Ajker Patrika

‘সাকিব দেশে বিদায় না নিতে পারলে কষ্ট পাব’

মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন
আপডেট : ১২ নভেম্বর ২০২৪, ১৫: ৪৬
Thumbnail image

মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিনকে সাকিব আল হাসান ‘গুরু’ মানেন। সেই ছোটবেলা থেকে যেকোনো সমস্যায় তাঁর কাছে শরণ নিয়েছেন সাকিব। প্রিয় শিষ্যের টেস্ট ও ওয়ানডে ছাড়ার ঘোষণা নিয়ে সালাহ উদ্দিন লিখেছেন আজকের পত্রিকায়।

সাকিব যে হঠাৎ করেই এভাবে অবসরের সিদ্ধান্ত নেবে, ভাবতেও পারিনি। দুই দিন আগেও তার সঙ্গে কথা হয়েছে আমার, তবে এ নিয়ে কোনো কথা হয়নি। সে কারণেই হয়তো, তার অবসরের সিদ্ধান্ত জানানোর পর সত্যি বলতে বিস্মিত হয়েছি! অনেকক্ষণ চুপচাপই ছিলাম। অনেকের ফোনও এসেছে, কারও সঙ্গে কথা বলিনি।

সাকিব শক্ত মানসিকতার, এটা মানতেই হবে। কিন্তু একটা সময় থাকে যখন সবকিছু পেরে ওঠা কঠিন। একে তো মাঠে খেলার ধকল, তার ওপর খেলার বাইরে এত কিছু—একজন শক্ত মানুষের পক্ষেও একই সময়ে সবকিছু সামলে ওঠা কঠিন। অন্য কেউ হলে হয়তো আগেই ক্ষান্ত দিত। এত কিছুর পরও ও যে এখনো খেলছে, এটাই আমার কাছে একটা বিস্ময়। সাকিব বলেই এটা সম্ভব হয়েছে।

সাকিব বাংলাদেশের ক্ষণজন্মা এক অলরাউন্ডার। তার মতো দ্বিতীয় অলরাউন্ডার বাংলাদেশে কিংবা বিশ্বে কখন আসবে বলা কঠিন। সে একজন জেনুইন ব্যাটার, জেনুইন বোলার, সেরা ফিল্ডারও। ১৭ বছর ধরে একই তালে খেলে যাওয়া এমন ‘একের ভেতর তিন’ ক্রিকেটারের বাংলাদেশে তো বটে, বিশ্ব ক্রিকেটেও বিরল। ১০০টি ম্যাচ খেললে তার ৮৫টি ম্যাচেই সে পারফর্ম করেছে, কোনো না কোনোভাবে অবদান রেখেছে। খুব কম সময়ই দেখা গেছে যে সাকিব পারফর্ম করতে ব্যর্থ। সাম্প্রতিক সময়ে সে ছোটখাটো অবদান রাখলেও তাঁকে নিয়ে আমাদের প্রত্যাশা বেশি হওয়ায় ফর্ম নিয়ে আমরা প্রশ্ন তুলেছি।

দেশের ক্রিকেটে সাকিবের সবচেয়ে বড় অবদান দলের মধ্যে ‘আমরাও পারি’ বিশ্বাসের জন্ম দিয়েছে। ভালো খেলে যে আমরাও বিশ্বের এক নম্বর হতে পারি—সেই আত্মবিশ্বাস ক্রিকেটারদের মধ্যে সাকিবই ছড়িয়ে দিয়েছে। যেকোনো দেশের যেকোনো খেলা ওপরে উঠেছে সেই দেশের খেলার কোনো আইকন কিংবা নায়ককে কেন্দ্র করে। আমাদের ক্রিকেটের সাকিব হচ্ছে সেই আইকন। ও সব প্রতিকূলতা মাড়িয়ে বিশ্বের এক নম্বর অলরাউন্ডার হয়েছে। ব্যাপারটা দেশের অন্য ক্রিকেটারদেরও উজ্জীবিত করেছে, তাদের মধ্যে এই বিশ্বাসের জন্ম দিয়েছে—আমাদের মধ্যে থেকেও কেউ একজন নাম্বার ওয়ান হয়েছে।

ক্যারিয়ারের শেষ দিকে সাকিব রাজনীতিতে জড়িয়েছিল, যা কখনই আমার পছন্দ ছিল না। তার কোচ হিসেবে আমার জন্য এটা মেনে নেওয়াটাও কষ্টের ছিল। এটা ওকে অনেক ক্ষতি করেছে। আমি সব সময়ই এটার বিপক্ষে ছিলাম। সে যা-ই হোক, দেশের মাটিতে মিরপুরে টেস্ট খেলে সে বিদায় নিতে চেয়েছে। ঢাকার মাঠে ওকে সুন্দর বিদায় দেবে, এটা তাঁর প্রাপ্য। সে যদি দেশের মাঠে বিদায় না নিতে পারে, অনেক কষ্ট পাব। খেলা ছাড়ছে এতটা কষ্ট পাব না। কিন্তু দেশের মাঠে সুন্দরভাবে বিদায় না বলতে পারলে ওই কষ্ট সারা জীবন থেকে যাবে আমার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত