Ajker Patrika

পুরো দলকে পথ দেখালেন সাকিব

রানা আব্বাস, মাসকাট থেকে
পুরো দলকে পথ দেখালেন সাকিব

স্কটল্যান্ড–ম্যাচের আগের দিনের দৃশ্য। রাত ৯টায় পুরো দল অনুশীলন শেষে চলে গেছে ড্রেসিংরুমে। মোহাম্মদ নাঈম তখন একা উইকেটে দাঁড়িয়ে খালি হাতে শ্যাডো করতে থাকলেন। স্কটল্যান্ড ম্যাচ অবশ্য তিনি সুযোগ পাননি। তবু যেন তৈরি থাকছিলেন, যখনই সুযোগ পাবেন খেলতে হবে দুর্দান্ত।

টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ সামনে রেখে নাঈমকে অবশ্য টিম ম্যানেজমেন্ট তৈরি করেছে অনেক দিন ধরেই। গত মার্চে নিউজিল্যান্ড সফর থেকে টানা টি–টোয়েন্টি খেলার সুযোগ পাচ্ছেন তিনি। যাঁকে তৈরি করা হচ্ছে লম্বা সময় নিয়ে, তাঁকেই কিনা স্কটল্যান্ড–ম্যাচে বসিয়ে রাখা? গত পরশু সংবাদ সম্মেলনে রাসেল ডমিঙ্গো অবশ্য এই প্রশ্নের ব্যাখ্যায় বলেছিলেন পিঠের চোটে মাহমুদউল্লাহ যেহেতু বোলিং করতে পারবেন না, ‘বোলিং অপশন’ হিসেবে সৌম্য সরকারকে নেওয়া হয়েছিল। তবে ওমান–ম্যাচে নাঈম যে ফিরছেন, সেটি ডমিঙ্গো নিশ্চিত করেছিলেন সংবাদ সম্মেলনেই।

নাঈম এমন এক ম্যাচ দিয়ে তাঁর টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করলেন, যেটি আবার বাঁচা–মরার ম্যাচ বাংলাদেশের কাছে। স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে হারের পর অনিশ্চিত হয়ে যাওয়া সুপার টুয়েলভে যেতে হলে গতকাল ওমানের বিপক্ষে জয়ের বিকল্প ছিল না। আর জিততে হলে আগে ব্যাটিং করা বাংলাদেশের দরকার ছিল ভালো স্কোর। আর ভালো স্কোর গড়তে টপ অর্ডারের কাছ থেকে দুর্দান্ত একটা ইনিংস পাওনা ছিল। তবে বাংলাদেশের সমর্থকদের হতাশ করে এ ম্যাচেও দ্রুত ভেঙেছে ওপেনিং জুটি। দ্রুত লিটন দাসের (৬) পর তিনে নামা মেহেদী হাসানের (০) উইকেট হারিয়ে বেড়েছে চাপ। গতকালকের ম্যাচেও পাওয়ার প্লে কাজে লাগাতে পারেনি বাংলাদেশ (২৯/২)।

চাপে পড়ে নাঈম যেন কিছুতেই স্বচ্ছন্দ হতে পারছিলেন না, স্নায়ুচাপে ক্যাচ তুলে দিয়েছেন দুবার। ওমানি ফিল্ডারদের পিচ্ছিল হাতের সৌজন্যে কোনোভাবে রক্ষা পেয়েছেন! একটা বাউন্ডারি মারলেই টানা ডট বল খেলেছেন—এ সময় নাঈমকে পথটা দেখিয়ে দিয়েছেন সাকিব আল হাসান। স্কটল্যান্ডের ম্যাচে থিতু হয়েও লম্বা ইনিংস খেলতে পারেননি বাংলাদেশ অলরাউন্ডার। ওমান ম্যাচের আগে গত পরশু জুম মিটিংয়ে সাকিবকে মাঠে আরও বেশি ‘ইনভলভ’ থাকতে বলেছিলেন মাসকাটে খেলা দেখতে আসা বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান।

‘ইনভলভ’ হওয়ার অংশ হিসেবেই কি না সাকিব যেন এ রাতে তরুণ সতীর্থ নাঈমের পথ নির্দেশক হিসেবে আবির্ভূত হলেন। উইকেটে এসেই তিনি ইতিবাচক ব্যাটিংয়ের বার্তা দিলেন প্রথম স্কোরিং শটে বাউন্ডারি মেরে। ১২তম ওভারে সাকিবের রান ২৪ বলে ৩৭, স্ট্রাইকরেট ১৫৪.১৬। অন্য প্রান্তে তখন নাঈমের রান ৩৩ বলে ৩২ রান; স্ট্রাইকরেট ৯৬.৯৬—একজন ওপেনার হিসেবে যেটি বড়ই বেমানান।

১২তম ওভারে ওমানের পেসার মোহাম্মদ নাদিমকে সাকিব টানা দুটি বাউন্ডারি মারতেই নাঈমও যেন খোলস থেকে বেরিয়ে এলেন।

শুধু নাঈমকেই নন, সাকিব পথ দেখিয়েছেন পুরো দলকেই। দুর্দান্ত বোলিংয়ে ৪ ওভারে ২৮ রান দিয়ে নিয়েছেন ৩ উইকেট। এর মধ্যে আছে ওমানের সর্বোচ্চ রান (৪০) করা যতিন্দর সিংয়ের উইকেট। তীব্র চাপে বেশিরভাগ সময় দলের ফিল্ডিং সাজিয়েছেন সাকিব। বারবার পরামর্শ দিয়েছেন সতীর্থ বোলারদের। হয়েছেন ম্যাচসেরাও। আর এরই ফল হিসেবে এসেছে দুর্দান্ত এক জয়। যে জয়ে বেঁচে রইল বাংলাদেশের সুপার টুয়েলভের আশা।

ম্যাচ শেষে সাকিব বলেন, ‘প্রথম ম্যাচের হারটা পুরো দলকে ধাক্কা দিয়েছে। সেটা আমাদের প্রত্যাশিত ছিল না। এই জয়টা দলের মাঝে স্বস্তি ফিরিয়েছে। আমাদের এখনো আরেকটা ম্যাচ আছে, সেটা আমাদের জিততে হবে। পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে আমাদের জিততে হবে, এরপর দেখা যাক কী হয়।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মেঘালয়ে হানিমুনে গিয়ে বর খুন, নিখোঁজ নববধূকে উদ্ধারে নেমেছে ড্রোন

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান বিচার ও কিছু প্রশ্ন

‘তাণ্ডব’ সিনেমার শো চলার সময় ছায়াবাণী হলে দর্শকদের ভাঙচুর, টাকা লুট

‘৫ মিনিট রুলস’ যেভাবে ইলন মাস্কের জীবনে সাফল্য আনল

যুক্তরাজ্য-যুক্তরাষ্ট্রে শুল্কমুক্ত সুবিধা নিয়ে বাংলাদেশের গার্মেন্টসের বাজার দখলের চেষ্টা ভারতে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত