অনলাইন ডেস্ক
আইফোনের সরবরাহ শৃঙ্খলে বৈচিত্র্য আনার চেষ্টা করলেও এখন পর্যন্ত চীনের বিকল্প হিসেবে উপযুক্ত কোনো দেশ খুঁজে পায়নি অ্যাপল। উৎপাদনের ক্ষেত্রে চীনের দক্ষ জনশক্তি, সুসংগঠিত অবকাঠামো এবং দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা অ্যাপলকে দেশটির ওপর নির্ভরশীল হতে বাধ্য করেছে। এমন বাস্তবতায় সম্প্রতি কিছু ইলেকট্রনিক পণ্য, বিশেষ করে স্মার্টফোন ও কম্পিউটারে নতুন করে আরোপিত শুল্ক অব্যাহতি দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। ইউএস কাস্টমস অ্যান্ড বর্ডার প্রটেকশনের এক ঘোষণায় জানানো হয়, এসব পণ্য ট্রাম্পের ঘোষিত বৈশ্বিক ১০ শতাংশ এবং চীনের ওপর আরোপিত ১২৫ শতাংশ শুল্ক থেকে মুক্ত থাকবে। এই অব্যাহতির ফলে অ্যাপলের ওপর আপাতত চাপ কিছুটা কমলেও, দীর্ঘ মেয়াদে চীনের বিকল্প খোঁজার প্রয়োজনীয়তা থেকেই যাচ্ছে।
চীনের ওপর অ্যাপল নির্ভরশীল হচ্ছে যে কারণে
অতুলনীয় উৎপাদন ব্যবস্থা: চীনের শিল্প অবকাঠামো অতুলনীয়। শেনজেন ও ঝেংঝোর মতো শহরে বিশাল কারখানা (যেমন: ফক্সকনের ‘আইফোন সিটি’) রয়েছে, যেখানে প্রতি বছর কয়েক শ মিলিয়ন ডিভাইস উৎপাদন করা যায়। এই ব্যবস্থায় হাজার হাজার বিশেষায়িত সরবরাহকারী রয়েছে, যারা ডিসপ্লে, ব্যাটারি, সেন্সর ইত্যাদি সরবরাহ করে এবং এরা সবাই একে অপরের কাছাকাছি অবস্থিত।
আইফোন লঞ্চের সময় ও দ্রুত উৎপাদন বাড়ানোর ক্ষমতা চীনের বিশাল দক্ষ শ্রমিক এবং দক্ষ লজিস্টিক নেটওয়ার্কের ওপর নির্ভর করে। অন্য কোনো দেশ এই দক্ষতা ও গতির সঙ্গে পাল্লা দিতে পারে না।
উদাহরণস্বরূপ, শুধু ফক্সকনই চীনে লাখ লাখ শ্রমিক নিয়োগ করে এবং ব্যস্ত মৌসুমে দ্রুত আরও লোক নিয়োগ করে থাকে। এমন দক্ষ ও গতিশীল শ্রমশক্তি এবং সংগঠিত উৎপাদন কাঠামো অন্য কোথাও গড়ে তোলা বড় চ্যালেঞ্জ।
খরচের দক্ষতা: চীনে মজুরি বেড়েছে। ২০২৪ সালে গড়ে প্রতি ঘণ্টায় ৫-১০ ডলার মজুরি দিতে হতো, যা এক দশক আগে ১-২ ডলার ছিল। তবে এরপরও উৎপাদন খরচ ভারত, ভিয়েতনাম বা মেক্সিকোর তুলনায় কম। এর কারণ হলো—চীনে বড় পরিসরে উৎপাদনে খরচ কম পড়ে এবং দীর্ঘদিন ধরে কাজ করার ফলে সরবরাহকারীদের সঙ্গে অ্যাপলের ভালো সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। সেই সঙ্গে চীন সরকার নানা ধরনের সুবিধা দেয়। যেমন: কর ছাড় ও সস্তা জমি।
উৎপাদন স্থানান্তরের জন্য নতুন কারখানা গড়তে, কর্মীদের প্রশিক্ষণ দিতে এবং সরবরাহ ব্যবস্থাকে নতুন করে সাজাতে বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগের প্রয়োজন হয়। উদাহরণস্বরূপ, ভারতে কারখানা স্থাপনে নানা আমলাতান্ত্রিক জটিলতা, অনিয়মিত বিদ্যুৎ সরবরাহ এবং দুর্বল পরিবহন অবকাঠামোর কারণে খরচ আরও বেড়ে যায়।
গভীরভাবে সংযুক্ত সরবরাহকারী নেটওয়ার্ক: অ্যাপলের সরবরাহ চেইনে ২০০ টির বেশি প্রধান সরবরাহকারী রয়েছে, যাদের মধ্যে অনেকে (যেমন, বিওই টেকনোলজি, লাক্সশেয়ার প্রিসিশন) চীনে অবস্থিত। এই সরবরাহকারীরা একে অপরের সঙ্গে সংযুক্ত, ছোট স্ক্রু থেকে উন্নত চিপ পর্যন্ত সবকিছু সরবরাহ করে। এই নেটওয়ার্ক ভেঙে পড়লে তা অ্যাপলের ডিভাইস উৎপাদনকে ব্যাহত করবে এবং বছরের পর বছর ধরে সমন্বয়ের মাধ্যমে এই নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে হবে।
এমনকি অ্যাপল কিছু কারখানা বা উৎপাদন ব্যবস্থা অন্য দেশে সরিয়ে নিলেও গুরুত্বপূর্ণ উপাদান (যেমন, বিওই থেকে ওএলইডি ডিসপ্লে বা চীনে প্যাকেজ করা টিএসএমসি চিপ) চীন থেকে আসে, যা সরবরাহ চেইনকে চীনের সঙ্গে বেঁধে রাখে।
বিশেষায়িত দক্ষতা
দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতার কারণে চীনের শ্রমিকেরা নির্ভুলভাবে পণ্য উৎপাদন করে থাকে, যা অ্যাপলের জটিল পণ্য তৈরির জন্য অপরিহার্য। এই অভিজ্ঞতা তাদের দ্রুত সমস্যা সমাধান এবং কম ত্রুটিযুক্ত পণ্য উৎপাদন করতে সাহায্য করে। তবে, ভারত বা ভিয়েতনামের মতো দেশে কিছুটা উন্নতি হলেও দক্ষতার অভাব এখনো রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, ২০১৭ সালে কম অভিজ্ঞ শ্রমিকদের কারণে আইফোনের প্রথম ধাপে সংযোজনের ক্ষেত্রে ত্রুটির সংখ্যা বেশি ছিল, তবে তা এখন আগের চেয়ে উন্নত হয়েছে।
ভূ-রাজনৈতিক ও কৌশলগত ভারসাম্য: মার্কিন-চীন বাণিজ্য উত্তেজনা, শুল্ক (যেমন, ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে ইলেকট্রনিকসে ১০-২৫ শতাংশ শুল্ক) এবং কোভিড-১৯ লকডাউন (যেমন, ২০২২ সালে সাংহাইয়ে উৎপাদনে ব্যাঘাত)–এর কারণে উৎপাদন বৈচিত্র্য আনতে চাচ্ছে অ্যাপল। তবে, চীন থেকে দ্রুত বেরিয়ে গেলে চীন সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হতে পারে, যা অ্যাপলের বিশাল বাজার (২০২৪ সালে বিশ্বব্যাপী বিক্রয়ের মধ্যে চীনে ২০ শতাংশ বা প্রায় ৭০ বিলিয়ন ডলার) ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
তাই অ্যাপলের কৌশল হলো—ধীরে ধীরে বৈচিত্র্য আনা। ভারত এখন আইফোনের ১০-১৫ শতাংশ উৎপাদন করে (২০১৮ সালে যা ছিল ১ শতাংশ) এবং ফক্সকন ও উইস্ট্রন তামিলনাড়ুতে কারখানা চালাচ্ছে। ভিয়েতনামে এয়ারপড এবং কিছু ম্যাকবুক তৈরি হয়, আর থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়া ছোট ছোট উপাদান উৎপাদন করছে। তবে চীন এখনো আইফোন উৎপাদনের প্রায় ৮০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করে।
সময় ও বিনিয়োগের বাধা
উৎপাদন স্থানান্তরের জন্য বিলিয়ন ডলার ব্যয় এবং বছরের পর বছর পরিকল্পনা প্রয়োজন। উদাহরণস্বরূপ, ফক্সকন ২০১৭ সাল থেকে ভারতে ১০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে, যা আইফোন উৎপাদন কিছুটা বাড়িয়েছে। তবে শ্রমিকদের প্রশিক্ষণ, স্থিতিশীল বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা এবং স্থানীয় সরবরাহকারীদের নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা সময়সাপেক্ষ বিষয়।
এদিকে অ্যাপলের ‘জাস্ট-ইন-টাইম’ উৎপাদন মডেল চীনের জন্য তৈরি করা হয়েছে। এটি এমন এক পদ্ধতি, যেখানে উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় উপাদানগুলো শুধু তখনই আনা হয়, যখন তা প্রয়োজন। এর মাধ্যমে, অ্যাপল তাদের ইনভেনটরি বা মজুত কমিয়ে দক্ষতা বাড়ায় এবং উৎপাদন প্রক্রিয়াকে দ্রুত গতির হয় এবং খরচও কমে যায়।
এই মডেলটি চীনের অবকাঠামোর জন্য বিশেষভাবে তৈরি হয়েছে। কারণ চীনে রয়েছে অত্যন্ত উন্নত ও সুসংগঠিত সরবরাহ চেইন, দক্ষ শ্রমিক এবং দ্রুত সমন্বয়। তবে, যদি অ্যাপল অন্য কোনো দেশে উৎপাদন স্থানান্তর করতে চায়, তাহলে সেখানে এই একই মডেল কার্যকর করা কঠিন হতে পারে। কারণ, সেখানে অবকাঠামো, সরবরাহ চেইন এবং দক্ষ শ্রমিকের অভাব থাকতে পারে, যা উৎপাদন প্রক্রিয়ায় বিলম্ব বা গুণগত মানের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। বিকল্প অঞ্চল এই মডেল পুনর্গঠন করতে বিলম্ব বা গুণগত সমস্যার ঝুঁকি নিয়ে আসে।
বিকল্প খোঁজার বিষয়ে টিম কুক যা ভাবেন
এদিকে অ্যাপলের সিইও টিম কুক বারবার চীনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা স্বীকার করেছেন এবং বৈচিত্র্য আনার প্রচেষ্টার কথা বলেছেন। তিনি বলেন, ২০১৭ সালে ফরচুনের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে কুক বলেন, ‘চীনে উৎপাদনের জন্য একটি অবিশ্বাস্য ব্যবস্থা রয়েছে। এটি শুধু খরচ নয়; দক্ষতা এবং বিপুলসংখ্যক মানুষের সক্ষমতার বিষয়। এটি টুল, নির্ভুলতা, পেশাগত দক্ষতার একটি অনন্য সমন্বয়।’
২০১৯ সালে ব্লুমবার্গের সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমাদের পণ্যগুলোর জন্য উন্নত টুলের প্রয়োজন। এই টুলের পাশাপাশি আমরা যে উপকরণ ব্যবহার করি তা নির্ভুলতার বেশি ও অত্যাধুনিক। এই সক্ষমতা একমাত্র চীনে বিশেষভাবে রয়েছে।’
২০২২ সালের একটি আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশের সময় কুক বলেন, ‘আমরা সব সময় আমাদের সরবরাহ চেইনে বৈচিত্র্য আনার চেষ্টা করি। তাই আমরা ভারত, ভিয়েতনাম এবং এশিয়ার অন্যান্য অংশে উৎপাদন প্রসারিত করেছি। এটি চীন ছেড়ে যাওয়ার বিষয় নয়; এটি স্থিতিস্থাপকতা ও নমনীয়তা তৈরির বিষয়।’
২০২৩ সালে ভারতে একটি ইভেন্টে কুক মন্তব্য করেন, ‘ভারত একটি খুবই উত্তেজনাপূর্ণ বাজার এবং আমরা এখানে (আইফোন) উৎপাদন করছি এবং আমরা এটির সম্প্রসারণ চালিয়ে যাব।
২০২০ সালে মার্কিন-চীন বাণিজ্য উত্তেজনার মধ্যে ফক্স বিজনেসকে কুক বলেন, ‘আমরা একটি আন্তর্জাতিক কোম্পানি এবং আমরা কোনো এক জায়গার ওপর অতিরিক্ত নির্ভরশীল হতে চাই না। তবে সুইচ টিপে সরবরাহ চেইন সরানো যায় না—এটি একটি বহু বছরের যাত্রা।’
কুকের মন্তব্যগুলো একটি বাস্তববাদী দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিফলিত করে। চীনের উৎপাদন আধিপত্য শুধুমাত্র খরচের কারণে নয়, বরং দক্ষতার ভিত্তিতেও প্রতিষ্ঠিত। যদিও অ্যাপল বিকল্পে বিনিয়োগ করছে, তবে পুরোপুরি উৎপাদন স্থানান্তর করা বাস্তবসম্মত বা তাৎক্ষণিকভাবে সম্ভব নয়।
বৈচিত্র্যের বর্তমান অবস্থা: ২০২৪ সাল পর্যন্ত চীনের ওপর নির্ভরতা কমাতে অগ্রগতি অর্জন করেছে অ্যাপল। তবে এর গতি ধীর।
ভারত: ভারতে ১০-১৫ শতাংশ আইফোন উৎপাদন হয়। যেমন: আইফোন ১৪, আইফোন ৫ মডেল। এ ছাড়া ফক্সকন, উইস্ট্রন এবং পেগাট্রন তামিলনাড়ুতে কারখানা পরিচালনা করছে। ভারত সরকারের ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ প্রণোদনা (৬ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারের ভর্তুকি) সাহায্য করেছে। তবে শ্রম বিরোধ এবং অবকাঠামোর ঘাটতি অ্যাপলের জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে।
ভিয়েতনাম: এয়ারপড, অ্যাপল ওয়াচ এবং কিছু ম্যাকবুক এখানে সংযোজন করা হয়। গোয়েরটেক এবং লাক্সশেয়ার মতো সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো এখানে তাদের কার্যক্রম সম্প্রসারিত করেছে। তবে ভিয়েতনামের ছোট জনসংখ্যা (১০০ মিলিয়ন বনাম চীনের ১ দশমিক ৪ বিলিয়ন) উৎপাদন বাড়ানোর ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা সৃষ্টি করে।
অন্যান্য অঞ্চল: অন্যান্য অঞ্চল, যেমন মালয়েশিয়া এবং থাইল্যান্ড অ্যাপলের জন্য ছোট উপাদান উৎপাদন করে এবং ভবিষ্যতে মেক্সিকোতে সমাবেশের সম্ভাবনা পরীক্ষা করছে। তবে, এগুলো এখনো প্রাথমিক প্রচেষ্টা।
এসব পদক্ষেপ সত্ত্বেও অ্যাপলের উৎপাদনের মূল ভিত্তি চীন। উদাহরণস্বরূপ, ভারতে সংযোজন করা আইফোনগুলোও প্রায়শই চীন-নির্মিত উপাদান ব্যবহার করে এবং হাই-এন্ড মডেল (যেমন: আইফোন প্রো সিরিজ) এখনো প্রধানত চীনে তৈরি হয়। কারণ এগুলোর জটিলতা অনেক বেশি।
উৎপাদন ব্যবস্থা সম্পূর্ণ স্থানান্তরের জন্য প্রয়োজন
বিশাল বিনিয়োগ: চীনের মতো অবকাঠামো অন্যত্র তৈরি করতে এক দশকে ৫০-১০০ বিলিয়ন ডলার খরচ হতে পারে।
সময়: লাখ লাখ শ্রমিক প্রশিক্ষণ এবং স্থানীয় সরবরাহকারী স্থাপন করতে প্রতি অঞ্চলে ৫-১০ বছর লাগতে পারে।
বাজার ঝুঁকি: চীনের সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট করা অ্যাপলের সেখানকার বিক্রয় ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে, যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমান রাজস্ব দেয়।
গুণমান নিয়ন্ত্রণ: নতুন অঞ্চলগুলোকে চীনের মতো উচ্চ মান এবং সঠিকতা বজায় রাখতে হবে। যেমন চীনে আইফোন ডিসপ্লে তৈরি হলে ৯৯ শতাংশ নির্ভুলভাবে তৈরি হয়।
অ্যাপল চীনের বিকল্প খুঁজে পায়নি কারণ কোনো একক দেশ উৎপাদন ক্ষমতার তিনটি মূল উপাদান—পরিসর, দক্ষতা এবং গতি একসঙ্গে অর্জন করতে পারছে না। চীনের অনন্য সক্ষমতার গুরুত্ব তুলে ধরেছেন টিম কুক এবং ভারত, ভিয়েতনাম ও অন্যান্য অঞ্চলে সাবধানে প্রসারিত করে ঝুঁকি কমানোর চেষ্টা করছেন। তবে, বৈচিত্র্যকরণ একটি ধীর এবং ব্যয়বহুল প্রক্রিয়া, এবং চীনে দশকব্যাপী গড়ে ওঠা অ্যাপলের সরবরাহ চেইনের আধিপত্য ভূ-রাজনৈতিক চাপ সত্ত্বেও বছরের পর বছর ধরে অব্যাহত থাকবে।
আইফোনের সরবরাহ শৃঙ্খলে বৈচিত্র্য আনার চেষ্টা করলেও এখন পর্যন্ত চীনের বিকল্প হিসেবে উপযুক্ত কোনো দেশ খুঁজে পায়নি অ্যাপল। উৎপাদনের ক্ষেত্রে চীনের দক্ষ জনশক্তি, সুসংগঠিত অবকাঠামো এবং দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা অ্যাপলকে দেশটির ওপর নির্ভরশীল হতে বাধ্য করেছে। এমন বাস্তবতায় সম্প্রতি কিছু ইলেকট্রনিক পণ্য, বিশেষ করে স্মার্টফোন ও কম্পিউটারে নতুন করে আরোপিত শুল্ক অব্যাহতি দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। ইউএস কাস্টমস অ্যান্ড বর্ডার প্রটেকশনের এক ঘোষণায় জানানো হয়, এসব পণ্য ট্রাম্পের ঘোষিত বৈশ্বিক ১০ শতাংশ এবং চীনের ওপর আরোপিত ১২৫ শতাংশ শুল্ক থেকে মুক্ত থাকবে। এই অব্যাহতির ফলে অ্যাপলের ওপর আপাতত চাপ কিছুটা কমলেও, দীর্ঘ মেয়াদে চীনের বিকল্প খোঁজার প্রয়োজনীয়তা থেকেই যাচ্ছে।
চীনের ওপর অ্যাপল নির্ভরশীল হচ্ছে যে কারণে
অতুলনীয় উৎপাদন ব্যবস্থা: চীনের শিল্প অবকাঠামো অতুলনীয়। শেনজেন ও ঝেংঝোর মতো শহরে বিশাল কারখানা (যেমন: ফক্সকনের ‘আইফোন সিটি’) রয়েছে, যেখানে প্রতি বছর কয়েক শ মিলিয়ন ডিভাইস উৎপাদন করা যায়। এই ব্যবস্থায় হাজার হাজার বিশেষায়িত সরবরাহকারী রয়েছে, যারা ডিসপ্লে, ব্যাটারি, সেন্সর ইত্যাদি সরবরাহ করে এবং এরা সবাই একে অপরের কাছাকাছি অবস্থিত।
আইফোন লঞ্চের সময় ও দ্রুত উৎপাদন বাড়ানোর ক্ষমতা চীনের বিশাল দক্ষ শ্রমিক এবং দক্ষ লজিস্টিক নেটওয়ার্কের ওপর নির্ভর করে। অন্য কোনো দেশ এই দক্ষতা ও গতির সঙ্গে পাল্লা দিতে পারে না।
উদাহরণস্বরূপ, শুধু ফক্সকনই চীনে লাখ লাখ শ্রমিক নিয়োগ করে এবং ব্যস্ত মৌসুমে দ্রুত আরও লোক নিয়োগ করে থাকে। এমন দক্ষ ও গতিশীল শ্রমশক্তি এবং সংগঠিত উৎপাদন কাঠামো অন্য কোথাও গড়ে তোলা বড় চ্যালেঞ্জ।
খরচের দক্ষতা: চীনে মজুরি বেড়েছে। ২০২৪ সালে গড়ে প্রতি ঘণ্টায় ৫-১০ ডলার মজুরি দিতে হতো, যা এক দশক আগে ১-২ ডলার ছিল। তবে এরপরও উৎপাদন খরচ ভারত, ভিয়েতনাম বা মেক্সিকোর তুলনায় কম। এর কারণ হলো—চীনে বড় পরিসরে উৎপাদনে খরচ কম পড়ে এবং দীর্ঘদিন ধরে কাজ করার ফলে সরবরাহকারীদের সঙ্গে অ্যাপলের ভালো সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। সেই সঙ্গে চীন সরকার নানা ধরনের সুবিধা দেয়। যেমন: কর ছাড় ও সস্তা জমি।
উৎপাদন স্থানান্তরের জন্য নতুন কারখানা গড়তে, কর্মীদের প্রশিক্ষণ দিতে এবং সরবরাহ ব্যবস্থাকে নতুন করে সাজাতে বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগের প্রয়োজন হয়। উদাহরণস্বরূপ, ভারতে কারখানা স্থাপনে নানা আমলাতান্ত্রিক জটিলতা, অনিয়মিত বিদ্যুৎ সরবরাহ এবং দুর্বল পরিবহন অবকাঠামোর কারণে খরচ আরও বেড়ে যায়।
গভীরভাবে সংযুক্ত সরবরাহকারী নেটওয়ার্ক: অ্যাপলের সরবরাহ চেইনে ২০০ টির বেশি প্রধান সরবরাহকারী রয়েছে, যাদের মধ্যে অনেকে (যেমন, বিওই টেকনোলজি, লাক্সশেয়ার প্রিসিশন) চীনে অবস্থিত। এই সরবরাহকারীরা একে অপরের সঙ্গে সংযুক্ত, ছোট স্ক্রু থেকে উন্নত চিপ পর্যন্ত সবকিছু সরবরাহ করে। এই নেটওয়ার্ক ভেঙে পড়লে তা অ্যাপলের ডিভাইস উৎপাদনকে ব্যাহত করবে এবং বছরের পর বছর ধরে সমন্বয়ের মাধ্যমে এই নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে হবে।
এমনকি অ্যাপল কিছু কারখানা বা উৎপাদন ব্যবস্থা অন্য দেশে সরিয়ে নিলেও গুরুত্বপূর্ণ উপাদান (যেমন, বিওই থেকে ওএলইডি ডিসপ্লে বা চীনে প্যাকেজ করা টিএসএমসি চিপ) চীন থেকে আসে, যা সরবরাহ চেইনকে চীনের সঙ্গে বেঁধে রাখে।
বিশেষায়িত দক্ষতা
দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতার কারণে চীনের শ্রমিকেরা নির্ভুলভাবে পণ্য উৎপাদন করে থাকে, যা অ্যাপলের জটিল পণ্য তৈরির জন্য অপরিহার্য। এই অভিজ্ঞতা তাদের দ্রুত সমস্যা সমাধান এবং কম ত্রুটিযুক্ত পণ্য উৎপাদন করতে সাহায্য করে। তবে, ভারত বা ভিয়েতনামের মতো দেশে কিছুটা উন্নতি হলেও দক্ষতার অভাব এখনো রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, ২০১৭ সালে কম অভিজ্ঞ শ্রমিকদের কারণে আইফোনের প্রথম ধাপে সংযোজনের ক্ষেত্রে ত্রুটির সংখ্যা বেশি ছিল, তবে তা এখন আগের চেয়ে উন্নত হয়েছে।
ভূ-রাজনৈতিক ও কৌশলগত ভারসাম্য: মার্কিন-চীন বাণিজ্য উত্তেজনা, শুল্ক (যেমন, ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে ইলেকট্রনিকসে ১০-২৫ শতাংশ শুল্ক) এবং কোভিড-১৯ লকডাউন (যেমন, ২০২২ সালে সাংহাইয়ে উৎপাদনে ব্যাঘাত)–এর কারণে উৎপাদন বৈচিত্র্য আনতে চাচ্ছে অ্যাপল। তবে, চীন থেকে দ্রুত বেরিয়ে গেলে চীন সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হতে পারে, যা অ্যাপলের বিশাল বাজার (২০২৪ সালে বিশ্বব্যাপী বিক্রয়ের মধ্যে চীনে ২০ শতাংশ বা প্রায় ৭০ বিলিয়ন ডলার) ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
তাই অ্যাপলের কৌশল হলো—ধীরে ধীরে বৈচিত্র্য আনা। ভারত এখন আইফোনের ১০-১৫ শতাংশ উৎপাদন করে (২০১৮ সালে যা ছিল ১ শতাংশ) এবং ফক্সকন ও উইস্ট্রন তামিলনাড়ুতে কারখানা চালাচ্ছে। ভিয়েতনামে এয়ারপড এবং কিছু ম্যাকবুক তৈরি হয়, আর থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়া ছোট ছোট উপাদান উৎপাদন করছে। তবে চীন এখনো আইফোন উৎপাদনের প্রায় ৮০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করে।
সময় ও বিনিয়োগের বাধা
উৎপাদন স্থানান্তরের জন্য বিলিয়ন ডলার ব্যয় এবং বছরের পর বছর পরিকল্পনা প্রয়োজন। উদাহরণস্বরূপ, ফক্সকন ২০১৭ সাল থেকে ভারতে ১০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে, যা আইফোন উৎপাদন কিছুটা বাড়িয়েছে। তবে শ্রমিকদের প্রশিক্ষণ, স্থিতিশীল বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা এবং স্থানীয় সরবরাহকারীদের নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা সময়সাপেক্ষ বিষয়।
এদিকে অ্যাপলের ‘জাস্ট-ইন-টাইম’ উৎপাদন মডেল চীনের জন্য তৈরি করা হয়েছে। এটি এমন এক পদ্ধতি, যেখানে উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় উপাদানগুলো শুধু তখনই আনা হয়, যখন তা প্রয়োজন। এর মাধ্যমে, অ্যাপল তাদের ইনভেনটরি বা মজুত কমিয়ে দক্ষতা বাড়ায় এবং উৎপাদন প্রক্রিয়াকে দ্রুত গতির হয় এবং খরচও কমে যায়।
এই মডেলটি চীনের অবকাঠামোর জন্য বিশেষভাবে তৈরি হয়েছে। কারণ চীনে রয়েছে অত্যন্ত উন্নত ও সুসংগঠিত সরবরাহ চেইন, দক্ষ শ্রমিক এবং দ্রুত সমন্বয়। তবে, যদি অ্যাপল অন্য কোনো দেশে উৎপাদন স্থানান্তর করতে চায়, তাহলে সেখানে এই একই মডেল কার্যকর করা কঠিন হতে পারে। কারণ, সেখানে অবকাঠামো, সরবরাহ চেইন এবং দক্ষ শ্রমিকের অভাব থাকতে পারে, যা উৎপাদন প্রক্রিয়ায় বিলম্ব বা গুণগত মানের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। বিকল্প অঞ্চল এই মডেল পুনর্গঠন করতে বিলম্ব বা গুণগত সমস্যার ঝুঁকি নিয়ে আসে।
বিকল্প খোঁজার বিষয়ে টিম কুক যা ভাবেন
এদিকে অ্যাপলের সিইও টিম কুক বারবার চীনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা স্বীকার করেছেন এবং বৈচিত্র্য আনার প্রচেষ্টার কথা বলেছেন। তিনি বলেন, ২০১৭ সালে ফরচুনের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে কুক বলেন, ‘চীনে উৎপাদনের জন্য একটি অবিশ্বাস্য ব্যবস্থা রয়েছে। এটি শুধু খরচ নয়; দক্ষতা এবং বিপুলসংখ্যক মানুষের সক্ষমতার বিষয়। এটি টুল, নির্ভুলতা, পেশাগত দক্ষতার একটি অনন্য সমন্বয়।’
২০১৯ সালে ব্লুমবার্গের সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমাদের পণ্যগুলোর জন্য উন্নত টুলের প্রয়োজন। এই টুলের পাশাপাশি আমরা যে উপকরণ ব্যবহার করি তা নির্ভুলতার বেশি ও অত্যাধুনিক। এই সক্ষমতা একমাত্র চীনে বিশেষভাবে রয়েছে।’
২০২২ সালের একটি আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশের সময় কুক বলেন, ‘আমরা সব সময় আমাদের সরবরাহ চেইনে বৈচিত্র্য আনার চেষ্টা করি। তাই আমরা ভারত, ভিয়েতনাম এবং এশিয়ার অন্যান্য অংশে উৎপাদন প্রসারিত করেছি। এটি চীন ছেড়ে যাওয়ার বিষয় নয়; এটি স্থিতিস্থাপকতা ও নমনীয়তা তৈরির বিষয়।’
২০২৩ সালে ভারতে একটি ইভেন্টে কুক মন্তব্য করেন, ‘ভারত একটি খুবই উত্তেজনাপূর্ণ বাজার এবং আমরা এখানে (আইফোন) উৎপাদন করছি এবং আমরা এটির সম্প্রসারণ চালিয়ে যাব।
২০২০ সালে মার্কিন-চীন বাণিজ্য উত্তেজনার মধ্যে ফক্স বিজনেসকে কুক বলেন, ‘আমরা একটি আন্তর্জাতিক কোম্পানি এবং আমরা কোনো এক জায়গার ওপর অতিরিক্ত নির্ভরশীল হতে চাই না। তবে সুইচ টিপে সরবরাহ চেইন সরানো যায় না—এটি একটি বহু বছরের যাত্রা।’
কুকের মন্তব্যগুলো একটি বাস্তববাদী দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিফলিত করে। চীনের উৎপাদন আধিপত্য শুধুমাত্র খরচের কারণে নয়, বরং দক্ষতার ভিত্তিতেও প্রতিষ্ঠিত। যদিও অ্যাপল বিকল্পে বিনিয়োগ করছে, তবে পুরোপুরি উৎপাদন স্থানান্তর করা বাস্তবসম্মত বা তাৎক্ষণিকভাবে সম্ভব নয়।
বৈচিত্র্যের বর্তমান অবস্থা: ২০২৪ সাল পর্যন্ত চীনের ওপর নির্ভরতা কমাতে অগ্রগতি অর্জন করেছে অ্যাপল। তবে এর গতি ধীর।
ভারত: ভারতে ১০-১৫ শতাংশ আইফোন উৎপাদন হয়। যেমন: আইফোন ১৪, আইফোন ৫ মডেল। এ ছাড়া ফক্সকন, উইস্ট্রন এবং পেগাট্রন তামিলনাড়ুতে কারখানা পরিচালনা করছে। ভারত সরকারের ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ প্রণোদনা (৬ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারের ভর্তুকি) সাহায্য করেছে। তবে শ্রম বিরোধ এবং অবকাঠামোর ঘাটতি অ্যাপলের জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে।
ভিয়েতনাম: এয়ারপড, অ্যাপল ওয়াচ এবং কিছু ম্যাকবুক এখানে সংযোজন করা হয়। গোয়েরটেক এবং লাক্সশেয়ার মতো সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো এখানে তাদের কার্যক্রম সম্প্রসারিত করেছে। তবে ভিয়েতনামের ছোট জনসংখ্যা (১০০ মিলিয়ন বনাম চীনের ১ দশমিক ৪ বিলিয়ন) উৎপাদন বাড়ানোর ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা সৃষ্টি করে।
অন্যান্য অঞ্চল: অন্যান্য অঞ্চল, যেমন মালয়েশিয়া এবং থাইল্যান্ড অ্যাপলের জন্য ছোট উপাদান উৎপাদন করে এবং ভবিষ্যতে মেক্সিকোতে সমাবেশের সম্ভাবনা পরীক্ষা করছে। তবে, এগুলো এখনো প্রাথমিক প্রচেষ্টা।
এসব পদক্ষেপ সত্ত্বেও অ্যাপলের উৎপাদনের মূল ভিত্তি চীন। উদাহরণস্বরূপ, ভারতে সংযোজন করা আইফোনগুলোও প্রায়শই চীন-নির্মিত উপাদান ব্যবহার করে এবং হাই-এন্ড মডেল (যেমন: আইফোন প্রো সিরিজ) এখনো প্রধানত চীনে তৈরি হয়। কারণ এগুলোর জটিলতা অনেক বেশি।
উৎপাদন ব্যবস্থা সম্পূর্ণ স্থানান্তরের জন্য প্রয়োজন
বিশাল বিনিয়োগ: চীনের মতো অবকাঠামো অন্যত্র তৈরি করতে এক দশকে ৫০-১০০ বিলিয়ন ডলার খরচ হতে পারে।
সময়: লাখ লাখ শ্রমিক প্রশিক্ষণ এবং স্থানীয় সরবরাহকারী স্থাপন করতে প্রতি অঞ্চলে ৫-১০ বছর লাগতে পারে।
বাজার ঝুঁকি: চীনের সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট করা অ্যাপলের সেখানকার বিক্রয় ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে, যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমান রাজস্ব দেয়।
গুণমান নিয়ন্ত্রণ: নতুন অঞ্চলগুলোকে চীনের মতো উচ্চ মান এবং সঠিকতা বজায় রাখতে হবে। যেমন চীনে আইফোন ডিসপ্লে তৈরি হলে ৯৯ শতাংশ নির্ভুলভাবে তৈরি হয়।
অ্যাপল চীনের বিকল্প খুঁজে পায়নি কারণ কোনো একক দেশ উৎপাদন ক্ষমতার তিনটি মূল উপাদান—পরিসর, দক্ষতা এবং গতি একসঙ্গে অর্জন করতে পারছে না। চীনের অনন্য সক্ষমতার গুরুত্ব তুলে ধরেছেন টিম কুক এবং ভারত, ভিয়েতনাম ও অন্যান্য অঞ্চলে সাবধানে প্রসারিত করে ঝুঁকি কমানোর চেষ্টা করছেন। তবে, বৈচিত্র্যকরণ একটি ধীর এবং ব্যয়বহুল প্রক্রিয়া, এবং চীনে দশকব্যাপী গড়ে ওঠা অ্যাপলের সরবরাহ চেইনের আধিপত্য ভূ-রাজনৈতিক চাপ সত্ত্বেও বছরের পর বছর ধরে অব্যাহত থাকবে।
মাত্র তিন মাস আগে নতুন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মডেল আর ১ উন্মোচন করে চীনের কোম্পানি ডিপসিক। এরই মধ্যে মডেলটি বিভিন্ন সেবা ও পণ্যে ব্যাপকভাবে প্রয়োগ করা করেছে। বিশেষ করে চীনে দেশপ্রেম ও প্রযুক্তিগত আত্মবিশ্বাসের প্রতীক হয়ে উঠেছে এই মডেল। তবে সবচেয়ে আলোচিত ও উদ্বেগজনক দিক হলো—চীন সরকারের নজরদারি...
২২ মিনিট আগেঅ্যাপল হয়তো বড় কোনো প্রতিপক্ষের মুখোমুখি হতে যাচ্ছে। এবার নতুন এক হুমকি আসছে ওপেনএআই-এর দিক থেকে। কারণ স্ক্রিনবিহীন এআই প্রযুক্তির ফোন তৈরি করতে পারে ওপেনএআই। আর এই ফোন তৈরির প্রকল্পে সম্ভবত বিনিয়োগ করেছেন স্টিভ জবসের স্ত্রী লরিন পাওয়েল জবস।
২ ঘণ্টা আগেচলতি বছরের সেপ্টেম্বরে আইফোন ১৭ প্রো এবং আইফোন ১৭ প্রো ম্যাক্স মডেল উন্মোচন করতে পারে অ্যাপল। তবে ইতিমধ্যেই এসব ডিভাইস নিয়ে অনেক গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে। প্রযুক্তি বিশ্লেষক ও নির্ভরযোগ্য সূত্রগুলোর মতে, এই ডিভাইসগুলোতে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আসতে পারে।
৩ ঘণ্টা আগেসামাজিক যোগাযোগমাধ্যম জায়ান্ট মেটার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ট্রেড কমিশনের (এফটিসি) অ্যান্টিট্রাস্ট মামলার বিচার শুরু হয়েছে গতকাল সোমবার। মামলাটি অভিযোগ হলো—প্রতিযোগিতা এড়াতে ইচ্ছাকৃতভাবে এক দশক আগে ইনস্টাগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপ কিনে নিয়ে বাজারে একচেটিয়া আধিপত্য তৈরি করেছে মেটা। এই অভিযোগ
৫ ঘণ্টা আগে