Ajker Patrika

এবার মাহমুদউল্লাহদের আরও বড় ব্যাটিং বিপর্যয় 

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৩ নভেম্বর ২০২১, ০০: ৪৪
এবার মাহমুদউল্লাহদের আরও বড় ব্যাটিং বিপর্যয় 

পুরো ইনিংসে তিনটা চার ও একটি ছক্কা। দুই অঙ্কও পেরোতে পারেননি আট ব্যাটার। এক শর ওপর স্ট্রাইক রেটে ব্যাটিং করেছেন মাত্র একজন ব্যাটার। ৫৯ বলে কোনো রানই করতে পারেননি ব্যাটাররা। এরপর বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডে কত রান উঠবে তা তো সহজেই আঁচ তো করা যায়। মাহমুদউল্লাহর দলকে ১০০ রানের আগেই গুঁড়িয়ে দিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। 

বাংলাদেশের সেমিফাইনালে খেলার আশা বলতে গেলে আগেই শেষ। অনেকগুলো অসম্ভব সমীকরণই কেবল পারত মাহমুদউল্লাহদের সেমিফাইনালে তুলতে। তার মধ্যে একটি ছিল আজ দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জয়। কিন্তু শুরুতে ব্যাটিংয়ে নেমে ১৮.২ ওভারে ৮৪ রানেই কিনা শেষ বাংলাদেশ। 

ব্যাটিংয়ে নেমে দুই ওপেনার লিটন দাস ও মোহাম্মদ নাঈম সাবধানী শুরু করেছিলেন। কিন্তু বাংলাদেশের উইকেট ধরে রাখার এই প্রচেষ্টা পাঁচ বলেই শেষ করে দিলেন কাগিসো রাবাদা। চতুর্থ ওভারের শেষ দুই বলে নাঈম ও লিটনকে ফিরিয়ে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকান পেসার। ইনিংসে প্রথমবার হাত খুলে মারতে গিয়ে নাঈম ক্যাচ অনুশীলন করলেন। শর্ট কাভারে দাঁড়ানো রিজা হেনরিকস বলটি ধরতে ভুল করেননি। পরের বলে দুর্দান্ত এক ইয়র্কারে এলভিডব্লু সৌম্যও (০)। 

ষষ্ঠ ওভারের প্রথম বলে আউট হতে হতেও বেঁচে রাবাদাকে হ্যাটট্রিক বঞ্চিত করলেও বেশিক্ষণ উইকেটে থাকতে পারলেন না মুশফিকুর রহিম। দুই বল পরই খোঁচা মেরে ক্যাচ তুলে দিলেন স্লিপে। দুর্দান্ত দক্ষতায় রিজা হ্যানড্রিকস লুফে নেন ক্যাচটি। মুশফিকের নামের পাশেও ওই শূন্য। নিজের দেশের এক পেসারের সামনে নাকানিচুবানি খেয়ে নাঈম–সৌম্য–মুশফিকদের একের পর এক আউট হতে দেখলেন প্যাভিলিয়নে দুই আফ্রিকান রাসেল ডমিঙ্গো ও অ্যাশওয়েল প্রিন্স। 

 ২৪ রানেই তিন উইকেট হারানোর পর বলতে গেলে বাংলাদেশ ধুঁকতে থাকে। ব্যাটারদের শরীরী ভাষায় ফুটে উঠছিল তা। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ব্যাটিংয়ে নেমে শুরু থেকেই বেশ অস্বস্তিতে পড়েন। সেই অস্বস্তির মূল্য চুকালেন নরকিয়ার এক বাউন্সারে। শরীর বাঁচাতে গিয়ে লাফিয়ে উঠেছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। গ্লাভস আর কাঁধ ছুঁয়ে বলটি চলে যায় পয়েন্ট অঞ্চলের আকাশে। মার্কারাম সহজেই লুফে নেন বলটি। 

অন্যদের আসা–যাওয়ার মিছিলে এক প্রান্ত আগলে রাখেন লিটন। তাঁকে সঙ্গ দিয়ে যখন স্কোরবোর্ডে কিছু রান তোলা দরকার তখন কিনা আফিফ হোসেন প্রথম বলেই উড়িয়ে মারতে গিয়ে উপহার দিলেন উইকেট। 

 ২০০৭ টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এই দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দারুণ শুরু করেছিল বাংলাদেশ। কেপটাউনে সেদিন ৩৪ রানে তিন উইকেট হারালেও আফতাব আহমেদের ঝড়ে ৪.২ ওভারেই ৫৮ রান তুলে ফেলেছিল বাংলাদেশ। আজ অকাতরে উইকেট বিলিয়ে দিলেও রানও ওঠেনি স্কোরবোর্ডে। ৩৪ রানেই পাঁচ উইকেট হারিয়ে ভেঙে পড়ে বাংলাদেশ দলের মেরুদণ্ড। 
৪৫ রান হতেই এবার ফিরলেন লিটন দাসও (২৪)। এ সময় বাংলাদেশের সামনে উঁকি দিচ্ছিল টি–টোয়েন্টিতে নিজেদের সর্বনিম্ন রানের লজ্জার রেকর্ডের আগে থামার। ২০১৬ বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৭০ রানে অলআউট হয়েছিল বাংলাদেশ। শেষ দিকে মেহেদী হাসান ও শামীম হোসেনের কারণে অক্ষত থাকে ওই রেকর্ড। শেষ পর্যন্ত মেহেদীর ২৭ রানে ভর করে সব কটি উইকেট হারিয়ে ৮৪ রান করে বাংলাদেশ। 

এই প্রথম টি–২০ বিশ্বকাপে সাকিব আল হাসানকে ছাড়া খেলতে নেমেছে বাংলাদেশ। চোটে পড়ায় বিশ্বকাপই শেষ হয়ে গেছে বাঁহাতি অলরাউন্ডারের। তাঁর জায়গায় আজ বাংলাদেশ শামীমকে খেলিয়েছে। সুপার টুয়েলভে ছন্নছাড়া বোলিং করা মোস্তাফিজকে একাদশের বাইরে রাখার সাহসও দেখিয়েছে বাংলাদেশ। বাঁহাতি পেসারের জায়গায় একাদশে ফিরেছেন নাসুম আহমেদ। 

এত এত পরিবর্তন নিয়ে নামা বাংলাদেশ শুধু পারল না নিজেদের ব্যাটিংটা পরিবর্তন করতে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত