Ajker Patrika

ডারউইনের অজানা কথা

সাইরুল ইসলাম, ঢাকা
আপডেট : ০৩ নভেম্বর ২০২১, ১০: ৫৩
ডারউইনের অজানা কথা

২৫ বছরের টগবগে এক যুবক। ঘর ছেড়ে বেরিয়ে পড়লেন সমুদ্রে। নীল পানির মাঝে খুঁজে নিলেন জীবনের মানে। শৈশব থেকেই  রহস্য খোঁজার নেশা যাঁর, তিনি কি স্কুল-কলেজের বই-খাতায় আটকে থাকতে পারেন? রহস্যময় এই দুনিয়ার যতটুকু রহস্য সমাধান করা যায়, পরের প্রজন্মকে ততটুকু এগিয়ে রাখা যাবে—এই ভাবনা নিয়ে পথ চলা শুরু তাঁর।

বলছি চার্লস ডারউইনের কথা। ছোটবেলা থেকেই বেশ চুপচাপ ছেলেটির স্কুলে থাকতেই প্রকৃতির প্রতি বেশ টান ছিল। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা কখনোই তাঁর আগ্রহ মেটাতে পারেনি। সবাই ভেবেছিল, এই ছেলেকে দিয়ে কিছুই হবে না। কিন্তু বাবা ইংরেজ চিকিৎসক রবার্ট ওয়ারিং ডারউইন ছেলেকে নিজের মতো বড় হতে দিলেন। এই ছেলেই কী করে যেন কেমব্রিজে উদ্ভিদবিদ্যা পড়ার সুযোগ পেলেন। আর পেয়ে গেলেন স্বপ্নের কাছাকাছি যাওয়ার সিঁড়ি।

১৮৩১ সালের শেষের দিকে ‘এইচএমএস বিগল’ জাহাজে করে রবার্ট ফিজরয়ের নেতৃত্বে সমুদ্রে নেমে পড়ে এক অনুসন্ধানী দল। ২৫ বছরের টগবগে যুবক চার্লস ডারউইনকে দেওয়া হয় প্রকৃতিবিদের দায়িত্ব। পাঁচ বছর সমুদ্রে কাটান তাঁরা। ঘুরে দেখেন দক্ষিণ আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন মহাদেশের দ্বীপপুঞ্জ। সংগ্রহ করতে থাকেন বিভিন্ন প্রজাতির গাছ এবং অন্যান্য জীব। গ্যালাপাগোস দ্বীপপুঞ্জে এসে থমকে যান ডারউইন। আর তখনই তাঁর মাথায় আসে ঐতিহাসিক ‘প্রাকৃতিক নির্বাচন’ ও ‘বিবর্তনবাদ’তত্ত্বের প্রাথমিক ধারণা। ভ্রমণ শেষে শুরু করেন গবেষণা। আর ভিত্তি পায় বিখ্যাত ‘বিবর্তনবাদ’তত্ত্ব। পরে ১৮৫৯ সালে প্রকাশিত বই ‘অন দ্য অরিজিন অব স্পিসিস’-এ ব্যাখ্যা দেন নিজস্ব সব ধারণার।

বিজ্ঞান, ইতিহাস কিংবা সাহিত্যের বইয়ে ডারউইনের এমন কিছু গল্প প্রায়ই দেখা যায়। কিন্তু অন্যান্য বিখ্যাত ব্যক্তির মতো তাঁরও কিছু অজানা কাহিনি আছে। বিজ্ঞানভিত্তিক সাময়িকী ডিসকভারের এক প্রতিবেদনে এমনই কয়েকটি বিষয় উঠে এসেছে।

ঝরে পড়া ছাত্র: চিকিৎসক বাবা চেয়েছিলেন ছেলেও চিকিৎসাসেবায় একজন প্রাণপুরুষ হবেন। ১৮২৫ সালে এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলেও ছুরি-কাঁচির কারসাজি তাঁকে চিকিৎসাবিজ্ঞানী হতে আগ্রহী করে তুলতে পারেনি। তাই তো মাত্র দুই বছর পড়ার পর বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে দেন।

মৃত প্রাণী সংরক্ষণবিদ্যা: বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে গেলেও একটি বিদ্যা সঙ্গে করে নিয়ে যান ডারউইন। বিবর্তনবাদের জনকের জন্য যেটি অনেকটা কাঙ্ক্ষিতও বটে। মৃত প্রাণী সংরক্ষণের বিদ্যা বা ‘ট্যাক্সিডার্মি’। তবে যাঁর কাছ থেকে শিখেছেন, সেটি বেশ অবাক করার মতো। শিক্ষকের নাম জন এডমোনস্টোন, যিনি একসময় দাস ছিলেন। ১৮১৭ সালে মুক্তি পাওয়ার পর ট্যাক্সিডার্মি শেখানো শুরু করেন।

বিচিত্র খাবারে আগ্রহ: অদ্ভুত প্রাণী শুধু ডারউইনের নোটবুকেই থাকত না, তাঁর খাবারের প্লেটেও থাকত। কেমব্রিজের গ্লুটন ক্লাবের সদস্য ডারউইনের প্লেটে মাঝে মাঝে দেখা যেত তীক্ষ্ণ চোখের বাজপাখি কিংবা নিশাচর প্যাঁচা। কি, ভোজনরসিক বলবেন?

অচেনা রোগে কাবু: বিচিত্র খাবারের জন্যই হোক কিংবা অন্য কোনো কারণে, ডারউইন অদ্ভুত সব রোগে ভুগতেন। ক্রমাগত পেটে ব্যথা থেকে শুরু করে মাথায় যন্ত্রণা। তিন সন্তান হারিয়ে মানসিকভাবে অনেকটাই দুর্বল হয়ে যান তিনি। এর মধ্যে পৃথিবীতে আসার আগেই মারা যায় দুজন। তাঁর মানসিক সে রোগ কোনো চিকিৎসক ভালো করতে পারেননি। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতের সংখ্যালঘু ইস্যুতে বাংলাদেশের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানাল দিল্লি

‘ক্রিকেটাররা আমাকে ন্যুড পাঠাত’, বিস্ফোরক ভারতের সাবেক কোচের সন্তান

‘শেখ হাসিনা আসবে, বাংলাদেশ হাসবে’ ব্যানারে বিমানবন্দর এলাকায় আ.লীগের মিছিল

পরপর সংঘর্ষে উড়ে গেল বাসের ছাদ, যাত্রীসহ ৫ কিমি নিয়ে গেলেন চালক

ইটনায় এবার ডিলার নিয়োগে ঘুষ চাওয়ার কল রেকর্ড ফাঁস

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত