Ajker Patrika

বার্মিংহাম-দুবাই-আবুধাবি ঘুরে ফাইনালের ১০ মিনিট আগে পাকিস্তানে নেমে চ্যাম্পিয়ন রাজা

ক্রীড়া ডেস্ক    
লাহোর কালান্দার্সকে গত রাতে রুদ্ধশ্বাস ম্যাচ জিতিয়ে চ্যাম্পিয়ন করেছেন রাজা। ছবি: ক্রিকইনফো
লাহোর কালান্দার্সকে গত রাতে রুদ্ধশ্বাস ম্যাচ জিতিয়ে চ্যাম্পিয়ন করেছেন রাজা। ছবি: ক্রিকইনফো

জো জিতা ওহি সিকান্দার—লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে সিকান্দার রাজা গত রাতে এই কথারই যেন জলজ্যান্ত উদাহরণ। ভ্রমণক্লান্তি তো ছিলই। একাধিক শহর ঘুরে লাহোরে পা রাখলেন ফাইনালে টসের ঠিক ১০ মিনিট আগে। কিন্তু পারফরম্যান্সে সেগুলোর কোনো কিছুই যে বুঝতে দেননি রাজা।

নটিংহামে গত পরশু তিন দিনে শেষ হয়েছে ইংল্যান্ড-জিম্বাবুয়ে সিরিজের একমাত্র টেস্ট। এক দিন আগে টেস্ট শেষ হওয়ায় পিএসএল ফাইনাল খেলার সুযোগ তাঁর সামনে তৈরি হলেও পাড়ি দিতে হয়েছে অনেক দূরের পথ। বার্মিংহাম-দুবাই-আবুধাবি ঘুরে গত রাতে লাহোরে পা রেখে চ্যাম্পিয়ন হয়ে গেলেন। ভ্রমণক্লান্তি ছাপিয়ে ফাইনালের মতো ম্যাচে স্নায়ুচাপ ধরে রেখে যেভাবে জিতেছেন, সেটা রাজ্যজয়ী রাজার চেয়ে কোনো অংশে কম না। লাহোর কালান্দার্সকে ৬ উইকেটের শ্বাসরুদ্ধকর জয় এনে দেওয়ার পর এখন তাই চলছে রাজার বন্দনা। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর তাঁকে কাঁধে নিয়ে মাঠ ঘুরিয়েছেন সতীর্থরা।

লাহোর কালান্দার্সকে চ্যাম্পিয়ন করার পর রাজা তাঁর ইংল্যান্ড থেকে পাকিস্তান সফরের দীর্ঘযাত্রার বর্ণা দিয়েছেন। জিম্বাবুয়ের অলরাউন্ডার বলেন, ‘টেস্টে গত পরশু ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ২৫ ওভার বোলিং করেছি। ২০ ওভার গতকাল ব্যাটিং করেছি। বার্মিংহামে ডিনার করেছি। দুবাইয়ে করেছি সকালের নাশতা। সেখান থেকে লাঞ্চ করতে গেলাম আবুধাবি। তারপর বিমান ধরে পাকিস্তানে পৌঁছে ডিনার সারলাম। আমার মতে পেশাদার ক্রিকেটারদের জীবন তো এমনই হয়। সত্যিই আমি অনেক সম্মানিত। এমন জীবন পেয়ে ভালোই লাগছে।’

লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে গত রাতে যাঁরা পিএসএল ফাইনাল দেখেছেন, তাঁরা নিশ্চয়ই লাহোর কালান্দার্স-কোয়েটা গ্ল্যাডিয়েটর্স ম্যাচের রোমাঞ্চ অনুভব করতে পেরেছেন। টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং নিয়ে কোয়েটা ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ২০১ রান করেছে। হাতে ৬ উইকেট নিয়ে শেষ তিন বলে লাহোরের দরকার ছিল ৮ রান। এমন অবস্থায় ২০তম ওভারের চতুর্থ বলে ফাহিম আশরাফকে ছক্কা মেরে শিরোপাটা নিয়ে আসেন লাহোরের হাতের মুঠোয়। আর পঞ্চম বলে চার মেরে লাহোর কালান্দার্সকে এনে দিলেন তৃতীয় পিএসএল শিরোপা।

লাহোরকে গত রাতে চ্যাম্পিয়ন করার পথে ৭ বলে দুটি করে চার ও ছক্কায় ২২ রানের ক্যামিও ইনিংস খেলেন রাজা। চাপ সামলে জিম্বাবুয়ের অলরাউন্ডার যে ইনিংস খেলেছেন, তাতে মুগ্ধ লাহোর কালান্দার্স অধিনায়ক শাহিন শাহ আফ্রিদি। ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে আফ্রিদি বলেন, ‘কুশল দারুণ একটা ইনিংস খেলেছে। আমার মতে রাজাকে অনেক কৃতিত্ব দিতে হবে। গতকাল (পরশু) সে ম্যাচ খেলেছে। তার পরিবারকে কৃতিত্ব দিতে হবে।তাকে বলেছিলাম যে তুমি এখানে এক উদ্দেশ্য নিয়ে এসেছ। সেটাই আমাদের শিরোপা জিততে সাহায্য করেছে।’

৩১ বলে ৬২ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে ফাইনালের সেরা খেলোয়াড় হয়েছেন কুশল পেরেরা। ৫ চার ও ৪ ছক্কা মেরেছেন। পঞ্চম উইকেটে রাজার সঙ্গে ১৯ বলে ৫৯ রানের অবিচ্ছেদ্য জুটি গড়তে অবদান রেখেছেন। সেটার চেয়েও বড় কথা, চাপের মুহূর্তে যেভাবে হিসেব-নিকেশ করে রাজা-পেরেরা এগিয়েছেন, সেটা অবিশ্বাস্য। শেষ ৮ বলে ২৩ রানের সমীকরণ যখন লাহোর কালান্দার্সের সামনে, তখন মোহাম্মদ আমিরকে চার ও ছক্কা মেরে পেরেরা সমীকরণ তুলনামূলক সহজ করে নিয়ে আসেন। এরপর তুলির শেষ আঁচড় তো রাজাই দিয়েছেন। ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে পেরেরা বলেছেন, ‘সে সময় আমাদের ঝুঁকি নিতে হতো ও সেটা কাজে দিয়েছে। আমি ও রাজা হিসেব করে এগিয়েছি। পরিস্থিতি যাচাই করেছি। রাজা অনেক বড় অবদান রেখেছে।’

কোয়েটাকে গত রাতে হারিয়ে ১১ বছর আগের আইপিএলের রেকর্ড ভেঙে দিল লাহোর কালান্দার্স। কোয়েটা গ্ল্যাডিয়েটর্সের দেওয়া ২০২ রানের লক্ষ্য তাড়া করে স্বীকৃত টি-টোয়েন্টির ফাইনালে সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ডটা নিজেদের করে নিল রিশাদ হোসেন-রাজাদের লাহোর। এর আগে এই রেকর্ডটা ছিল কলকাতা নাইট রাইডার্সের। ২০১৪ আইপিএলে পাঞ্জাব কিংসের দেওয়া ২০০ রানের লক্ষ্য তাড়া করে ৩ উইকেটে জিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল কলকাতা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভারতকে এত বেশি হারাতে পারেনি আর কোনো দল

ক্রীড়া ডেস্ক    
দ্বিতীয় টি–টোয়েন্টিতে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ৫১ রানে হেরেছে ভারত। ছবি: ক্রিকইনফো
দ্বিতীয় টি–টোয়েন্টিতে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ৫১ রানে হেরেছে ভারত। ছবি: ক্রিকইনফো

ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি দিয়ে চন্ডিগড়ের মহারাজা ইয়াদাভিন্দ্র সিং ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রথম কোনো পুরুষ ক্রিকেটের আন্তর্জাতিক ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। এই ভেন্যুতে স্বাগতিকেদের শুরুটা হয় থাকল তিক্ততায় ভরা। প্রোটিয়াদের কাছে ৫১ রানে হেরেছে সূর্যকুমার যাদবের দল। তাদের হারিয়ে একটি রেকর্ড গড়ল সফরকারী দল।

টি–টোয়েন্টিতে এত দিন ভারতের বিপক্ষে সর্বোচ্চ জের রেকর্ড ছিল যৌথভাবে অস্ট্রেলিয়া এবং দক্ষিণ আফ্রিকার দখলে। ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নদের সমান ১২টি করে ম্যাচ হারিয়েছিল এই দুই দল। কিন্তু গতকাল এই রেকর্ডটা এককভাবে নিজেদের করে নিয়েছে আফ্রিকান জায়ান্টরা। ভারতের বিপক্ষে এই সংস্করণে এখন সর্বোচ্চ ১৩টি জয় তাদের।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিজয়ের মাসে মুক্তিযুদ্ধ-মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি তানজিম সাকিবের শ্রদ্ধা

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ১২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ০২
তানজিম হাসান সাকিব। ছবি: এক্স
তানজিম হাসান সাকিব। ছবি: এক্স

এদেশের মানুষের কাছে ডিসেম্বর মানেই বিজয়ের আরেক নাম। ১৯৭১ সালের এই মাসেই দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের পর পাক হানাদার বাহিনীর কাছ থেকে স্বাধীন হয়েছিল বাংলাদেশ, জন্ম হয়েছিল নতুন একটি সূর্যের। তাই ডিসেম্বর এলেই আলাদাভাবে বীর শহীদদের স্মরণ করে গোটা জাতি।

এবারও ব্যতিক্রম হচ্ছে না। ডিসেম্বর শুরু হতেই শহীদদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছে গোটা জাতি। ফেসবুকে নিজেদের মতো করে আবেগ মিশিয়ে শহীদদের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করছেন সবাই। তানজিম হাসান সাকিবও পিছিয়ে নেই। বিজয়ের মাসে মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানালেন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের এই পেসার। একাত্তরে যাঁরা রক্ত দিয়েছেন তাঁদের প্রতি গোটা জাতি ঋণী বলে মনে করেন তিনি।

নিজের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে সাকিব লিখেছেন, ‘আমি মুক্তিযুদ্ধকে নিয়ে গর্ববোধ করি। আমি মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে গর্ববোধ করি। যাদের ছিলো না ট্রেনিং, যারা প্রশিক্ষিত ছিলেন না, কিভাবে যুদ্ধ করতে হবে জানতেন না, তারপরও দেশের টানে মাটির টানে পাক হানাদার প্রশিক্ষিত আর্মিদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরেছিলেন। যারা আমদের ভীতু জাতি থেকে সাহসী জাতি করেছিলেন যাদের কারণে আমি আজ বাংলাদেশের পতাকা বিশ্বের বুকে ক্রিকেটের মাধ্যমে তুলে ধরতে পারছি, তাদের নিয়ে আমি গর্ব বোধ করি। বাংলাদেশের প্রকৃত হিরো প্রকৃত সেলিব্রিটি আমাদের মুক্তিযুদ্ধারা।’

বর্তমানে বাংলাদেশ দলের নিয়মিত মুখ সাকিব। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে ভারতের বিপক্ষে ওয়ানডে দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট শুরু করেন সিলেটের এই বোলার। পরবর্তীতে বাকি ২ সংস্করণেও অভিষেক হয় তাঁর। এখন পর্যন্ত দেশের জার্সিতে ১ টেস্ট, ১৫ ওয়ানডের পাশাপাশি ৪০টি টি-টোয়েন্টি খেলেছেন। সব সংস্করণ মিলিয়ে ঝুলিতে পুরেছেন ৭২ উইকেট।

আয়ারল্যান্ড সিরিজ শেষে আপাতত অবসর সময় কাটছে সাকিবের। আগামী ২৬ ডিসেম্বর বিপিএল দিয়ে মাঠে ফেরার কথা রয়েছে তাঁর। এই টুর্নামেন্ট শেষে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অংশ নেবে বাংলাদেশ। সে দলের অপরিহার্য সদস্য সাকিব। ইনজুরিতে না পড়লে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের পেস বিভাগের অন্যতম দায়িত্ব পালন করতে দেখা যাবে তাঁকে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শিশু সাজিদের মৃত্যুতে শোকাহত তাসকিন, চাইলেন দোয়া

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ১২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ১৪
সাজিদ আর বেঁচে নেই। ফাইল ছবি
সাজিদ আর বেঁচে নেই। ফাইল ছবি

বাঁচানো যায়নি রাজশাহীর তানোরের ২ বছরের শিশু সাজিদকে। গর্ত থেকে উদ্ধার করলেও জীবিত অবস্থায় পরিবারের কাছে ফিরে যাওয়া হয়নি তার। এমন মৃত্যুতে শোকের মাতম চলছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। সাজিদের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে ফেসবুকে বার্তা দিয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের পেসার তাসকিন আহমেদ।

নিজের ফেসবুক পেজে তাসকিন লিখেছেন, ‘একটা ছোট্ট প্রাণ আজ আমাদের সবাইকে কাঁদিয়ে আল্লাহর কাছে ফিরে গেল। হে আল্লাহ, এই শিশুটিকে জান্নাতুল ফেরদাউসের স্থায়ী সুখ দান করুন। শোকাহত পরিবারকে ধৈর্য ও সান্ত্বনা দান করুন।’

গত বুধবার হৃদয়বিদারক ঘটনাটির সূত্রপাত তানোর উপজেলার পাঁচন্দর ইউনিয়নের কোয়েলহাট গ্রামে। মা রুনা খাতুন এবং ভাইয়ের সঙ্গে বাড়ির পাশের একটি জমিতে হাঁটছিল সাজিদ। মা এবং ভাই অরক্ষিত গভীর নলকূপের গর্ত পার হলেও গর্তে পড়ে যায় সাজিদ।

পেছন থেকে ‘মা মা’ চিৎকার শুনে মা ফিরে দেখেন সাজিদ নেই। খড় সরিয়ে বুঝতে পারেন সাজিদ গর্তে পড়েছে। অল্প সময়ের মধ্যেই ঘটনাস্থলে মানুষের ভিড় জমতে শুরু করে। শুরু হয় উদ্ধার অভিযান। একে একে অভিযানে যোগ দেয় ফায়ার সার্ভিসের আটটি ইউনিট। টানা ৩২ ঘণ্টার চেষ্টা শেষে ৪৫ ফুট গভীর থেকে গতকাল রাত নয়টার দিকে সাজিদকে উদ্ধার করা হয়।

উদ্ধারের পরই সাজিদকে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়। কিন্তু কর্তৃব্যরত চিকিৎসক সাজিদকে মৃত ঘোষণা করেন। শিশুটি যে গর্তে পড়েছিল নলকূপের জন্য সে গর্ত করেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা ও জমির মালিক কছির উদ্দিন। তার বিচার চেয়েছেন সাজিদের মা। তিনি বলেন, ‘কছির উদ্দিন তিন জায়গা খুঁড়েছিল...দুই বছর ধরে গর্ত বন্ধ না করে রেখেছিল। কেন রেখেছিল? আমি তার বিচার চাই...কছিরের শাস্তি চাই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বসুন্ধরা-মোহামেডানের শিরোপার গতিপথ নির্ধারণী ম্যাচ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বিকেলে মাঠে নামবে দুদল। ছবি: বাফুফে
বিকেলে মাঠে নামবে দুদল। ছবি: বাফুফে

বাংলাদেশ ফুটবল লিগে দারুণ ছন্দে আছে বসুন্ধরা কিংস। হারানো শ্রেষ্ঠত্ব ফিরে পেতে যেন মরিয়া তারা। ৫ ম্যাচে ১৩ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে মারিও গোমেসের দল। বর্তমান চ্যাম্পিয়ন মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের সময়টা কাটছে উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে। এখনো সেভাবে ছন্দে ফিরতে পারেনি তারা। ৫ ম্যাচে ৭ পয়েন্ট নিয়ে চারে আলফাজ আহমেদের দল।

টেবিলে দুই দলের মধ্যে ব্যবধান স্পষ্ট। শিরোপা লড়াইয়ের গতিপথও অনেকটা পরিষ্কার হয়ে যাবে আজকের ম্যাচে। কিংস অ্যারেনায় সন্ধ্যা সাড়ে ৫টায় নামবে দুই দল। ঘরের মাঠ ও বর্তমান পারফর‍ম্যান্স বিবেচনায় বসুন্ধরা কিংসই এগিয়ে থাকবে।

কিংসের ঘরের মাঠ মোহামেডানের জন্য অবশ্য দুশ্চিন্তার নাম। কয়েকবার নিরাপত্তাহীনতার অভিযোগ তুলেছে তারা। সেই মাঠে গতকাল অনুশীলন করতে চাইলেও কিংসের বিরুদ্ধে বাধার অভিযোগ এনেছে তারা। তাই বাধ্য হয়ে অনুশীলন করতে হয় পল্টনের আউটার স্টেডিয়ামে।

মোহামেডানের কোচ আলফাজ আহমেদ গতকাল সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘বসুন্ধরার মতো একটা পেশাদার ক্লাব যে অপেশাদারত্ব দেখাল, সেটা আসলে চিন্তার বাইরে। আমাদের কেন অনুশীলনের সুযোগ দিল না, এটা আসলে আমি বুঝতে পারছি না। তাদের মানসিকতার অভাব আছে বলে মনে হয়।’

লিগে মোহামেডানের শুরুটা হয়েছিল হতাশায়। ফর্টিসের কাছে হারের পর পুলিশের বিপক্ষে ড্র করে সাদা-কালোরা। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনী লিমিটেডকে হারানোর পর আভাস দিচ্ছে চেনা রূপে ফেরার আভাস। এর ফকিরেরপুল ইয়ংমেন্স ক্লাব ও পিডব্লিউডিকেও হারিয়ে তারা। মাঠের বাইরে খুব একটা যে ভালো অবস্থায় আছে মোহামেডান, তা অবশ্য বলার উপায় নেই। খেলোয়াড়দের পারিশ্রমিক না পাওয়ার খবর চাউর হচ্ছে অনেক দিন। সেই জটিলতা অবশ্য মিটতে যাচ্ছে। আলফাজ বলেন, ‘ক্লাব অফিশিয়ালরাও আমাদের আশ্বস্ত করেছেন। খেলোয়াড়দের সুবিধা থেকে বঞ্চিত করবেন না। তারা শিগগির তাদের দেনা-পাওনার কিছুটা হলেও লাঘব করবে এবং প্লেয়াররা সবাই ফিট আছে আমার। ইনশা আল্লাহ, কালকের (আজ) ম্যাচে সবাই শতভাগ দেবে।’

ঘরোয়া ফুটবলের মৌসুমের শুরুটা হয়েছিল দুই দলের লড়াই দিয়ে। চ্যালেঞ্জ কাপের সেই ম্যাচে মোহামেডানকে ৪-১ গোলে হারিয়ে শিরোপা জেতে কিংস। লিগের বাস্তবতা অবশ্য ভিন্ন। গত মৌসুমে দুই ম্যাচের দুটিতেই কিংসকে হারের স্বাদ দিয়েছে মোহামেডান। অতীতের সুখস্মৃতি প্রেরণা দিচ্ছে সাদা-কালো অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিঠুকে, ‘মাঠে প্রমাণ দেখাব যে আসলে ওদের মাঠে প্র্যাকটিস না করেও আমরা জিততে পারি। চ্যালেঞ্জ কাপে ওদের কাছে আমরা হেরেছি। বড় ম্যাচের চিন্তাভাবনা করে মাঠে নামব।’

গত মৌসুমে মোহামেডানে খেলা সানডে ইমানুয়েল ও আগবাজি টনি এবার খেলছেন কিংসে। দোরিয়েলতন গোমেসও আছেন দারুণ ফর্মে। একই সঙ্গে রাকিব হোসেন ও ফয়সাল আহমেদ ফাহিমরা আলো ছড়িয়ে যাচ্ছেন। লিগে সর্বশেষ দুই ম্যাচে প্রতিপক্ষের জালে ৫ গোল করেছে কিংস। ক্লাব থেকে নিষেধাজ্ঞা থাকায় সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে চাননি ফুটবলাররা। তবে মোহামেডানের বিপক্ষে যে প্রতিশোধের পণ নিয়ে নামবে তারা, তা আর বুঝতে বাকি নেই।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত