Ajker Patrika

আত্মবিশ্বাসে ধাক্কা দিল এই হার

আফতাব আহমেদ
আত্মবিশ্বাসে ধাক্কা দিল এই হার

বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডে ১৭১ রান দেখে অন্যদের মতো আমিও আশাবাদী ছিলাম–ম্যাচটা আমরাই জিতছি। কিন্তু দিন শেষে এমন হার–মানতে পারছি না। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৫ উইকেটের এই হারে আসলে তেমন একটা ময়নাতদন্ত না করলেও চলবে। সবাই দেখেছে ম্যাচটা আসলে কোথায় হেরেছি আমরা। এভাবে যদি ফিল্ডিং মিস হয় তাহলে ২০০ রান করেও ম্যাচ জেতা কঠিন। ৭৯ রানে চার উইকেট নিয়ে লঙ্কানদের মেরুদণ্ডই তো ভেঙে দিয়েছিল বোলাররা। সেই ধ্বংসযজ্ঞে দাঁড়িয়ে দলকে পথ দেখাচ্ছিলেন চারিথ আশালঙ্কা ও ভানুকা রাজাপক্ষে। সে সময়েই যেভাবে আমরা দুটি ক্যাচ ফেলেছি, খুব হতাশজনক। ক্যাচগুলো যদি কঠিন হতো তাহলে একটা কথা ছিল।

একেবারেই হাতের কাছেই ছিল। ওই দুটি ক্যাচ ধরতে পারলে কিন্তু জয়ী দলের নাম বাংলাদেশই থাকত। কিন্তু আমি বলব কি–এমন সহজ ক্যাচ যদি আমরা ধরতে না পারি তাহলে জেতার আশা করাটাও বোকামি হবে। ওই দুই জীবন পেয়ে লঙ্কান দুই তরুণ কী দুর্দান্তভাবেই না ম্যাচটা বাংলাদেশের হাত থেকে বের করে নিয়ে গেল। তাদেরও কৃতিত্ব দিতে হবে। 
বিশ্বকাপের মতো বড় আসরে আসলে যারা কম ভুল করবেই তারাই জিতবে। অনভিজ্ঞতার কারণে এখানে তাই তরুণেরা ভুল করে বসে। কেননা, এটা শুধু ব্যাট–বলের খেলা না, স্নায়ুরও পরীক্ষা। স্নায়ু যার শক্ত সেই এখানে টিকে যাবে। আর যাদের স্নায়ু শক্ত না তাদের জন্য এখানে কঠিন। আমার মনে হয় লিটন এখানেই পিছিয়ে পড়েছিল। ব্যাটে রান নেই। চারপাশে সমালোচনা হচ্ছে। লিটনের মাথায় হয়তো এসবই ঘুরছিল। সময়টা খারাপ যাওয়ায় লিটনের মতো দারুণ ফিল্ডারও ক্যাচ ফসকাল।

এই হারের মধ্যেও আমি ব্যাটিং নিয়ে আলাদা কথা বলতে চাই। মোহাম্মদ নাঈম আরও একটি দুর্দান্ত ইনিংস খেলল। মুশফিক ছন্দে ফিরে প্রমাণ করেছে তার পক্ষে সবই সম্ভব। ক্যাচগুলো মিস না হলে তো ম্যাচ শেষে হাসিটা তাদেরই হতো।

একটা সময় বোলিং বিভাগই আমাদের ম্যাচের পর ম্যাচ জিতিয়ে দিত। এখন সেখানে বোলারদের ব্যর্থতায় হারতে হচ্ছে। তবে আমাদের এখনকার বোলিং বিভাগ সাকিব আল হাসান ও মোস্তাফিজুর রহমান নির্ভর। দুজনকেই নিয়ে ২০ ওভারে ক্রিকেটে ভাবনা আসলে কঠিন হয়ে যায়। মেহেদী–সাইফউদ্দিন–নাসুমদের মতো যারা আছে তাদের আরও ধারাবাহিক হতে হবে। বৈচিত্র্য আরও বাড়াতে হবে।

এই হারে সুপার টুয়েলভে আমাদের হিসাবটা তো কঠিন হয়েই গেল। সঙ্গে আত্মবিশ্বাসেও বড় ধাক্কা খেল বাংলাদেশ। অথচ এই ম্যাচটা জিতলে শুধু এগিয়ে যেত না, কোনো দলকেই আর বড় দল মনে হতো না। এগিয়ে যাওয়ার সেই সোজা সরণিটা এখন দুর্গমই হয়ে গেল। এমন হারের পর আত্মবিশ্বাস কতটুকু ধরে রাখতে পারবে, সেটিই এখন প্রশ্ন। 
এরপরও আমি আশা হারাচ্ছি না। বাছাইপর্বে প্রথম ম্যাচ হেরে আমরা খাদের কিনারায় পৌঁছে গিয়েছিলাম। সেখান থেকে দারুভাবে দুটি ম্যাচ জিতে সুপার টুয়েলভে এসেছি। এবার সুপার টুয়ালেভের শুরুতেও হার। আবারও চাই দারুণ প্রত্যাবর্তন। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত