Ajker Patrika

ফিলিস্তিনপন্থী সংগঠন নিষিদ্ধের পক্ষে ভোট দিলেন টিউলিপ–রুশনারা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৭ জুলাই ২০২৫, ১৮: ৪৮
যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এমপিদের মধ্যে লেবার পার্টির দুজন সরকারের নিষিদ্ধের প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছেন, একজন বিরোধিতা করেছেন এবং একজন ভোটে অংশ নেননি।
যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এমপিদের মধ্যে লেবার পার্টির দুজন সরকারের নিষিদ্ধের প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছেন, একজন বিরোধিতা করেছেন এবং একজন ভোটে অংশ নেননি।

ব্রিটিশ পার্লামেন্টে ফিলিস্তিনপন্থী অ্যাকটিভিস্ট সংগঠন ‘প্যালেস্টাইন অ্যাকশন’-কে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এর আওতায় এরই মধ্যে ২০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পার্লামেন্টের তথ্য অনুযায়ী, গত বুধবার হাউস অব কমন্সে বিতর্কিত এই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেন ৩৮৫ জন এমপি, আর বিপক্ষে ভোট দেন ২৬ জন। প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেওয়া এমপিদের মধ্যে দুজন ব্রিটিশ–বাংলাদেশি।

ব্রিটেন সরকারের দাবি, ‘আইনি প্রতিবাদের ছদ্মাবরণে’ প্যালেস্টাইন অ্যাকশন সহিংসতা ও রাষ্ট্রীয় অবকাঠামো ধ্বংসে লিপ্ত হয়েছে। অপরদিকে সমালোচকেরা বলছেন, এই পদক্ষেপের মধ্য দিয়ে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদকে সন্ত্রাসের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলার এক বিপজ্জনক নজির সৃষ্টি হলো।

প্যালেস্টাইন অ্যাকশনকে সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা। এক বিবৃতিতে ‘প্যালেস্টাইন অ্যাকশন’ নামের সরাসরি কর্মসূচিভিত্তিক প্রতিবাদী গোষ্ঠীকে ২০০০ সালের সন্ত্রাসবাদ আইনে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ না করতে যুক্তরাজ্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

জাতিসংঘ মানবাধিকার কার্যালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘একটি রাজনৈতিক প্রতিবাদ আন্দোলনকে ভিত্তিহীনভাবে সন্ত্রাসী হিসেবে আখ্যা দেওয়ার ঘটনায় আমরা উদ্বিগ্ন। আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী, প্রতিবাদের অংশ হিসেবে সম্পত্তির ক্ষতি ঘটানো—যদি তা মানুষ হত্যা বা আঘাতের উদ্দেশ্যে না হয়—তবে তাকে সন্ত্রাসবাদ হিসেবে গণ্য করা যায় না।’

নিষিদ্ধ করায় প্যালেস্টাইন অ্যাকশনের সদস্য হওয়া, সমর্থন জানানো বা তহবিল জোগানো— সবকিছুই অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে এবং দোষী প্রমাণিত হলে কারাদণ্ডের মুখোমুখি হতে হবে।

যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এমপিদের মধ্যে লেবার পার্টির দুজন সরকারের নিষিদ্ধের প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছেন, একজন বিরোধিতা করেছেন এবং একজন ভোটে অংশ নেননি। পক্ষে ভোট দিয়েছেন বেথনাল গ্রিন ও স্টেপনি আসনের রুশনারা আলী। লন্ডনের ইস্টএন্ডের বাংলাদেশি অধ্যুষিত এই আসনের এমপি রুশনারা দীর্ঘদিন ধরে লেবার পার্টির প্রভাবশালী নেতা। তিনি সরকারের সঙ্গে একমত পোষণ করে প্রস্তাবটির পক্ষে ভোট দেন।

আরেকজন হলেন হ্যাম্পস্টেড ও কিলবার্ন আসনের এমপি টিউলিপ সিদ্দিক। বাংলাদেশের স্বাধীনতার সংগ্রামের নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাতনি এবং ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগনি টিউলিপ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত।

নিষেধাজ্ঞার বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন পপলার ও লাইমহাউস আসনের স্বতন্ত্র এমপি আপসানা বেগম। প্রথম হিজাব পরা মুসলিম নারী এমপি হিসেবে আলোচিত আপসানা বেগম শুরু থেকেই নিষিদ্ধের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। তাঁর ভাষায়, ‘লাল রঙ ছিটানো, প্রতীকী প্রতিবাদ ও শান্তিপূর্ণ প্রতিরোধকে সন্ত্রাস আখ্যা দেওয়া ভয়ংকর ও অগণতান্ত্রিক’।

ভোটে অংশ নেননি বা ভোট রেকর্ড হয়নি ইলিং সেন্ট্রাল ও অ্যাক্টন আসনের লেবার পার্টির এমপি লেখক ও সমাজবিজ্ঞানী রুপা হক। তিনি ব্রিটিশ–বাংলাদেশি কমিউনিটিতে একজন পরিচিত মুখ। তিনি এই ভোটে অংশ নেননি বা তাঁর ভোট রেকর্ডে পাওয়া যায়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত