Ajker Patrika

বিষণ্নতার চাদরে ঢাকা বাংলাদেশ

রানা আব্বাস, কলম্বো থেকে
বিষণ্নতার চাদরে ঢাকা বাংলাদেশ

হোটেল সিনামন গ্র্যান্ডে গতকাল সকালে দুই রকম দৃশ্য দেখা গেল। সকাল থেকে হোটেল লবিতে ফুরফুরে মেজাজে ঘুরে বেড়াচ্ছেন শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটাররা। সেলফি-ছবি তুলতে যে-ই আবদার করছেন, হাসিমুখে আবদার মেটাচ্ছেন শানাকা-মেন্ডিসরা। কেউ কেউ আবার লবিতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আয়েশি ভঙ্গিতে চুটিয়ে আড্ডা দিচ্ছেন। 

পরশু বাংলাদেশের বিপক্ষে শ্রীলঙ্কার জয়ে দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়া দাসুন শানাকার সঙ্গে দেখা হতেই জানতে চাওয়া হলো, নাঈম শেখকে কীভাবে বিভ্রান্ত করে দিলেন? শানাকা হাসলেন, ‘এমন বাউন্সার দেব, ও বোধ হয় ভাবতে পারেনি।’ বিপিএল আর লঙ্কান প্রিমিয়ার লিগ খেলার সৌজন্যে বাংলাদেশের বেশির ভাগ ক্রিকেটারই তাঁর পরিচিত। শানাকা নিজেই বললেন, ‘আমার সবচেয়ে ভালো বন্ধু তাসকিন।’ তো বন্ধুদের এখন এশিয়া কাপ প্রায় শেষ, বিশেষ করে শ্রীলঙ্কার কাছে হারের পর। শানাকা বেশ মজাই পেলেন শুনে, ‘আরে, এটা ক্রিকেটে হয়। ব্যাপার না। পরে আবার কোনো ম্যাচে ভালো খেলবে তারা।’ 

শানাকা যখন লবিতে সতীর্থদের সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছেন, অদূরে দাঁড়ানো বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান জালাল ইউনুস বড় বিস্ময় নিয়ে বলছিলেন, ‘শানাকার ঘণ্টায় ১২৭-১২৮ কিলোমিটার গতির বলই আমরা খেলতে পারলাম না!’ হোটেল লবিতে বাংলাদেশ দলের টিম ম্যানেজমেন্টের যাঁর সঙ্গেই দেখা, সবার একই আফসোস—কী এক সুযোগ হাতছাড়া হলো। 

লঙ্কান ক্রিকেটাররা যেখানে উৎফুল্ল মনে সময় কাটাচ্ছেন; তাসকিন আহমেদ, মেহেদী হাসান মিরাজ, হাসান মাহমুদ, শরীফুল ইসলাম, শামীম পাটোয়ারীকে দেখা গেল বিষণ্ন চেহারায়। শ্রীলঙ্কা দলে যখন সাফল্যের কলরব, বাংলাদেশ দল তখন নিস্তব্ধতায় ডুবে। সংবাদমাধ্যম দেখলেই নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখার জোর চেষ্টা তাঁদের। 

বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্ট তিন দিনের ‘ছুটি’ ঘোষণা করেছে। পরের ম্যাচ সেই শুক্রবারে। ভারতের বিপক্ষে এই ম্যাচের আগে আগামী তিন দিন কোনো কর্মসূচিই রাখেনি টিম ম্যানেজমেন্ট। এ বিরতিতে গতকাল দুপুরে দেশে ফিরে গেছেন মুশফিকুর রহিম আর সাকিব আল হাসান। সন্তানসম্ভবা স্ত্রীর পাশে থাকতে মুশফিক যে শ্রীলঙ্কা ম্যাচের পরই দেশে ফিরবেন, আগেই জানা গিয়েছিল। বিরতিতে ব্যক্তিগত কাজে সাকিবও গেছেন ঢাকায়। দুজনেরই ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ খেলতে ফিরে আসার কথা মঙ্গল-বুধবারের মধ্যে। 

সকালে কোথায় যেন গিয়েছিলেন চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। খেলোয়াড়দের বিষণ্ন দেখালেও কোচকে বেশ ইতিবাচকই দেখাল। ‘হ্যাঁ, এই কন্ডিশনে একটা ভালো সুযোগ ছিল আমাদের। কিন্তু হয়নি। সামনে বিশ্বকাপ, দেখা যাক…’—বলতে বলতে হঠাৎ এক সাংবাদিকের কথায় থামলেন বাংলাদেশের লঙ্কান কোচ। হাথুরু একগাল হাসিতে তাঁর কাছে জানতে চাইলেন, ‘আপনি কি এখনো আমাদের আশা দেখছেন (এশিয়া কাপে) ?’ কিছুক্ষণ পর দলের এক সদস্যই বললেন, ‘এখনো কিন্তু সব শেষ বইলেন না। কাগজে-কলমের সমীকরণ কখন কী হয়ে যায়, আমরা কি গ্রুপ পর্বেই দেখিনি? যেভাবে সুপার ফোরে আমরা উঠলাম।’ 

আপাতত তাঁর কথাটা রসিকতাই মনে হবে। বাস্তবতা বলছে, বাংলাদেশের এই এশিয়া কাপ শেষ। ভারতের বিপক্ষে ম্যাচটা শুধুই আনুষ্ঠানিকতা। এ টুর্নামেন্টেও ব্যর্থতার খতিয়ান বেশি। গতবারের সঙ্গে এবারের পার্থক্য একটাই, অন্তত সুপার ফোরে খেলেছে বাংলাদেশ। টুর্নামেন্টের বিশ্লেষণ করতে গিয়ে সাকিব পরশু ম্যাচ শেষে বললেনই, ‘একটা রিয়েলিটি চেক’ ছিল এই টুর্নামেন্ট। 

অথচ বিশ্বকাপ শুরুর এক মাসও নেই। দলের সমন্বয়ের ঠিক নেই, অনেক খেলোয়াড় ফর্মে নেই। ২০২৩ এশিয়া কাপের টেকনিক্যাল কমিটির সদস্য হয়ে কলম্বোয় আসা বাংলাদেশ দলের সাবেক অধিনায়ক আকরাম খান তাই বললেন, ‘প্রতিটি দলই বিশ্বকাপের দু-তিন বছর আগে পরিকল্পনা ও লক্ষ্য ঠিক করে। এখানে আমরা অনেক পিছিয়ে আছি। এই এশিয়া কাপে নিজেদের শক্তি ও সুনাম অনুযায়ী আমরা ভালো খেলতে পারিনি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হেরেই চলেছে নিউজিল্যান্ড, উড়ছে উইন্ডিজ

ক্রীড়া ডেস্ক    
নিউজিল্যান্ডকে ৭ রানে হারিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ছবি: ক্রিকইনফো
নিউজিল্যান্ডকে ৭ রানে হারিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ছবি: ক্রিকইনফো

টি-টোয়েন্টিতে জয় ‘সোনার হরিণ’ হয়ে উঠেছে নিউজিল্যান্ডের কাছে। জুলাইয়ে হারারেতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৩ রানে জয়ের পর কিউইরা তিনটি করে টি-টোয়েন্টি খেলেছে অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। তবে এই ৬ টি-টোয়েন্টিতে নেই কোনো জয়। আজ অকল্যান্ডে জয়ের কাছাকাছি গিয়েও কিউইরা কাটাতে পারল না জয়খরা।

নিউজিল্যান্ড টি-টোয়েন্টিতে জয়ের দেখা না পেলেও ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত সংস্করণে উড়ছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। নেপালের কাছে দুই টি-টোয়েন্টি হারের পর এই সংস্করণে টানা পাঁচ ম্যাচ জিতেছে উইন্ডিজ। যার মধ্যে রয়েছে সবশেষ বাংলাদেশকে ৩-০ ব্যবধানে ধবলধোলাই। সেই ধারাবাহিকতায় অকল্যান্ডে আজ সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে নিউজিল্যান্ডকে ৭ রানে হারিয়েছে উইন্ডিজ। পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেছে ক্যারিবীয়রা।

১৬৫ রানের লক্ষ্যে নেমে ৩ ওভারে কোনো উইকেট না হারিয়ে ৩০ রান করে নিউজিল্যান্ড। চতুর্থ ওভারের প্রথম বলে ডেভন কনওয়েকে (১৩) ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন ম্যাথু ফোর্ড। দারুণ শুরুর পরই খেই হারিয়ে ফেলে স্বাগতিকেরা। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকা নিউজিল্যান্ডের স্কোর এক পর্যায়ে হয়ে যায় ১৬.৪ ওভারে ৯ উইকেটে ১০৭ রান। যেখানে নিশাম ২ রানে জীবন পেয়ে আউট হয়েছেন ১১ রানে।

নিউজিল্যান্ডের হার যখন সময়ের ব্যাপার মাত্র, তখন প্রতিরোধ গড়ে তোলেন মিচেল স্যান্টনার ও জ্যাকব ডাফি। জয়ের প্রায় কাছাকাছি পৌঁছেই গিয়েছিল কিউইরা। কিন্তু শেষ দুই বলে যখন ১২ রানের সমীকরণের সামনে স্বাগতিকেরা, তখন স্যান্টনার ডট দিলে সেই আশাটুকু শেষ হয়ে যায়। ইনিংসের শেষ বলে কিউই অধিনায়ক চার মারলেও সেটা শুধু হারের ব্যবধান কমাতে পেরেছে। দশম উইকেটে স্যান্টনার-ডাফি গড়েন ২০ বলে ৫০ রানের অবিচ্ছেদ্য জুটি। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৫৭ রানে আটকে যায় কিউইরা। ইনিংস সর্বোচ্চ ৫৫ রান করে অপরাজিত থাকেন স্যান্টনার। ২৮ বলের ইনিংসে ৮ চার ও ২ ছক্কা মেরেছেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের জেইডেন সিলস ৪ ওভারে ৩২ রানে নিয়েছেন ৩ উইকেট।

টস জিতে আজ ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক মিচেল স্যান্টনার। আগে ব্যাটিং পাওয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোর এক পর্যায়ে ছিল ৭ ওভারে ৩ উইকেটে ৪৩ রান। এখান থেকেই রান তোলার গতি বাড়াতে থাকে উইন্ডিজ। চতুর্থ উইকেটে ৩৩ বলে ৫৪ রানের জুটি গড়েন রস্টন চেজ ও শাই হোপ। শেষ ৫ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ৫১ রান যোগ করায় উইন্ডিজ নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে করেছে ১৬৪ রান। ইনিংস সর্বোচ্চ ৫৩ রান করেন অধিনায়ক হোপ। ৩৯ বলের ইনিংসে মেরেছেন ৪ চার ও ৩ ছক্কা।

ছয় নম্বরে নামা রভমান পাওয়েলের ৩৩ রানের ইনিংসটা ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোর ১৬০ পেরোতে সহায়তা করেছে। ২৩ বলের ইনিংসে দুটি করে চার ও ছক্কা মেরেছেন। এই ইনিংস খেলার পথে ১, ২৩ ও ৩০ রানে জীবন পেয়েছেন তিনি। নিউজিল্যান্ডের জাকারি ফুকস ও জ্যাকব ডাফি নিয়েছেন দুটি করে উইকেট। যাঁর মধ্যে ডাফি ৪ ওভারে খরচ করেন ১৯ রান। সবশেষ ৭ টি-টোয়েন্টির মধ্যে চারটিতেই হেরেছে কিউইরা। বৃষ্টিতে ভেসে গেছে তিন টি-টোয়েন্টি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাংলাদেশকে সহজেই হারিয়ে সমতায় আফগানরা

ক্রীড়া ডেস্ক    
১০২ রানের বড় জয় তুলে নিয়েছে সফরকারী দল। ছবি: বিসিবি
১০২ রানের বড় জয় তুলে নিয়েছে সফরকারী দল। ছবি: বিসিবি

সিরিজে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ ছিল বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব ১৯ দলের সামনে। কিন্তু তৃতীয় ওয়ানডেতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ন্যূনতম লড়াই করতে পারেনি আজিজুল হাকিম তামিমের দল। তাঁদের ১০২ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়ে সিরিজে সমতা ফেরাল আফগান যুবারা।

বিস্তারিত আসছে......

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাকিমির গুরুতর চোট, চিন্তিত পিএসজি কোচ

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ১৬: ১৯
প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে মাঠ ছাড়েন তারকা ডিফেন্ডার। ছবি: এক্স
প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে মাঠ ছাড়েন তারকা ডিফেন্ডার। ছবি: এক্স

চ্যাম্পিয়নস লিগে মঙ্গলবার রাতটা খুবই দুর্বিষহ ছিল পিএসজির জন্য। তাঁদের মাঠ পার্ক দে প্রিন্সেস থেকে ২-১ গোলের জয় নিয়ে ফিরেছে বায়ার্ন মিউনিখ। ম্যাচ হারার পাশাপাশি আরও দুঃসংবাদ পেয়েছে ফ্রান্সের রাজধানী পাড়ার ক্লাবটি। চোট পেয়েছেন দলটির দুই তারকা ফুটবলার উসমান দেম্বেলে ও আশরাফ হাকিমি।

ম্যাচের ২৫ মিনিটে পায়ে অস্বস্তি অনুভব করায় মাঠ ছাড়েন দেম্বেলে। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ের সপ্তম মিনিটে আরও একটি ধাক্কা খায় পিএসজি। লুইস দিয়াসের ফাউলের শিকার হয়ে মাঠ ছাড়েন হাকিমি। বাইসাইকেল কিক নেওয়ার সময় মাঝমাঠে এগিয়ে স্বাগতিকদের এই রাইট ব্যাকের পায়ে আঘাত করেন দিয়াস। ব্যথায় কাতরাতে শুরু করেন মরক্কোন ফুটবলার।

ব্যথার তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে, কেঁদেই দেন হাকিমি। দ্রুত মেডিকেল টিমের সদস্যরা মাঠে হাজির হন। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ ছিল যে, শেষ পর্যন্ত মেডিকেল স্টাফদের সহায়তায় মাঠ ছাড়েন হাকিমি। তাঁকে ফাউল করায় প্রথমে দিয়াসকে হলুদ কার্ড দেখান রেফারি। পরবর্তীতে বিষয়টি আরও ভালোভাবে দেখার জন্য ভিএআরের সাহায্য নেন ম্যাচ পরিচালক। ঘটনার বিস্তারিত দেখার পর দিয়াসকে লাল কার্ড দেখান রেফারি।

হাকিমিকে কতদিন মাঠের বাইরে থাকতে হবে সে বিষয়ে এখনো কিছু জানা যায়নি। তবে ব্যথার তীব্রতা বলছে, বড় ধরনের চোটই পেয়েছেন হাকিমি। এভাবে ফাউল করায় দিয়াসের সমালোচনা করেছেন পিএসজির কোচ লুইস এনরিকে। হাকিমির চোট যে খুবই গুরুতর সেটাই বোঝা গেল তাঁর কথায়।

হাকিমির চোট প্রসঙ্গে ম্যাচ শেষে এনরিকে বলেন, ‘রিপোর্ট হাতে পাওয়ার আগ পর্যন্ত আমাদের অপেক্ষা করতে হবে। চিকিৎসকরা একদিন পর হাকিমির চোট নিয়ে আমাদের জানাবেন। এটা লজ্জাজনক। খেলোয়াড়দের জন্য এটা কঠিন। জামাল মুসিয়ালার ইনজুরির কথা আমার মনে আছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিএনপি ক্ষমতায় এলে কি দেশে ফেরার সুযোগ হবে সাকিবের

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ১৫: ৫২
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তো বটেই, বাংলাদেশের মাঠে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে খেলার সুযোগ মিলছে না সাকিবের। ছবি: ফাইল ছবি
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তো বটেই, বাংলাদেশের মাঠে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে খেলার সুযোগ মিলছে না সাকিবের। ছবি: ফাইল ছবি

বিদেশে টি-টোয়েন্টি, টি-টেনের ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টে সাকিব আল হাসান খেলছেন নিয়মিত। কিন্তু আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে দূরে আছেন ১৩ মাস। ঘরের মাঠে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ (ডিপিএল), বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগেও (বিপিএল) খেলার সুযোগ মিলছে না। এ অবস্থা কি চলতেই থাকবে? দেশের সাবেক ফুটবলার আমিনুল হক মনে করেন সাকিবের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে রাষ্ট্র।

সাকিবের দেশে ফিরতে না পারার কারণটা যে রাজনৈতিক, সেটা সকলেরই জানা। ৫ আগস্ট পতন হওয়া আওয়ামী সরকারের সংসদ সদস্য পরিচয়ই এখানে মূল প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে। তাঁর নাম উঠেছে পোশাক শ্রমিক হত্যা মামলা, চেক প্রতারণার মামলাসহ বিভিন্ন মামলায়। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে হবে জাতীয় নির্বাচন। দেশের শাষণভার নেবেন নির্বাচিত দল। যদি বিএনপি ক্ষমতায় আসে সাকিবের কি দেশে ফেরার সুযোগ হবে—এই প্রশ্নের উত্তরে আজকের পত্রিকাকে পরশু দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আমিনুল বলেন, ‘আপনি যে বিষয়টি বলছেন, তা হচ্ছে, যেহেতু সাকিবের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয়ভাবে মামলা হয়েছে, সেটা কিন্তু অবৈধ সরকারের ৩০০ জনের একজন এমপি হওয়ায় সাকিবের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। বাংলাদেশের মানুষের বিরুদ্ধে গিয়ে যখন ওই স্বৈরাচার সরকার মানুষকে যেভাবে হত্যা করেছে, যেভাবে গুম করেছে, এটার দায়ভার ৩০০ জনের একজনকে নিতে হবে। এটা অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই। তবে এটার সিদ্ধান্ত রাষ্ট্র নেবে।’

সাবেক ফুটবলারের পাশাপাশি আমিনুলের রাজনৈতিক পরিচয়ও আছে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১৬ আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী দেশের এই সাবেক ফুটবলার। উপমহাদেশের অন্যান্য রাজনীতিবিদদের মতো তিনিও নানারকম হামলার শিকার হয়েছেন। যদিও এসব ব্যাপারকে মোটেই সমর্থন করেন না দেশের সাবেক এই ফুটবলার। আজকের পত্রিকাকে আমিনুল বলেন, ‘একজন সাবেক জাতীয় ফুটবলার, সাবেক জাতীয় অধিনায়ক হিসেবে যেটা রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করেছি, আমাকে প্রতি মুহূর্তে মামলা-হামলায় জর্জরিত করেছে। শারীরিকভাবে নির্যাতিত হয়েছি। আমাকে গুলিবিদ্ধ করা হয়েছে। রক্তাক্ত হয়েছি। এই ধরনের পরিস্থিতি যেন কোনোভাবে খেলোয়াড়ের সঙ্গে না হয়, এটা আমি কখনোই চাই না এবং সমর্থনও করি না। একজন মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার হচ্ছে, ভিন্নমত থাকতে পারে। আমি আমার মতামত দিয়ে আমার কাজ যদি সফলভাবে শেষ করতে পারি, এটা আমার যোগ্যতা অনুযায়ী করব। কিন্তু ভিন্নমতের কারণে যে আমার ওপরে বা অন্য কারও ওপরে জুলুম-নির্যাতন হবে, সেটাকে কখনোই সমর্থন করি না এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের কোনো জুলুম নির্যাতন হবে না।’

বাংলাদেশের জার্সিতে সাকিব সবশেষ খেলেছেন গত বছরের অক্টোবরে। ভারতের বিপক্ষে সেই টেস্ট ম্যাচ হয়েছিল কানপুরে। সেই টেস্টের আগে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছিলেন সাকিব। ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট খেলতে চেয়েছিলেন মিরপুরে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তাঁকে নিয়েই শুরুতে দল ঘোষণা করেছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। কিন্তু নানা জটিলতায় ঘরের কাছাকাছি এসেও ফিরতে হয়েছিল বাংলাদেশের তারকা অলরাউন্ডারকে। ক্রিকবাজে কদিন আগে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সাকিব জানিয়েছেন, মিরপুরে ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ খেলতে চান তিনি।

আরও পড়ুন:

‘এক বছরে ক্রীড়াঙ্গনে খুব বেশি পরিবর্তন চোখে পড়েনি’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত