Ajker Patrika

মাঠের লড়াইয়ের চেয়ে কথার ঝাঁজ বেশি

রানা আব্বাস, দুবাই থেকে
আপডেট : ২৬ অক্টোবর ২০২১, ১২: ৫১
মাঠের লড়াইয়ের চেয়ে কথার ঝাঁজ বেশি

মরুর আবহাওয়ায় গরম তো থাকবেই। সেই গরমে আবার বসেছে ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ততম সংস্করণের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের আসর। এই তপ্ত আবহাওয়ায় ‘উত্তপ্ত’ হয়ে উঠছেন ক্রিকেটাররাও। যদিও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এখনো পর্যন্ত গরম বা রোমাঞ্চকর ম্যাচ খুব একটা দেখা যায়নি। টুর্নামেন্ট যত সামনে গড়াবে, ততই হয়তো রঙিন হয়ে উঠতে পারে বিশ্বকাপ। তবে তার আগে ক্রিকেট তারকাদের কথার ঝাঁজ বেশ টের পাওয়া যাচ্ছে মরুর দেশটাতে।

আপনি বলেন কী স্বপ্ন দেখতে চান? আমাদের স্বপ্ন তো আমরা বলেই এসেছি, না? স্বপ্ন প্রতিদিন বদল হয় নাকি?
সাকিব আল হাসান

গত পরশু বিরাট কোহলিকে বেমক্কা প্রশ্ন করে বসলেন এক পাকিস্তানি সাংবাদিক। তাঁর প্রশ্ন ছিল, পাকিস্তান ম্যাচে শূন্য রানে ফেরা রোহিত শর্মাকে বাদ দিয়ে দারুণ ছন্দে থাকা ঈষাণ কিশানকে একাদশে রাখা যেত কি না? প্রশ্নটার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলাই যায়। রোহিতের মতো ব্যাটার কোনো অধিনায়ক বসিয়ে রাখবেন? স্বাভাবিকভাবেই এমন প্রশ্নে বেশ ধাক্কাই খেলেন কোহলি। আর তাতে তাঁর উত্তর হলো বেশ তির্যক, ‘খুব সাহসী প্রশ্ন করেছেন। আপনিই বলুন কাকে নেওয়া উচিত? যে দলটা নিয়ে খেলেছি, আমার মনে হয়েছে, এটাই সেরা। আপনিই বলুন, আপনার কী মত?’—এখানেই থামেননি ভারতীয় অধিনায়ক। আরও যোগ করেছেন, ‘আপনি রোহিত শর্মাকে বাদ দিতে বলছেন? রোহিত প্রস্তুতি ম্যাচে কীভাবে খেলেছে দেখেছেন?’

কাকে নেওয়া উচিত? যে দলটা নিয়ে খেলেছি, আমার মনে হয়েছে, এটাই সেরা। আপনিই বলুন, আপনার কী মত?’
বিরাট কোহলি

কোহলির এই ঝাঁজালো উত্তর যেন কয়েক ঘণ্টা আগে শারজায় মুশফিকুর রহিমের মন্তব্যেরই ‘সিক্যুয়াল’! শ্রীলঙ্কার কাছে হারের পর সংবাদ সম্মেলনে মুশিকের কাছে এক সাংবাদিক জানতে চাইলেন, মাঠের বাইরের নানা ঘটনা-সমালোচনার প্রভাব দলে পড়ছে কি না। মুশফিক পাল্টা জানতে চাইলেন, ‘কী ঘটনা হচ্ছে মাঠের বাইরে?’ পরে যোগ করলেন, ‘১৬ বছর ধরে এসব দেখে আসছি। আর যারা আমাদের নিয়ে এসব বলে, তাদের উচিত নিজেদের চেহারা আয়নায় দেখা। তারা তো বাংলাদেশের হয়ে খেলে না। আমরা খেলছি।’

যারা আমাদের নিয়ে এসব বলে, তাদের উচিত নিজেদের চেহারা আয়নায় দেখা। তারা তো বাংলাদেশের হয়ে খেলে না। 
মুশফিকুর রহিম

উপমহাদেশে ক্রিকেট নিয়ে যে উন্মাদনা; সেটির সৌন্দর্য যেমন আছে, আবার এর ভয়ংকর রূপও আছে। এই ভয়ংকর রূপটা বেশি উন্মোচন হয় বিশ্বকাপের মতো বড় টুর্নামেন্টে। একটা সময় হতাশায় খেলোয়াড়দের কুশপুত্তলিকা কিংবা বাড়িতে ইট-পাথর মারার ঘটনা ঘটত। এখন এ ধরনের ঘটনা কমে এলেও যত আবেগ-ভালোবাসা-অসন্তুষ্ট-ক্ষোভ প্রকাশের বড় প্ল্যাটফর্ম হয়ে গেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। এই প্ল্যাটফর্মে ভালোভাবে যুক্ত আছেন খেলোয়াড়েরাও। মাঠের বাইরের যত তর্ক-বিতর্ক, আলোচনা-সমালোচনা মুহূর্তেই স্পর্শ করছে তাঁদেরও। আর সেটির ফল হিসেবে ঝাঁজালো সব উত্তর আসছে ক্রিকেটারদের কাছ থেকে। কখনো অপ্রয়োজনীয় মন্তব্য করে এই আগুনে ঘি ঢালছেন ক্রিকেট বোর্ডের শীর্ষস্থানীয় কর্তারাও।

(খেলোয়াড়দের) ছোট করে ফেলা ঠিক না। এটা আমাদের দেশ, আমরা সবাই একসঙ্গে খেলি। মনে হয়, আমাদের চেয়ে বেশি অনুভূতি আর কারও থাকে না। 
মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ

সমালোচনা কিংবা কঠিন প্রশ্নের পিঠে মাহমুদউল্লাহ যেমন বলছেন, ‘আমরাও মানুষ, ভুল করি। এতে একেবারে (খেলোয়াড়দের) ছোট করে ফেলা ঠিক না। এটা আমাদের দেশ, আমরা সবাই একসঙ্গে খেলি। মনে হয়, আমাদের চেয়ে বেশি অনুভূতি আর কারও থাকে না।’ সাকিব আল হাসান টুর্নামেন্টে নিজেদের স্বপ্ন-আশা নিয়ে বলছেন, ‘বললে স্বপ্ন (টুর্নামেন্ট কত দূর যেতে চান) বদল করে রাখতেও পারি, আপনি বলেন কী স্বপ্ন দেখতে চান? আমাদের স্বপ্ন তো আমরা বলেই এসেছি, না? স্বপ্ন প্রতিদিন বদল হয় নাকি?’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত