Ajker Patrika

মিথ্যা সাক্ষ্য দিয়ে গ্রেপ্তার ম্যারাডোনার সাবেক দেহরক্ষী

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ২৬ মার্চ ২০২৫, ১৮: ০৪
২০২০ সালের ২৫ নভেম্বর মারা গেছেন ডিয়েগো ম্যারাডোনা। তাঁর মৃত্যুর মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন সাবেক দেহরক্ষী। ছবি: এএফপি
২০২০ সালের ২৫ নভেম্বর মারা গেছেন ডিয়েগো ম্যারাডোনা। তাঁর মৃত্যুর মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন সাবেক দেহরক্ষী। ছবি: এএফপি

২০২০ সালের ২৫ নভেম্বর ডিয়েগো ম্যারাডোনার মৃত্যু হলেও চিকিৎসাজনিত অবহেলার অভিযোগ করছেন পরিবারের সদস্যেরা। সাত স্বাস্থ্য কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আনা হয়েছে এমন অভিযোগ। ম্যারাডোনার মৃত্যু নিয়ে আদালতে চলছে বিচার কার্যক্রম। এই বিচার কাজ চলার সময় গ্রেপ্তার হয়েছেন ম্যারাডোনার সাবেক দেহরক্ষী।

আর্জেন্টিনার রাজধানী শহর বুয়েনস এইরেসের উপকণ্ঠে সান ইসিদরোয় চলছে এই বিচার কাজ। বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) সহ বেশ কিছু গণমাধ্যমে জানা গেছে, মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়ার অভিযোগে গতকাল গ্রেপ্তার হয়েছেন ম্যারাডোনার সাবেক দেহরক্ষী হুলিও কোরিয়া। প্রসিকিউটরদের দাবি শপথবাক্য পাঠ করে মিথ্যা বলেছেন কোরিয়া। হাতকড়া পরেই আদালত ছেড়েছেন ম্যারাডোনার সাবেক দেহরক্ষী। আর্জেন্টাইন কিংবদন্তির মৃত্যুর সময় সেই ঘরে ছিলেন কোরিয়া। আদালতে পেশ করা প্রমাণের ভিত্তিতে প্রসিকিউটরা দাবি করেছেন, তিনি (কোরিয়া) তাঁর দায়িত্ব পালনে অবহেলা করেছেন। মুখের মাধ্যমে ম্যারাডোনাকে কৃত্রিম শ্বাসপ্রশ্বাসের কার্ডিওপালমোনারি রিসাসিটেশন (সিপিআর) দিয়েছেন কোরিয়া।

কোরিয়া সাক্ষ্য দেওয়ার সময় প্রসিকিউটরা গতকাল বারবার বাধা দিয়েছেন। আদালতে ম্যারাডোনার সাবেক দেহরক্ষীর দাবি, ম্যারাডোনার ব্যক্তিগত চিকিৎসক লিওপোলদো লুকের সঙ্গে কোনো কথাই তখন (ম্যারাডোনার মৃত্যুর সময়) হয়নি। কিন্তু তদন্তের পর ম্যারাডোনার মৃত্যুর আগে ও পরে লুক ও কোরিয়ার মধ্যে যে বার্তা আদানপ্রদান হয়েছিল, সেগুলো ফাঁস হয়ে যায়। যতক্ষণ না চিকিৎসক আসেন, কোরিয়া ততক্ষণ সিপিআর দিয়ে যাচ্ছিলেন। সান ইসিদরোর কাছাকাছি টাইগ্রে এলাকায় ম্যারাডোনার বাড়িতে চিকিৎসক এসে মৃত ঘোষণা করেছিলেন।

ভাই বোন ও ম্যারাডোনার বোনদের সঙ্গে ম্যারাডোনার মেয়ে জানা এই মামলার অন্যতম বাদী। সাড়ে চার বছর আগের ঘটনা স্মরণ করে তিনি আদালতকে বলেছেন, ‘আমি ও আমার বোন জিয়ানিন্না বাবাকে দেখতে গিয়েছিলাম। তবে তাঁর বাবার অবস্থা খুব ভালো ছিল না। ম্যারাডোনার মনোবিজ্ঞানী আমাদের সেই বাড়িতে (ম্যারাডোনার বাড়ি) যেতে নিষেধ করেছিলেন যতক্ষণ না তিনি (ম্যারাডোনা) পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে চান। অন্যান্য সাক্ষীদের বর্ণনা শুনে যা বুঝলাম, বাড়িতে কোনো চিকিৎসাসামগ্রী ছিল না।’

ম্যারাডোনার চিকিৎসায় নিয়োজিত আটজনের মধ্যে সাতজনের বিরুদ্ধে অবহেলার অভিযোগে মামলা করা হয়েছে। অভিযুক্তদের মধ্যে আছেন এক নিউরোসার্জন, এক মনোরোগবিদ, এক মনোবিজ্ঞানী, এক মেডিকেল কো-অর্ডিনেটর, এক নার্স কো-অর্ডিনেটর, এক চিকিৎসক এবং রাতের বেলার এক নার্স। দিনের বেলায় ম্যারাডোনাকে যে নার্স দেখাশোনা করতেন, তাঁর বিচার আলাদাভাবে হবে। যন্ত্রণাকাতর সময়ে ম্যারাডোনাকে ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল বলে কৌঁসুলিদের অভিযোগ। দোষী সাব্যস্ত হলে ৮ থেকে ২৫ বছরের জেল হতে পারে অভিযুক্তদের। জুলাই পর্যন্ত এই মামলা চলতে পারে।

হৃদরোগের কারণে ২০২০ সালের ২৫ নভেম্বর ৬০ বছর বয়সে মারা যান ম্যারাডোনা। তাঁর মস্তিষ্কে রক্ত-জমাট বেঁধেছিল বলে জানা গেছে। মৃত্যুর দুই সপ্তাহ পর যখন তাঁর ওপর ছুরি-কাঁচি চালানো হয়, তখন ফুসফুসে তরল জমা হয়েছিল। কোকেন ও অ্যালকোহলে আসক্ত ম্যারাডোনা মৃত্যুর আগে কয়েক দশক ধুঁকছিলেন। প্রসিকিউটররা ম্যারাডোনার শেষের দিনগুলোকে বলেছেন ‘হরর থিয়েটার’।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত