Ajker Patrika

শিক্ষকের পরামর্শেই বদলে যাওয়া তিরন্দাজ দিয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক
শিক্ষকের পরামর্শেই বদলে যাওয়া তিরন্দাজ দিয়া

নীলফামারী: মেয়েটি ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি লম্বা। অন্য মেয়েদের তুলনায় উচ্চতা বেশ ভালো। খেলাধুলায় আগ্রহী। তাই নীলফামারী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক খাইরুল ইসলাম মেয়েটাকে পরামর্শ দিলেন, আর্চারিতে মন দাও। শিক্ষকের পরামর্শ মেয়েটির মনে ধরল। শুরু হলো কঠোর অনুশীলন। শিক্ষকের সেই পরামর্শ আর নিজের পরিশ্রম—বদলে গেল দিয়া সিদ্দিকীর জীবন।

সুইজারল্যান্ডের লোজানে বিশ্বকাপ আর্চারি স্টেজ টুতে রিকার্ভ মিক্সড ইভেন্টের ফাইনালে উঠেছিলেন রোমান সানা ও দিয়া সিদ্দিকী। দুই তিরন্দাজের পারফরম্যান্সে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপে সোনা জয়ের সম্ভাবনা থাকলেও শেষ পর্যন্ত রুপাতেই খুশি থাকতে হয়েছে বাংলাদেশকে। ইভেন্টের ফাইনালে শক্তিশালী নেদারল্যান্ডসের দুই প্রতিপক্ষের কাছে ৫-১ সেটে হেরে যান রোমান-দিয়া।

ফাইনালে হয়তো হেরেছেন, তবু রোমান-দিয়ার অর্জন নেহাত কম নয়। বিশেষ করে দিয়ার জন্য তো বটেই। ২০১৯ সালে ইসলামিক সলিডারিটি আর্চারি ছিল তাঁর প্রথম আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা। আর প্রথম আসরেই সোনা জিতে অবাক করেন সবাইকে। নিজেদের প্রথম বিশ্বকাপে ছিল সোনা জয়ের সুযোগও। তবে অনভিজ্ঞতার সঙ্গে প্রত্যাশার চাপেই ভেঙে পড়লেন নীলফামারীর মেয়ে দিয়া সিদ্দিকী। বলেছেন, ‘আসলে বিশ্বকাপের মতো বড় মঞ্চে ভালো কিছু করার জন্য অভিজ্ঞতা দরকার। এমন পর্যায়ে আমি একেবারে নতুন। তবু যা অর্জন করেছি তাতেই আমি অনেক খুশি।’

মেয়ে হয়তো সোনা জেতেননি, তবু তৃপ্ত দিয়ার সাংবাদিক বাবা নূর আলম সিদ্দিকী। দেশকে বিশ্বকাপের প্রথম পদক এনে দিয়েছেন তাঁর মেয়ে। বাবা হিসেবে গর্বিত তিনি। বলেছেন, ‘আমার মেয়ে বাংলাদেশের হয়ে বিশ্বের কাছে প্রতিনিধিত্ব করেছে, যা নীলফামারীসহ পুরো দেশের জন্য গর্বের বিষয়। জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক আরিফ হোসেন মুন বলছেন, ‘দিয়া আমাদের গর্ব। আমরা জেলার আনাচকানাচে এসব প্রতিভাবান খেলোয়াড়কে তুলে আনতে চেষ্টা করছি।’

নীলফামারীর পাইকপাড়া মধ্য হারওয়া গ্রামের নূর আলম সিদ্দিকীর দুই ছেলে আর এক মেয়ের মধ্যে বড় দিয়া। ছোটবেলায় পড়ালেখার পাশাপাশি মনের আনন্দে যুক্ত ছিলেন খেলাধুলার সঙ্গে। খেলাধুলার প্রতি আগ্রহ থাকলেও অবশ্য সুযোগটা পাচ্ছিলেন না। অবশেষে ভাগ্য খুলে দেয় ২০১৬ সালে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের প্রতিভা অন্বেষণ কর্মসূচি।

শিক্ষকের কথা মাথায় রেখে তির-ধনুকে পরিশ্রম আর মনোযোগ বাড়িয়ে দেন দিয়া। টিকে যান নীলফামারীতে আর্চারির প্রাথমিক বাছাইয়ে। পরে এক মাসের অনুশীলন ক্যাম্প শেষে ভর্তি হন বিকেএসপিতেও। প্রতিষ্ঠানটিতে এখন একাদশ শ্রেণিতে পড়ছেন দিয়া। সামনে লম্বা পথ পাড়ি দিতে হবে তাঁকে। অভিজ্ঞতা বাড়িয়ে প্রত্যাশার চাপকে জয় করতে পারলে হয়তো আর সোনার জন্য আক্ষেপে পুড়তে হবে না দিয়াকে, বাংলাদেশকেও।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি কর্মকর্তা–কর্মচারীদের নতুন বেতনকাঠামো আসছে, পে কমিশন গঠন

ব্যাংকে চোখ বেঁধে গ্রাহককে হাতুড়িপেটা, পায়ের নখ তোলার চেষ্টা

‘সোজা কথা, যারে ভালো লাগবে তারে কোপামু’

শুল্ক ছাড়া যুক্তরাজ্যে তৈরি পোশাক রপ্তানির সুযোগ পেল ভারত

সর্বাত্মক যুদ্ধে জড়াতে পারে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া—শক্তিতে কে বেশি এগিয়ে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত