Ajker Patrika

ইমরানের গলায় সোনার পদক, কাজাখস্তানে উড়ল বাংলাদেশের পতাকা 

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
ইমরানের গলায় সোনার পদক, কাজাখস্তানে উড়ল বাংলাদেশের পতাকা 

অসংখ্য আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় গিয়েছেন বাংলাদেশ অ্যাথলেটিকস ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রকিব। এশিয়ান টুর্নামেন্টগুলোতে তিনি পরিচিত একটি মুখ। ভবিষ্যতে আরও যাবেন। তবে কাজাখস্তানে এশিয়ান ইনডোর অ্যাথলেটিকসটা তাঁর জীবনে হয়তো সবচেয়ে আর স্মরণীয় একটা টুর্নামেন্টই হয়ে রইবে। 

সকাল থেকে অসংখ্য অভিনন্দন পেয়েছেন আবদুর রকিব। কাজের জন্য হোটেলের বাইরে গিয়েছিলেন, টুর্নামেন্টে আসা অন্য দেশের কর্মকর্তারাও সেসময় তাঁকে জানিয়েছেন সময়-সময়ে শুভেচ্ছা। এত কিছুর পরও একটা মুহূর্তের জন্য অপেক্ষায় ছিলেন বাংলাদেশের অ্যাথলেটিকসের এই কর্মকর্তা, কখন পোডিয়ামে উঠবেন সোনাজয়ী অ্যাথলেট ইমরানুর রহমান। কখন গলায় পরবেন সোনা, কখন বাজবে বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত! 

সেই অপেক্ষার শেষ হয়েছে। আজ বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায় এশিয়ান ইনডোর অ্যাথলেটিকসে ৬০ মিটার স্প্রিন্টের সোনা গলায় পরেছেন লন্ডনপ্রবাসী অ্যাথলেট ইমরান। বেজেছে বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত, ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি’। মুখে মৃদু হাসি নিয়ে পোডিয়ামে উন্নত শিরে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশের হয়ে ইতিহাস গড়া ইমরান। ২০০৬ এসএ গেমসের পর আন্তর্জাতিক অ্যাথলেটিকসে সোনা জিতলেন বাংলাদেশের কোনো অ্যাথলেট! 

কাজাখস্তানে যখন আবদুর রকিবের যখন হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করা হলো তখন বাংলাদেশের দুপুর। হোটেলের দুর্বল ইন্টারনেটের কারণে বারবার সমস্যা হয়েছে ঠিকই, কিন্তু এই ফাঁকে আসল অনুভূতিটা জানিয়ে দিলেন অ্যাথলেটিকস ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক। বললেন, ‘ইমরানকে নিয়ে আমরা এসএ গেমসে সোনার প্রত্যাশা করেছিলাম। এশিয়ান ইনডোরে সে সোনা জিতবে, কল্পনাও করিনি। এশিয়ান টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের কেউ সোনা জিতবে, জাতীয় সংগীত বাজবে-এ যেন স্বপ্নের মতো!’ 

আসলেই যেন স্বপ্নের মতো। এশিয়ান গেমসে বাংলাদেশ সোনা জিতেছে ক্রিকেট দিয়ে। কমনওয়েলথের সোনা এসেছে শুটিংয়ের মাধ্যমে। কিন্তু অ্যাথলেটিকসের কোনো অ্যাথলেট যে এশিয়ান টুর্নামেন্টে বাংলাদেশকে সোনা এনে দেবেন, সেটা শুধু আবদুর রকিবই নন, ভাবতে পারেনি ওয়ার্ল্ড অ্যাথলেটিকস ফেডারেশনও! নিজেদের ওয়েবসাইটে বিশ্ব অ্যাথলেটিকসের নিয়ন্তা সংস্থাটি বলছে, ইমরানের সোনা জয় এশিয়ান ইনডোরের এই আসরের সবচেয়ে বড় চমক। 

যার মাধ্যমে অ্যাথলেটিকসে এত বড় সাফল্য এল সেই ইমরানকে পাওয়া গেল আজ সন্ধ্যায়, গলায় পদক নেওয়ার খানিকক্ষণ আগে। ভালো দৌড়ানোর সংকল্পে সোনা যে জিতে যাবেন সেটা নিজেরও বিশ্বাস হচ্ছিল না বলে জানালেন বাংলাদেশের দ্রুততম মানব, ‘ফিনিশিং পয়েন্ট যখন শেষ করলাম, তখন নিজের কাছেই বিশ্বাস হচ্ছিল না। এতটা আমি নিজেও আশা করিনি। অনুভূতিটা বলে বোঝানো যাবে না, অসাধারণ।’ 

লন্ডন থেকে মাত্রই গত বছর বাংলাদেশের ঘরোয়া টুর্নামেন্টে অংশ নেওয়া শুরু করেছেন ইমরান। এই এক বছরে একাধিকবার নিজের রেকর্ড নিজে ভেঙেছেন। দুবার হয়েছেন দেশের দ্রুততম মানব। ইংল্যান্ডে দিনে দুটি চাকরি করেন, এর ফাঁকে চলে অনুশীলন আর জিম। খেলতে গেলে ছুটি নিতে হয় অফিস থেকে। সব ছুটি খেলার পেছনে শেষ করে স্ত্রী আর সন্তানকে সময় দেওয়ার মতো কিছু থাকে না বললেই চলে। অথচ এই ইমরান যদি পূর্ণ সময় অ্যাথলেটিকসকে দিতে পারতেন তাহলে কী বাংলাদেশ আরও বড় সাফল্য পেত না? 

সে যাই হোক, সাফল্য যখন এসেছে এবার স্বপ্নটাকে আরও করতে চান আবদুর রকিব। ইমরানের সাফল্যকে সামনে রেখে অ্যাথলেটিকসে বিনিয়োগ আর পৃষ্ঠপোষকতা বাড়বে বলে প্রত্যাশা তাঁর। বললেন, ‘আমাদের এত দিন বলার মতো কোনো সাফল্য ছিল না। আর এ কারণে আমরা কিছু চাইতে গেলেও খালি হাতে ফিরতাম। অথচ একটা সময় আমাদের খেলাধুলা শাসন করেছে অ্যাথলেটিকস। আমাদের এখন বীজ বপন করতে হবে। ৭ কোটি টাকার শেখ কামাল আন্তঃস্কুল ও মাদ্রাসা অ্যাথলেটিকস থেকে যে অ্যাথলেটরা আসবে তাদের যদি সঠিক অনুশীলন, মাঠ আর চাকরির সংস্থান করে দিতে পারি তাহলে অ্যাথলেটিকসে আবারও বিপ্লব ঘটবে।’ 

 ইমরানুরের সাক্ষাৎকার পড়ুন আগামীকালের আজকের পত্রিকায়

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘শেখ হাসিনা আসবে, বাংলাদেশ হাসবে’ ব্যানারে বিমানবন্দর এলাকায় আ.লীগের মিছিল

ইটনায় এবার ডিলার নিয়োগে ঘুষ চাওয়ার কল রেকর্ড ফাঁস

‘ওরা সোনার তৈরি, আমরা মাটির’, কারখানার ভেতর আত্মহত্যার আগে শ্রমিকের ফেসবুক পোস্ট

কুষ্টিয়ায় গভীর রাতে বিএনপি নেতার বাড়িতে গুলি, দেখে নেওয়ার হুমকি

মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম পরিবর্তনে প্রক্রিয়া মানা হয়নি: ইউনেসকো

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত