Ajker Patrika

হঠাৎ বিসিবিতে দুদকের দল, কোটি টাকার গরমিল নিয়ে তদন্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৫ এপ্রিল ২০২৫, ১৫: ৩৬
বিসিবিতে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একটি দল। ছবি: আজকের পত্রিকা
বিসিবিতে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একটি দল। ছবি: আজকের পত্রিকা

মিরপুরে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) কার্যালয়ে আজ সকাল থেকে চলছিল গুঞ্জন—দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একটি দল অভিযানে আসছে। দুপুর ১২টার আগে সেটা সত্যি হয়েছে। তিন সদস্যের একটি দল বিসিবি কার্যালয়ে গিয়ে অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু করে।

বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ দেশে না থাকলেও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজন তখন অফিসে ছিলেন। দুদক কর্মকর্তাদের আগমনে বিসিবির শীর্ষ পর্যায়ে একধরনের অস্থিরতা দেখা যায়। প্রথমে গণমাধ্যমকর্মীদের ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়েছিল। পরে সাংবাদিকদের কার্যালয়ে ঢোকার অনুমতি দেন সুজন।

দুদকের এই অভিযান পরিচালনা করেছেন দুই সহকারী পরিচালক আল আমিন ও মাহমুদুল হাসান এবং পরিদর্শক খলিলুর রহমান। অনুসন্ধান চলা অবস্থায় এক ব্রিফিংয়ে তাঁরা জানান, বিসিবির বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কয়েকটি অভিযোগের ভিত্তিতেই এই অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। তিনটি অভিযোগ রয়েছে বিসিবির বিরুদ্ধে। সেগুলো হলো—তৃতীয় বিভাগ ক্রিকেট লিগে দল নির্বাচনে অনিয়ম ও অর্থ লেনদেন, বিপিএলের টিকিট বিক্রিতে আয় গরমিল এবং মুজিব শতবর্ষ উদ্‌যাপনের বাজেট ও ব্যয়ের অসামঞ্জস্যতা।

তৃতীয় বিভাগে দল নির্বাচনের ক্ষেত্রে আগের তুলনায় অস্বাভাবিক হারে আবেদন বেড়ে যাওয়ায় সন্দেহের উদ্রেক করেছে। সহকারী পরিচালক আল আমিন বলেন, ‘পূর্বে যেখানে ২-৩টি দল আবেদন করত, এ বছর ৬০টির বেশি দল আবেদন করে। আগে আবেদন ফি ছিল ৫ লাখ টাকা, এবার তা কমিয়ে ১ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়। হঠাৎ করে এত বেশি আবেদন ও আবেদন ফি কমার পেছনে কোনো গোপন লেনদেন বা সিন্ডিকেট সক্রিয় থাকতে পারে বলে আমরা ধারণা করছি। স্থানীয় ক্লাব ও সংগঠকদের প্রভাব এবং আর্থিক লেনদেনের বিষয়েও প্রাথমিকভাবে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। আমরা এখন বিসিবির জমা দেওয়া নথিপত্র খতিয়ে দেখছি।’

টিকিট বিক্রিতে বিসিবির দেখানো আয় ও বাস্তব আয়েও বড় ধরনের গরমিল রয়েছে বলে দুদকের সন্দেহ। আল আমিন বলেন, ‘বিপিএলের তৃতীয় থেকে দশম আসর পর্যন্ত বিসিবি যে আয় দেখিয়েছে, তা প্রায় ১৫ কোটি টাকা। অথচ একাদশ আসরে অনলাইন টিকিট বিক্রি করেই বিসিবি আয় করেছে প্রায় ১৩ কোটি টাকা। আগে টিকিট বিক্রির তথ্য হয় গোপন রাখা হয়েছে, অথবা সেখানে বড় ধরনের অর্থ আত্মসাৎ ঘটেছে।’

দুদক আরও একটি গুরুতর অভিযোগ পেয়েছে মুজিব শতবর্ষ উদ্‌যাপনকে ঘিরে। যেখানে ১৫ কোটি টাকার বাজেট দেওয়া হয়েছিল, সেখানে ব্যয় দেখানো হয়েছে ২৫ কোটি টাকা। অথচ দুদকের প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী প্রকৃত ব্যয় হয়েছে মাত্র ৭ কোটি টাকা। অর্থাৎ ১৮ কোটির বেশি অর্থের কোনো স্বচ্ছ হিসাব পাওয়া যায়নি। সহকারী পরিচালক আল আমিন বলেন, ‘দুদক নিজেরা কোনো সিদ্ধান্ত নিয়ে মাঠে নামে না। গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন উৎস থেকে পাওয়া অভিযোগ যাচাই-বাছাই করে কমিশনের অনুমোদনের পরই আমরা অভিযান চালাই। বিসিবির ক্ষেত্রেও ঠিক তাই হয়েছে। আজকের অভিযানে আমরা শুধু তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করছি। বিসিবি আমাদের সহযোগিতা করছে। সবকিছু কমিশনের কাছে উপস্থাপন করা হবে। পরবর্তী সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এরপর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

দুদকের অভিযান নিয়ে সাংবাদিকদের বিসিবির প্রধান নির্বাহী সুজন সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন। প্রধান নির্বাহী বলেন, ‘সরকারি প্রতিষ্ঠানের নির্দেশনায় বিসিবি সব সময়ই সহযোগিতা করে এসেছে। দুদকের পক্ষ থেকে যে নথিপত্র চাওয়া হয়েছে, আমরা তা সরবরাহ করছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জাতিসংঘে চিঠি লিখলেন মোগল সম্রাটের বংশধর, সুরক্ষা চাইলেন আওরঙ্গজেবের সমাধির

সেভেন সিস্টার্সে বিনিয়োগ টানতে বিশেষ সম্মেলন আয়োজন করছে ভারত

কবি রফিক আজাদের স্মৃতিবিজড়িত বাড়ি ভেঙে ফেলা হচ্ছে

আফ্রিকা থেকে পিঁপড়া যাচ্ছে ইউরোপে, কেনিয়ার বিমানবন্দরে জব্দ কয়েক লাখ

কফিশপে মারধরের শিকার সেই তরুণীর খোঁজ মিলেছে, থানায় জিজ্ঞাসাবাদ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত