Ajker Patrika

জাপানের ৮৫ শতাংশ বিদ্যুৎ চাহিদা মেটাবে ছাদের সোলার প্যানেল: গবেষণা

অনলাইন ডেস্ক
সোলার প্যানেল একাই জাপানের মোট বিদ্যুৎ চাহিদার ৪৫ শতাংশ জোগান দিতে পারে ছবি: জাপান টাইমস
সোলার প্যানেল একাই জাপানের মোট বিদ্যুৎ চাহিদার ৪৫ শতাংশ জোগান দিতে পারে ছবি: জাপান টাইমস

জাপানের অধিকাংশ ছাদে সোলার প্যানেল স্থাপন করা হলে এবং বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যাটারি ঘরোয়া বিদ্যুৎ সঞ্চয় ও ব্যবস্থাপনায় ব্যবহার করা গেলে দেশটির ৮৫ শতাংশ বিদ্যুৎ চাহিদা এই ব্যবস্থা থেকেই পূরণ করা সম্ভব। সম্প্রতি তোহোকু বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতৃত্বে পরিচালিত এক গবেষণায় এই সম্ভাবনার কথা জানানো হয়েছে।

এই ব্যবস্থা চালু হলে জাপানের কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসারণ ৮৭ শতাংশ পর্যন্ত কমানো সম্ভব হবে বলেও গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে। এতে পরিবেশবান্ধব ভবিষ্যতের পথে বড় এক অগ্রগতির ইঙ্গিত পাওয়া যায়।

জাপানে বড় আকারের সৌর বা বায়ুবিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ে তোলা বেশ কঠিন। এর প্রধান কারণ, দেশটির পাহাড়ি ভূখণ্ড ও সীমিত খালি জায়গা। তবে দেশটিতে ছাদ আছে প্রচুর—৮ হাজার বর্গকিলোমিটারেরও বেশি। এ ছাড়া ইলেকট্রিক গাড়ির ব্যবহার বাড়ায় এই সম্ভাবনা আরও বিস্তৃত হয়েছে।

গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে ‘অ্যাপ্লাইড এনার্জি’ নামক আন্তর্জাতিক গবেষণা সাময়িকীতে। এতে গবেষণায় বিশ্লেষণ করা হয়েছে, যদি জাপানের ৭০ শতাংশ ছাদে সৌর প্যানেল স্থাপন করা হয় এবং প্রতিটি ইভি ব্যাটারির গড়ে ৪০ কিলোওয়াট-ঘণ্টা ক্ষমতার অর্ধেক অংশ গ্রিডে ব্যবহারের জন্য বরাদ্দ করা যায়, তাহলে এতে কী পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হবে।

গবেষণায় দেখা যায়, সোলার প্যানেল একাই জাপানের মোট বিদ্যুৎ চাহিদার ৪৫ শতাংশ জোগান দিতে পারে। তবে যখন তা ইভি ব্যাটারির সঙ্গে যুক্ত হয়, তখন তা ৮৫ শতাংশে পৌঁছে যায়।

গবেষকেরা বলেন, এই ব্যবস্থায় যতটা বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে, তা ২০২২ সালে জাপানে উৎপাদিত মোট বিদ্যুৎকেও ছাড়িয়ে যাবে। এই উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে শুধু কার্বন নিঃসারণ নয়, ২০৩০ সালের মধ্যে বিদ্যুৎ খরচও এক-তৃতীয়াংশ কমে আসবে বলে গবেষণায় দেখা গেছে।

গ্রামীণ এলাকায় ছাদের পরিমাণ বেশি হওয়ায় অনেক জায়গায় স্থানীয় চাহিদার চেয়েও বেশি বিদ্যুৎ উৎপন্ন হবে। অবশ্য শহরাঞ্চলে, বিশেষ করে টোকিওতে, ঘনবসতির কারণে প্রত্যেকের জন্য যথেষ্ট ছাদ বা গাড়ি না থাকায় পুরো চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে না। তবু ইভি ব্যাটারির কারণে শহরবাসীও ব্যয় কমানো ও বিদ্যুৎ ব্যবহারে নমনীয়তার সুবিধা পাবে।

গবেষণার প্রধান গবেষক তাকুরো কোবায়াশি জানান, তাঁদের লক্ষ্য ছিল নীতিনির্ধারকদের হাতে বৈজ্ঞানিক, তথ্যভিত্তিক পরামর্শ তুলে ধরা। বর্তমানে জাপানে সোলার প্যানেল ও ইভির জন্য কিছু ভর্তুকি থাকলেও তা যথেষ্ট নয় বলে মনে করেন তিনি। বিশেষ করে ‘ভেহিকেল টু হোম (ভি ২ এইচ) ’ এবং ‘ভেহিকেল টু গ্রিড (ভি ২ জি)’ প্রযুক্তির জন্য চার্জিং অবকাঠামো তৈরি করতে হলে বড় ধরনের সরকারি সহায়তা প্রয়োজন।

উত্তরাঞ্চলে যেখানে রোদ কম পড়ে, সেসব অঞ্চলের জন্য বিশেষ পরিকল্পনারও প্রয়োজন রয়েছে। পাশাপাশি সবাই যেন এই প্রযুক্তিতে প্রবেশাধিকার পায়, তা নিশ্চিত করাও জরুরি।

এই গবেষণা তোহোকু বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়, জাপানের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর এনভায়রনমেন্টাল স্টাডিজ, নেদারল্যান্ডসের রাডবাউড বিশ্ববিদ্যালয় জাপান মেটিওরোলজিক্যাল রিসার্চ ইনস্টিটিউটের গবেষকদের যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শেখ হাসিনা যাঁকে ঢাকায় ‘হত্যা করলেন’, তিনি ময়মনসিংহে জীবিত!

চরফ্যাশন থেকে গেটিসবার্গ কলেজ

নগদে স্ত্রীর চাকরি, স্বার্থের সংঘাতে জড়ালেন নাহিদের সাবেক পিএ আতিক মুর্শেদ

জীবিত ভাইকে জুলাই আন্দোলনে নিহত দেখিয়ে মামলায় সাক্ষীও দুই ভাই, নেপথ্যে যা জানা গেল

যুক্তরাষ্ট্রে সি চিন পিংয়ের মেয়েকে বহিষ্কারের দাবি, হঠাৎ কেন এই বিতর্ক

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত