Ajker Patrika

২৫ বছর পর পাকিস্তানে কার্যক্রম বন্ধ করল মাইক্রোসফট

অনলাইন ডেস্ক
এই বন্ধের সিদ্ধান্তটি মাইক্রোসফটের সামগ্রিক পুনর্গঠন প্রক্রিয়ার অংশ। ছবি: সিনেট
এই বন্ধের সিদ্ধান্তটি মাইক্রোসফটের সামগ্রিক পুনর্গঠন প্রক্রিয়ার অংশ। ছবি: সিনেট

পাকিস্তানে ২৫ বছরের কার্যক্রমের ইতি টানল যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান মাইক্রোসফট। দেশটিতে স্থানীয় কার্যক্রম বন্ধ করে এখন থেকে আঞ্চলিক অফিস ও অনুমোদিত বিক্রেতাদের মাধ্যমে দূর থেকে সেবা দেবে মাইক্রোসফট।

গত শুক্রবার (৫ জুন) এক বিবৃতিতে মাইক্রোসফট জানায়, তারা পাকিস্তানে তাদের অপারেশনাল মডেল পরিবর্তন করছে। প্রতিষ্ঠানটির একজন মুখপাত্র বলেন, এই পরিবর্তনের ফলে আমাদের গ্রাহকদের সঙ্গে করা চুক্তি ও সেবায় কোনো প্রভাব পড়বে না। আমরা বিশ্বের অনেক দেশে এই মডেল সফলভাবে অনুসরণ করছি। আমাদের গ্রাহেকেরাই সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার এবং তারা আগের মতোই উন্নতমানের সেবা পেতে থাকবেন।’

মাইক্রোসফটের এই সিদ্ধান্তে পাকিস্তানে কর্মরত মাত্র পাঁচজন কর্মীর ওপর প্রভাব পড়বে বলে জানিয়েছে প্রযুক্তিবিষয়ক ওয়েবসাইট টেকক্রাঞ্চ। প্রতিষ্ঠানটি পাকিস্তানে কোনো প্রকৌশল (ইঞ্জিনিয়ারিং) কার্যক্রম পরিচালনা করত না, বরং কর্মীরা মূলত আজ্যুর (Azure) ও অফিস (Office) পণ্য বিক্রির দায়িত্বে ছিলেন।

এই বন্ধের সিদ্ধান্তটি মাইক্রোসফটের সামগ্রিক পুনর্গঠন প্রক্রিয়ার অংশ। পাকিস্তানের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় একে ‘ওয়ার্কফোর্স অপটিমাইজেশন প্রোগ্রামের’ অংশ হিসেবে উল্লেখ করেছে। গত সপ্তাহেই মাইক্রোসফট বিশ্বব্যাপী প্রায় ৯ হাজার কর্মী ছাঁটাই করেছে, যা মোট কর্মীশক্তির ৪ শতাংশ।

গত কয়েক বছর ধরে পাকিস্তান থেকে ধাপে ধাপে তাদের কার্যক্রম ইউরোপীয় হাব আয়ারল্যান্ডে সরিয়ে নিচ্ছিল মাইক্রোসফট। সেখান থেকেই এখন বাণিজ্যিক চুক্তি ও লাইসেন্স ব্যবস্থাপনা পরিচালিত হবে। এ ছাড়া দেশীয় সার্টিফায়েড অংশীদারদের মাধ্যমেই দৈনন্দিন সেবা দেওয়া হচ্ছিল বলে জানায় মন্ত্রণালয়।

তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘আমরা মাইক্রোসফটের আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক নেতৃত্বের সঙ্গে সংলাপ চালিয়ে যাব, যাতে এই কাঠামোগত পরিবর্তন মাইক্রোসফটের দীর্ঘমেয়াদি অঙ্গীকারকে আরও দৃঢ় করে এবং পাকিস্তানি গ্রাহক, ডেভেলপার ও চ্যানেল পার্টনারদের জন্য মঙ্গলজনক হয়।’

গত বৃহস্পতিবার এক লিংকডইন পোস্টে প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম বন্ধের সংবাদটি জানান মাইক্রোসফট পাকিস্তানের প্রথম কান্ট্রি লিড ও সাবেক নির্বাহী জাওয়াদ রেহমান।

তিনি লেখেন, ‘এটা কেবল করপোরেট প্রস্থান নয়, এটি আমাদের দেশের তৈরি করা পরিবেশের একটি কঠিন বাস্তবতা। এমন এক পরিস্থিতি, যেখানে মাইক্রোসফটের মতো বিশ্বজয়ী প্রতিষ্ঠানও টিকে থাকতে পারে না। এটি আমাদের রেখে যাওয়া মজবুত ভিত্তির সদ্ব্যবহার বা অপব্যবহার—উভয়েরই প্রতিচ্ছবি।’

মাইক্রোসফটের এই সিদ্ধান্ত এমন এক সময়ে এল, যখন পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকার গুগল ও মাইক্রোসফটসহ শীর্ষ প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠানের সার্টিফিকেশন অর্জনের সুযোগ দিতে অর্ধলক্ষ তরুণ–তরুণীকে প্রশিক্ষণের উদ্যোগ ঘোষণা করেছে।

মাইক্রোসফটের এই পদক্ষেপ গুগলের সম্পূর্ণ বিপরীত। গত বছর পাকিস্তানের সরকারি শিক্ষা খাতে ১ কোটি ৫ লাখ ডলার বিনিয়োগ করে এবং ২০২৬ সালের মধ্যে দেশটিতে অর্ধলক্ষ ক্রোমবুক উৎপাদনের পরিকল্পনাও জানায় গুগল।

মাইক্রোসফটের বিদায় পাকিস্তানের সামগ্রিক প্রযুক্তি খাতের চ্যালেঞ্জের প্রতিফলন। ভারত বা অন্যান্য আঞ্চলিক দেশের মতো পাকিস্তান এখনো পশ্চিমা প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য বড় আউটসোর্সিং গন্তব্য হয়ে উঠতে পারেনি। বরং দেশটির প্রযুক্তির বাজারে প্রধানত দুই ধরনের প্রতিষ্ঠানের আধিপত্য—স্থানীয় উদ্যোক্তাদের তৈরি ইঞ্জিনিয়ারিং দক্ষতাসম্পন্ন কোম্পানি এবং হুয়াওয়ের মতো চীনা প্রতিষ্ঠান, যারা টেলিযোগাযোগ ও ব্যাংক খাতে উন্নত অবকাঠামো সরবরাহ করে প্রভাব বিস্তার করেছে।

তথ্যসূত্র: টেকক্রাঞ্চ

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বদলির আদেশ ছিঁড়ে বরখাস্ত হলেন এনবিআরের ১৪ কর্মকর্তা

দরপত্র ছাড়াই জুলাই স্মৃতি জাদুঘরের কাজ পেল দুই প্রতিষ্ঠান, এরা কারা

বাংলাদেশের সোনালি মুরগিতে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়া: গবেষণা

ট্রাকে করে ৪৩ হাজার পৃষ্ঠার নথি ইসিতে জমা দিয়েও নিবন্ধন পেল না এনসিপি

প্রেক্ষাপটবিহীন প্রতিবেদন কি সাংবাদিকতা হতে পারে?

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত