Ajker Patrika

বিশাল জয়ে সুপার টুয়েলভে বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২১ অক্টোবর ২০২১, ২০: ৫৯
বিশাল জয়ে সুপার টুয়েলভে বাংলাদেশ

দুই দলের তফাৎটা আকাশ–পাতালই! টি–টোয়েন্টি র‍্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ যেখানে ছয়ে, সেখানে পাপুয়া নিউগিনির অবস্থান ১৫ তে। ফলেও প্রতিফলিত হলো সেটি। পাপুয়া নিউগিনিকে ৮৪ রানের বড় ব্যবধানেই হারিয়েছে বাংলাদেশ। আর বিশাল এই জয়ে বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভের টিকিটও কেটে ফেলল মাহমুদউল্লাহর দল। 

বিশ্বকাপের মূল পর্বে যেতে হলে এই ম্যাচে জিততেই হতো মাহমুদউল্লাহদের। হারলে বিরস বদনে চেয়ে থাকতে হতো অন্যদের দিকে। শেষ পর্যন্ত অত হিসাব নিকাশের ফাঁদে পড়তে হলো না সাকিব–মুশফিকদের। 

মাসকাটের আল আমেরাতে আজ মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচেও টস জিতলেন মাহমুদউল্লাহ। টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে যদিও শুরুতেই কেঁপেছে বাংলাদেশ! ওমানের বিপক্ষে তিনবার ক্যাচ তুলে দিয়েও বেঁচেছিলেন মোহাম্মদ নাঈম। আজ তো প্রথম বলেই বিভ্রান্ত হয়ে ক্যাচ তুলে দিয়েছিলেন। উইকেটকিপারের একটু সামনে পড়ায় রক্ষা। সেই ভুল থেকে শিক্ষা না নেওয়া নাঈম দ্বিতীয় বলেই শেষ কোনো রান না করেই। কাবুয়া মোরেয়ার লেগ স্টাম্পে দেওয়া হাফ ভলিটি ফ্লিক করেছিলেন বাঁহাতি ওপেনার। জোরহীন সেই শট ডিপ স্কয়ার লেগের আকাশের মধ্যেই থাকল। একটু পেছনে সরে দুর্দান্তভাবে সেই বলটা হাতে পুরলেন বাউ। 

এরপর দারুণ ফর্মে থাকা সাকিব আল হাসান জুটি বাঁধলেন ফর্মের সঙ্গে লড়তে থাকা লিটনের সঙ্গে। দ্বিতীয় উইকেটে দুজনে গড়েন ৫০ রানের জুটি। 

ফর্মে ফেরার ইঙ্গিত দিয়েও ইনিংসটাকে বেশি দূর নিতে পারলেন না লিটন। ভালার স্ট্যাম্পের অনেক বাইরের বল অযথা টেনে এনে স্লগ সুইপ করতে গিয়েছিলেন ওই ওপেনার। ডিপ মিড উইকেটে দাঁড়িয়ে ক্যাচটি সহজেই ধরেন বাউ। ২৩ বলে ২৯ রান করেন লিটন। 

ওমানের বিপক্ষে ৮ নম্বরে নামা মুশফিক আজ উইকেটে আসেন পুরোনো পজিশনে–৪ নম্বরে। জায়গা বদল হলেও ভাগ্য বদল হলো না অভিজ্ঞ ব্যাটারের। যথারীতি বাজে পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতা ধরে রেখে মুশফিক সাইমন আতাইয়ের বলে ডিপ স্কয়ার লেগে ক্যাচ দিয়ে ফিরলেন ৮ বলে ৫ রান করে। মুশফিকের বিদায়ের পর বাংলাদেশের ইনিংস টেনে নিয়ে যাচ্ছিলেন সাকিব। তবে বাঁহাতি অলরাউন্ডারের দুর্দান্ত প্রচেষ্টার মৃত্যু হয় দুরন্ত এক ক্যাচেই। আগের বলেই ভালাকে এক্সট্রা কাভারের ওপর দিয়ে এক হাতে ছয় মেরেছিলেন সাকিব। পরের বলটাও একই জায়গা দিয়ে মাঠের বাইরে পাঠাতে চেয়েছিলেন। ব্যাটে বলে না হওয়ায় বল উঠে যায় আকাশে। লং অনে ধরা লাফিয়ে ক্যাচটি তালুবন্দী করেন চার্লস আমিনি। 

বাংলাদেশের ইনিংসের এর পরেরটা মাহমুদউল্লাহময়। চার–ছক্কায় জমিয়ে তোলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। তিন চার ও তিন ছক্কায় মাত্র ২৭ বলেই পৌঁছে যান ফিফটিতে। তবে ফিফটির পরই নাটকীয় এক সিদ্ধান্তে ফিরতে হয় মাহমুদউল্লাহকে। রাভুর কোমর উচ্চতার বলটি ফ্রিক করেছিলেন মাহমুদউল্লাহ। বাউন্ডারিতে বলটি ধরেন সোপার। থার্ড আম্পায়ার প্রথমে জায়ান্ট স্ক্রিনে ‘নট আউট’ দেখালেও দ্রুতই ভুল সংশোধন করে নেন–‘আউট’। এরপর আফিফ, সাইফউদ্দিনের ছোট্ট দুটি ক্যামিওতে বাংলাদেশ পৌঁছে যায় ১৮১ রানের ‘এভারেস্টে’। শেষ দশ ওভারে ১১০ রান তুলে বাংলাদেশ টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ইতিহাসের সর্বোচ্চ দলীয় ইনিংসটাও করে ফেলে। 

 ১৮২ রানের পাহাড় ডিঙাতে গিয়ে পাপুয়া নিউগিনি শুরু থেকেই ছিল বিপথে। সাকিব–সাইফউদ্দিনের দুর্দান্ত বোলিংয়ে ২৯ রানেই ৭ উইকেট হারায় আসাদ ভালার দল। এরপরও যে পাপুয়া নিউগিনি ৯৭ রানে পৌঁছল তার পেছনে বড় অবদান উইকেটকিপার ব্যাটার কিপলিনের ৪৬ রান ও মোস্তাফিজের ছন্নছাড়া বোলিং। 

স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে হার, ওমানের বিপক্ষে ঘাম বেরিয়ে জয়। গত কদিনের সময়টা বেশ চাপের মধ্যেই গেছে মাহমুদউল্লাদের। আজ দুর্দান্ত এক জয়ে যেন ছন্দে ফিরল বাংলাদেশ দল। এবার সেই ছন্দটা মূল পর্বে ধরে রাখার চ্যালেঞ্জ সাকিব–তাসকিনদের।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত