Ajker Patrika

বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচে যত চিন্তা উইকেট নিয়ে

রানা আব্বাস, নিউইয়র্ক থেকে
আপডেট : ১০ জুন ২০২৪, ১০: ৩০
বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচে যত চিন্তা উইকেট নিয়ে

তিন সপ্তাহের বেশি হলো যুক্তরাষ্ট্রে এসেছে বাংলাদেশ দল। এই সময়ের বেশির ভাগই অস্বস্তিতে কেটেছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে সিরিজ হারের ধাক্কা কাটিয়ে উঠতেই তো বেশ সময় লাগল। অবশেষে স্বস্তির নিশ্বাস নিতে পারছে নাজমুল হোসেন শান্তর দল। আর সেটা হয়েছে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে শ্বাসরুদ্ধকর লড়াই, চাপকে জয় করার পর। গত পরশু ডালাস থেকে নিউইয়র্কে আসা দলকে দেখে মনে হলো, এই তো আত্মবিশ্বাস ফিরে পেয়েছে বাংলাদেশ। 

ডালাসের প্রথম কটা দিন দুর্যোগ যেন পিছুই ছাড়ছিল না। প্রতিকূল আবহাওয়া পেরিয়ে ডালাসে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচের আগে ঝকঝকে দিনের দেখা মিলেছিল। গ্র্যান্ড প্রেইরিতে লঙ্কানদের হারিয়ে আত্মবিশ্বাসী বাংলাদেশকে পরশু স্বাগত জানিয়েছে নিউইয়র্কের ঝলমলে রোদ্দুর, যদিও গতকাল সকালে ছিল ঝিরঝিরে বৃষ্টির আনাগোনা। 

সুপার এইটের সম্ভাবনা আরও উজ্জ্বল করতে গ্রুপের সবচেয়ে কঠিন প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকার চ্যালেঞ্জ বাংলাদেশকে নিতে হবে নাসাউ কাউন্টি ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। এই বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় নাসাউর উইকেট। মন্থর বল, অসম বাউন্সে ব্যাটারদের রান তুলতে ঘাম ছুটে যাচ্ছে। বেশির ভাগ লো স্কোরিং ম্যাচ নিয়ে তুমুল আলোচনা-বিতর্কও হচ্ছে এন্তার। বিতর্কের মুখে আইসিসি পিচ ও মাঠ বিশ্বমানের মাঠকর্মীদের দিয়ে দ্রুত ঠিক করার বিজ্ঞপ্তি পর্যন্ত দিয়েছে। 

এই সফরে ডালাসে সবচেয়ে বেশি সময় কাটানো বাংলাদেশ দলের গ্র্যান্ড প্রেইরির উইকেট-কন্ডিশন সম্পর্কে খুব ভালো ধারণা হয়ে গিয়েছিল। নিউইয়র্কে ভারতের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা থাকলেও নতুন এই মাঠে খুব বেশি প্রস্তুতি নেওয়ার সুযোগ হয়নি বাংলাদেশের। নিউইয়র্কের উইকেট-কন্ডিশন উইকেট চেনায় বরং দক্ষিণ আফ্রিকা বেশ এগিয়ে থাকবে। এখন পর্যন্ত গ্রুপ পর্বে নিজেদের প্রথম দুটি ম্যাচই তারা খেলেছে নাসাউ স্টেডিয়ামে।

নিউইয়র্কে প্রোটিয়াদের দুটি ম্যাচই হয়েছে লো স্কোরিং। দুটিতেই তারা পরে ব্যাটিং করেছে। শ্রীলঙ্কাকে ৭৭ রানে মুড়ে দিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা সেটি পেরিয়েছে ৬ উইকেট হাতে রেখে। আর নেদারল্যান্ডসকে ১০৩ রানে আটকে লক্ষ্য টপকে গেছে ৪ উইকেট হাতে রেখে। অল্প সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচে উইকেটের ভিন্ন আচরণ করার সম্ভাবনা কমই। এ ধরনের উইকেটে টস জিতলে তাই আগে বোলিং করার চেয়ে ভালো সিদ্ধান্ত আর কিছু হতে পারে না, সেটির প্রমাণ এখানকার ম্যাচেই শুধু নয়, ডালাসে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা দ্বৈরথেও দেখা গেছে। 

মন্থর উইকেট হলে অবশ্য বাংলাদেশের মুখে ‘স্বস্তি’র একটা হাসির রেখা চিকচিক করতে দেখা যায়! সারা বছর দেশের মন্থর-অননুমেয় উইকেটে খেলে অভ্যস্ত শান্তরা যেন এ ধরনের পিচে মিরপুরের আবহ খুঁজে পান। সেই অভিজ্ঞতা থেকে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে সুযোগটা দুই হাতে লুফে নিতে চান তাঁরা। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয়ের পর সংবাদ সম্মেলনে আসা বাংলাদেশ অধিনায়কের কথায়ও মনে হচ্ছিল, তাঁদের ভাবনার অনেকটা জায়গা জুড়ে এবার নিউইয়র্কের উইকেট। শান্ত বলছিলেন, ‘নিউইয়র্কের উইকেটে আমরা শ্রীলঙ্কা-দক্ষিণ আফ্রিকার ম্যাচটি টিভিতে দেখেছিলাম। ডালাসে সেদিন অনুশীলন না করে পুরো দল একসঙ্গে খেলাটি দেখেছিলাম। পরিকল্পনা করেছিলাম, কীভাবে আমাদের খেলা উচিত। এখানে ভারত-পাকিস্তানের ম্যাচ আছে ৯ জুন (গতকাল হয়ে গেছে)। উইকেট দেখতে সেটিও আমাদের আরেকটি সুযোগ করে দেবে। পিচ সম্পর্কে আমাদের কিছুটা ধারণা আছে এবং যে উইকেট প্রস্তুত করা হয়েছে, সে অনুযায়ী আমাদের ব্যাট-বলের প্রস্তুতি নিতে হবে।’ 

 ৫০ ওভারের ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে স্মরণীয় কিছু জয় থাকলেও ২০ ওভারের ম্যাচে বাংলাদেশের হাত একেবারে শূন্য। আট দেখায় আটটিতেই হার। প্রতিটি হার আবার অসহায় আত্মসমর্পণে। নিউইয়র্কে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে শুধু জয়ের এ গেরোই খোলা নয়, যুক্তরাষ্ট্রপর্ব শেষে ক্যারিবীয় দ্বীপে রওনা হওয়ার আগে সুপার এইটের চাবি হাতে নেওয়ার কাজ অনেকটা সেরে যেতে হবে বাংলাদেশকে। আর সেই কাজ করতে নিউইয়র্কের কন্ডিশনেও শান্তদের উইনিং কম্বিনেশন ধরে রাখার সম্ভাবনাই বেশি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত