Ajker Patrika

এশিয়ান কাপ নিয়ে অনিশ্চয়তায় বাংলাদেশ কোচ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৭ জুলাই ২০২৫, ২০: ১১
ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তায় বাংলাদেশ নারী দলের কোচ পিটার বাটলার। ছবি: বাফুফে
ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তায় বাংলাদেশ নারী দলের কোচ পিটার বাটলার। ছবি: বাফুফে

বাংলাদেশের নারী ফুটবল দলের বাঁকবদলের পেছনে অবদান রয়েছে পিটার বাটলারের। ইংলিশ এই কোচের অধীনে প্রথমবারের মতো এশিয়ান কাপে জায়গা করে নিয়েছে বাংলাদেশ। আগামী বছরের মার্চে অস্ট্রেলিয়া হবে নারী এশিয়ান কাপ। তবে বাটলার সেখানে থাকবেন কি না, নিশ্চিত নন।

চুক্তি অনুযায়ী, নারী দলের কোচ হিসেবে বাটলারের থাকার কথা রয়েছে ২০২৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। তবু ভবিষ্যত নিয়ে অনিশ্চয়তায় রয়েছেন তিনি। গতকাল ঢাকায় ফেরার আগে আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বাটলার বলেন, ‘আমি জানি না, পরবর্তী টুর্নামেন্টে আমি দায়িত্বে থাকব কি না। এও জানি না, আমার ভবিষ্যৎ কী। আমি থাকি বা না থাকি সেটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। আমার যে লক্ষ্য ছিল সেটা অর্জন করেছি। আমরা সেখানো পৌঁছেছি এবং এটা ইতিহাস হয়ে থাকবে। বাংলাদেশের নারী ফুটবলের চিত্র বদলাতে সহায়তা করতে পেরেছি বলে আমি মনে করি।’

মিয়ানমারে যাওয়ার আগে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে কখনো জয়ের রেকর্ড ছিল না। বাটলারের কৌশল ওলটপালট করে দিয়েছে রেকর্ড বুক। বাহরাইন-মিয়ানমারের মতো শক্তিশালী দলের বিপক্ষে জিতে ইতিহাস গড়ে বাংলাদেশ। আর শেষ ম্যাচে তুর্কমেনিস্তানকে উড়িয়ে দেয় ৭-০ গোলে। বাটলারের হাই প্রেসিং খেলার ধরন চমকে দেয় অনেককেই। তিনি বলেন, ‘তরুণ খেলোয়াড়েরা দলে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ পরিবেশ এনে দেয়। তাতে স্বাচ্ছন্দ্যের জায়গা থেকে বেরিয়ে আসতে হয় সবাইকে। পুরো বিষয়টা নাড়িয়ে দিয়ে আমি সেটাই করেছি। আমাদের খেলার ধরন অনেককে সত্যিই চমকে দিয়েছে। সেজন্য বিশ্বাস রাখতে হয় এবং আমি আমার খেলোয়াড়দের ওপর বিশ্বাস রেখেছি।’

২০২৩ সালে পিটার দায়িত্ব নেন বাফুফের এলিট একাডেমির। গত বছর তাঁর কাঁধে ওঠে নারী ফুটবল দলের ভার। শুরুর দিকে শৃঙ্খলা ছাপ দেখতে না পেরে অবাকই হন তিনি, ‘আমি খেলোয়াড়দের নিয়ে সত্যিই গর্বিত... এই মেয়েরা অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছে। তাদের কঠিন পরীক্ষায় ফেলা হয়েছিল এবং এর ফল তারা পেয়েছে। জাতীয় দলে যখন আমি আসি... কিছু খেলোয়াড় নিজেরাই নিজেদের দলে নির্বাচন করছিল। কোনো শৃঙ্খলা ছিল না। দুর্ভাগ্যবশত শৃঙ্খলা না থাকলে, কোনো গন্তব্য পৌঁছানো যায় না।’

শৃঙ্খলার পাশাপাশি ফিটনেসেও জোর দেন বাটলার, ‘সকাল ৫টায় ঘুম থেকে উঠে ছয়টায় নিবিড় অনুশীলন করাটা সহজ ছিল না। বাংলাদেশ ফুটবলের এক পরিবর্তনের মুহূর্ত ছিল এটি। যেখানে শৃঙ্খলাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, যা আগে কখনো ছিল না।’

জানুয়ারির শেষ দিকে বাটলারের অধীনে অনুশীলন বয়কট করে বিদ্রোহের ডাক দেন সাবিনা খাতুনসহ ১৮ ফুটবলার। ইংলিশ কোচের বিরুদ্ধে ‘গালিগালাজ করা’, ‘বডি শেমিং’, ‘মানসিক নির্যাতন’-এর মতো গুরুতর অভিযোগও করেছেন তারা। বিদ্রোহের অবসান ঘটলেও সাবিনাসহ বিদ্রোহী ৫ জনকে এখনো দলে ফেরাননি বাটলার। তাদের ছাড়াই গড়েছেন ইতিহাস, ‘কোনো কোচই এমন অভিযোগ শুনতে চায় না, যা পুরোপুরি ভিত্তিহীন ও মিথ্যা। মনে হচ্ছিল এই মিথ্যে অভিযোগের শেষ নেই। যা একঘেঁয়ে ও ক্লান্তিকর হয়ে উঠছিল। আমার কোনো ব্যক্তিগত এজেন্ডা ছিল না... দিনশেষে আমি যা করেছি, তা বাংলাদেশ ফুটবলের ভালোর জন্যই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত