Ajker Patrika

৭৪ কোটি ১০ লাখ ডলারের বিটকয়েন খুঁজতে পুরো ভাগাড় কিনছেন এক ব্রিটিশ

অনলাইন ডেস্ক    
আপডেট : ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২: ১৬
বিটকয়েনগুলো ফিরে পেতে ভাগাড় কিনবেন জেমস হাওয়েলস। ছবি: সংগৃহীত
বিটকয়েনগুলো ফিরে পেতে ভাগাড় কিনবেন জেমস হাওয়েলস। ছবি: সংগৃহীত

নিজের প্রেমিকার ভুলের কারণে ৭৪ কোটি ১০ লাখ ডলারের বিটকয়েন সংবলিত হার্ডড্রাইভ ভাগাড়ে হারানোর দাবি করছেন যুক্তরাজ্যের এক ব্যক্তি। তবে হারানো হার্ডড্রাইভটি এই ভাগাড়ে খোঁজার আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন আদালত। এখন, সেই হারানো বিটকয়েনের ‘কি’ ফিরে পেতে নিউপোর্ট কাউন্সিল পরিচালিত ভাগাড়টি কেনার পরিকল্পনা করছেন তিনি।

দক্ষিণ ওয়েলসের নিউপোর্ট শহরের বাসিন্দা জেমস হাওয়েলস। তিনি দাবি করেছেন, ২০১৩ সালে ভুল করে বিটকয়েন সংবলিত হার্ডড্রাইভটি কাউন্সিলের আবর্জনার স্তূপে ফেলে দেন তাঁর প্রাক্তন প্রেমিকা। তাঁর মতে, বর্তমানে এই বিটকয়েনগুলোর মূল্য ৬০০ মিলিয়ন পাউন্ডেরও বেশি।

উল্লেখ্য, বর্তমানে এক বিটকয়েনের মূল্য প্রায় ৯৮ হাজার ১৬১ ডলার।

এদিকে নিউপোর্ট সিটি কাউন্সিল জানিয়ে দিয়েছে যে, তারা ২০২৫-২৬ অর্থবছরে এই সাইট বন্ধ করে দেবে, ফলে হারানো বিটকয়েন উদ্ধারের সম্ভাবনা শেষ হয়ে যাবে। এখন তিনি ভাগাড়টি কিনে নেওয়ার পরিকল্পনা করছেন, যাতে নিজেই সেখানে খুঁজে দেখতে পারেন হারানো সম্পদ।

হাওয়েলস সোমবার এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে জানান, কাউন্সিলের বন্ধ করার পরিকল্পনা শুনে তিনি ‘বিপদে পড়েছেন’। তিনি বলেন, ‘আমি জানতাম যে এটি কয়েক বছরের মধ্যে বন্ধ হতে পারে, কারণ এটি ৮০-৯০ শতাংশ পূর্ণ। তবে এত তাড়াতাড়ি বন্ধ হওয়ার খবর আমাকে অবাক করেছে।’

গত মাসে দায়ের করা মামলা খারিজ করে দেন একজন বিচারক। এই মামলার মাধ্যমে ভাগাড়টি খুঁজে দেখার অনুমতি দিতে কাউন্সিলকে বাধ্য করতে চেয়েছিলেন তিনি। নতুবা তাঁকে ৪৯৫ মিলিয়ন পাউন্ড ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

bitcoin

হাওয়েলস বলেন, কাউন্সিল আদালতে দাবি করেছে যে, ভাগাড়টি খুঁজে দেখার অনুমতি দিলে তা ‘নিউপোর্টের মানুষের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে। অথচ তারা এটি বন্ধ করতে চাইছে।

তিনি আরও বলেন, ‘যদি নিউপোর্ট সিটি কাউন্সিল প্রস্তুত থাকে, আমি ল্যান্ডফিল্ড সাইটটি (ভাগাড়) কিনতে আগ্রহী এবং এ বিষয়ে আমি বিনিয়োগে অংশীদারদের সঙ্গে আলোচনা করেছি।’

২০০৯ সালে ১০ সপ্তাহ মাইন করে ৮ হাজার বিটকয়েন পেয়েছিলেন হাউয়েলস। তবে এর মূল্য এত বাড়বে, সেটি ভাবতে পারেননি তিনি। তাঁর সঙ্গীর অভিযোগের কারণে মাইনিং বন্ধ করতে হয়েছিল তাঁকে। কারণ তিনি তাঁর ল্যাপটপটি বেডরুমে রেখে কাজ করতেন এবং এর ফ্যানের তীব্র শব্দ তাঁর সঙ্গীর ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাত।

জেমস হাওয়েলস। ছবি: সংগৃহীত
জেমস হাওয়েলস। ছবি: সংগৃহীত

এরপর একদিন হাউয়েলস লেবুর শরবতের গ্লাস তাঁর ল্যাপটপের ওপর ফেলে দেন এবং ডিভাইসটি নষ্ট হয়ে যায়। এ জন্য ল্যাপটপের যন্ত্রাংশ বিক্রি করে দেন এবং হার্ডড্রাইভটি নিজের কাছে রেখে দেন। এই হার্ডড্রাইভে তাঁর সমস্ত ছবি, মিউজিক ও বিটকয়েন ছিল। হার্ডড্রাইভে থাকা বিটকয়েনের পাসওয়ার্ড সংবলিত ছোট ফাইলটি তিনি অ্যাপল কম্পিউটারে কপি করতে পারেননি। কারণ এটি অ্যাপলের অপারেটিং সিস্টেমের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল না। পরে তিনি হার্ডড্রাইভটি এক জায়গায় রেখে দেন এবং পরবর্তী তিন বছর ধরে এর কথা ভুলে যান। কারণ তখন তিনি কাজ ও পারিবারিক জীবনে ব্যস্ত ছিলেন।

জেমস হাউয়েলসের হার্ড ড্রাইভ ওয়েলসের একটি ভাগাড়ে ফেলে দেন প্রাক্তন প্রেমিকা হাফিনা এডি-এভান্স। তবে তিনি দাবি করেন যে, তাঁর প্রাক্তন বয়ফ্রেন্ডের অনুরোধে কাজটি করেছিলেন।

হাফিনা বলেন, ‘আমি জানতাম না এতে কী ছিল, তবে আমি সাহায্য করতে গিয়ে এটি ফেলে দিয়েছিলাম। এটি আমার দোষ ছিল না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি চাই সে এটি খুঁজে পাক, তবে আমি তার টাকা চাই না। যদি সে এটি খুঁজে পায়, তবে অন্তত সে আমার কাছে এটি নিয়ে আর কথা বলবে না!’

তথ্যসূত্র: স্কাই নিউজ ও ডেইলি মেইল

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত