুরক্ষার জন্য চুক্তির ব্যাপক চাহিদা দেখা যায়।

আসলে, ব্যবসায়ীরা শুধু নভেম্বর মাসের শেষের দিকে মেয়াদ শেষ হতে যাওয়া ৭৪০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি পরিমাণে বিয়ারিশ (মন্দা) চুক্তি কিনে নিয়েছে, যা বুলিশ (তেজি) বাজিকে বহুলাংশে ছাড়িয়ে গেছে। ব্লুমবার্গ জানিয়েছে, হেজিংয়ের এই বৃদ্ধি বাজার অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে এই বিশ্বাসকে জোরদার করেছে যে এই পতন এখনও শেষ হয়নি, কারণ বড় বিনিয়োগকারীরা বাজার থেকে সরে যাচ্ছে।

এই উল্টো গতিটি মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে বিটকয়েনের উল্কাপাতের মতো উত্থানের পরেই এল। অবশ্য ক্রিপ্টোকারেন্সির জগৎ এমনই অস্থির। বিশ্লেষকেরা সতর্ক করেছেন, বর্তমান এই গতি বজায় থাকলে, আগামী দিনগুলিতে ক্রিপ্টো টোকেনটি আরও নিম্ন স্তরে নেমে যেতে পারে।

এর আগে নভেম্বরের শুরুতে, ফেডারেল রিজার্ভের সতর্ক অবস্থানের কারণে বিটকয়েন প্রায় ১ লাখ ৭ হাজার ডলারে নেমে আসে, যা সর্বকালের সর্বোচ্চ স্তর থেকে প্রায় ১৫ শতাংশ কম ছিল। যদিও ফেড সুদের হার কমিয়েছে এবং ডিসেম্বরের মধ্যে পরিমাণগত কঠোরতা শিথিল করার ইঙ্গিত দিয়েছে। ফেড চেয়ার জেরোম পাওয়েল স্পষ্ট করে দেন, ডিসেম্বরে আরও একবার হার কমানোর নিশ্চয়তা নেই। এই সতর্কতাই বাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।

ব্লুমবার্গ বলেছে, এই বিক্রি বাজারে একটি মানসিক প্রভাব ফেলেছে: বিনিয়োগকারীরা এতটাই লোকসানে আছেন যে তারা আরও কেনার সাহস পাচ্ছেন না, আবার এখনই লোকসান কাটিয়ে উঠতে প্রস্তুতও নন। ডেটা-অ্যানালিটিক্স প্ল্যাটফর্ম কয়েনমার্কেটক্যাপ দ্বারা সংকলিত একটি সেন্টিমেন্ট ইনডেক্স নির্দেশ করে, ক্রিপ্টো ট্রেডাররা ‘চরম ভীতির’ মধ্যে আছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ